Monday, October 6, 2025

আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা


মেয়ে হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের শাশুড়ি শাহেদা মোশাররফ। মেয়ের স্বামী অভিযুক্ত বাবুল আক্তারের শাস্তিও দাবি জানিয়েছেন মিতুর মা। 

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যতে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ বলেন, আমার বড় মেয়ে মাহমুদ খানম মিতুর সঙ্গে ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল আক্তারের সঙ্গে বিয়ে হয়। তখন বাবুল আক্তার বেকার ছিল। বিবাহের পর একেবারে শুরু থেকে তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, মোটামুটি ছিল।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের বেঞ্চে এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তখন আদালতে উপস্থিত ছিলেন এ মামলার অন্যতম আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। 

এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর প্রথমে সাক্ষ্য দেন অবসরে যাওয়া পাঁচলাইশ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ। ঘটনার সময় নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওসি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, পরে পুলিশে যোগদান করেন বাবুল। এরপর কক্সবাজারে এডিশনাল এসপি হিসেবে বদলি হন। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন মিতুর স্বামী।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে উঠেন। পাশের রুমে ওই নারীও উঠেন। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে।

তিনি আরও বলেন, তখন মিতু তাকে জিজ্ঞেস করে, সে এখানে কি করছে? বাবুল মিতুকে বলে বিদেশে যাবার জন্য ল্যাপটপে কাজ করছে। তাদের দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খুব খারাপ লাগে। সে কিছুক্ষণ ওখানে ছিলেন। বাচ্চারা একা থাকায় মিতু তাদের রুমে চলে আসেন। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেও ঘুমিয়ে পড়েন।

রাত তিনটার দিকে মিতুর ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখনও বাবুল আক্তার মিতুর রুমে ছিলেন না। মিতু আবার ওই নারীর রুমে গেলে তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। মিতু রুমে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি তাকে বলি, তুই চলে আয়। মিতু তখন বলে, আমার ছেলে-মেয়েরা আমাকে খারাপ মনে করবে। তাই আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে আমার ছোট মেয়ের বাসায় মিতু ও তার ছেলেমেয়েরা বেড়াতে যায়। মিতু তখন আমাকে পৃষ্ঠায় লেখা মেসেজগুলো দেয়। এসব কিছু আমাদের বলায় বাবুল মিতুর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এরপর মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মিতু চট্টগ্রামের বাসা থেকে ঢাকায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। 

শাহেদা বলেন, ২০১৬ সালের জুনের ৪ তারিখ রাতে মিতু আমাকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে বলে, আম্মা মাহিরের স্কুল থেকে ম্যাসেজ এসেছে। আমাকে খুব ভোরে মাহিরকে নিয়ে স্কুলে চলে যেতে হবে। ৫ জুন সকালে মিতুর বাসার পাশ থেকে একজন নারী আমাকে ফোন দিয়ে মিতুর মৃত্যুর খবর জানায়।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, মিতু মারা যাওয়ার পর ছেলে মাহির বাবুল আক্তারকে তিনবার কল দিয়েছিল। কিন্তু বাবুল কল রিসিভ করলেও কোনও কথা বলেনি। আমিও একবার কল দিয়েছি, কিন্তু রিসিভ করেনি।

সাক্ষ্যে তিনি আরও বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে (মিশনে) থাকার সময় তিন-চারবার বাংলাদেশে আসেন। তবে দেশে ফিরলেও তিনি বাসায় অর্থাৎ মিতু কিংবা ছেলেমেয়েদের কাছে যাননি। মিশন শেষ করে ফিরেই তিনি চীনে চলে যান। সেখানে বসেই বাবুল মিতুকে মারার পরিকল্পনা করেন।

শাহেদা বলেন, মিতু খুনের আসামি ওয়াসিম, আনোয়ার গ্রেফতার হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। গ্রেফতার হওয়ার পর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়, বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মুসা মিতুকে খুন করেছে। মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর, সে যে বাসায় ছিল ওখানে মিলাদ পড়ানোর জন্য আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেফতার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিজেই মিতু হত্যার মামলা করেছে।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহম্মেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় আজ তার মা শাহেদা মোশাররফ এবং পাঁচলাইশ থানার সাবেক ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। শাহেদা মোশাররফের জেরা বাকি রয়েছে। এ মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলে মাহিরকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের কাছে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles