Wednesday, June 25, 2025

বন্যায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, সড়কে-গাছতলায় চলছে চিকিৎসা


দেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর পানি কমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে বেড়েছে ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, জ্বরসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বয়স্ক।

চলতি বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুর জেলায়। এসব জেলার কোথাও কোথাও দুই সপ্তাহ ধরে টানা পানিবন্দি দিন যাপন করছে মানুষ।

টিউবওয়েল পানিতে ডুবে যাওয়ায় সুপেয় পানির অভাবে চার জেলার গ্রামীণ জনপদের অনেক জায়গায় মানুষ বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। চারদিকে পানি থাকায় অনেকে বের হতে না পেরে বাড়িতেই প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যখন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে তখন তারা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন।

চার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ও হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, বন্যা কবলিত এলাকায় তাদের চিকিৎসক দল দিনরাত কাজ করছেন। তাদের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন রয়েছে। হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকলেও ওষুধের বা সেবার কোনো ঘাটতি নেই।

সড়কে-গাছতলায় শয্যা

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার প্রায় ১০ গুণ বেশি রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ফেনীর সবচেয়ে বড় সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র ফেনী জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শয্যা সংকটে মেঝে ও ওয়ার্ডের বাহিরে গাছতলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।

ওয়ার্ডে ১৭ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৬ জন। এখানে শূন্য থেকে ৩০ বছরের রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। অন্য আরেকটি ভবনে তদুর্ধ্ব রোগীরা সেবা নিচ্ছেন। সেখানেও ২১ শয্যার বিপরীতে রোগীর সংখ্যা ৮০ জন। অতিরিক্ত রোগীর চাপে হাসপাতাল আঙিনা ও গাছতলায় বিছানা পেতে খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডেও ২৬ শয্যার বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৩৬ জন।

সদর উপজেলার ধলিয়া এলাকা থেকে চার বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন পায়রা আক্তার। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে সামনের গাছতলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, এখানে এতো বেশি রোগীর চাপ, ওয়ার্ডে থাকার মতো কোনো অবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে গাছতলায় খোলা আকাশের নিচে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছি। এ পরিস্থিতিতে রোদের মধ্যে আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে।

দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুরের বাসিন্দা আলী আহম্মদ বলেন, তিন দিন ধরে নাতনিকে নিয়ে এখানে আছি। পরীক্ষায় নিউমোনিয়া শনাক্ত হয়েছে। এখানে এতো বেশি গরম যে সঙ্গে থাকা স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

পরশুরাম উপজেলার টেটেশ্বর এলাকার বাসিন্দা স্বপ্না আক্তার বলেন, দুই দিন কষ্ট করে বাইরে ছিলাম। এতো রোগীর চাপ ঠিকমতো কাউকে কাছে পাই না ডাকলে। কোনোভাবে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। পুরোপুরি সুস্থ না হয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

শর্শদি এলাকা থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে এসেছেন সালমা রিয়া। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর নার্সরা স্যালাইন লাগিয়ে গেলেও ভেতরে জায়গা না পেয়ে রাস্তার পাশে মাদুর পেতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

সালমা রিয়া বলেন, হাসপাতালে এসেও খোলা আকাশের নিচে বসে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আমার মতো এমন অসংখ্য মানুষ জায়গা না পেয়ে রাস্তায় ও বাগানে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা সাথী আক্তার বলেন, ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি রোগীর চিকিৎসা স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে ও জনবল বৃদ্ধি করে তাহলে রোগীরা বেশি উপকৃত হবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত আরেক জ্যেষ্ঠ সেবিকা বলেন, আগের সব সংখ্যা ছাপিয়ে রেকর্ড সংখ্যক রোগী ভর্তি হচ্ছে। নিজেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কাজ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগীকে এ জনবল দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ শ্যামলী রানী বলেন, শিশু ওয়ার্ডে ২৬ শয্যার বিপরীতে ১৩৬ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। সে তুলনায় নার্স নেই। রোগীর চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সাম্মী বলেন, বন্যা পরবর্তী সময়ে ফেনীতে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিপুলসংখ্যক রোগীকে স্বল্প পরিসরে সেবা দেওয়া আমাদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ কারণেই মূলত রোগীরা কেউ মেঝেতে কেউ বাইরে অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন বলেন, বন্যা পরবর্তী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি পানিবাহিত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ জেলার আরো পাঁচটি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিনিয়ত ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত জেলার সকল সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ২ হাজার ৩৬৮ জন। সীমিত জনবল থাকলেও সকল রোগীকে সেবা দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

শয্যার ১০ গুণ বেশি রোগী

নোয়াখালীতে বন্যা দুর্গত এলাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সরা। বেডে জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে অনেক রোগীকে।

জেলা সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেখার জানিয়েছেন, নোয়াখালীর আট উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুধবার ২২০ জন এবং নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ২৮০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, তাদের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা ১৬টি। চিকিৎসা নিচ্ছেন এর কয়েকগুণ বেশি রোগী। বেডে জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জরুরি ভিত্তিতে একটি ডায়রিয়া ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সেখানেও জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে রোগী রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

কাদির হানিফ ইউনিয়নের কৃষ্ণরামপুর গ্রামের শাহাদাত হোসেন (২৯) চার দিন ধরে ছেলে ও বোনের মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে।

একই এলাকার মো. আল আমিনের সাত মাসের ছেলে সন্তান ও ছোট বোনের এক বছরের ছেলে মঙ্গলবার ভর্তি হয়েছে। তিনি বলেন, পর্যাপ্ত নার্স, ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা ঠিকমত পাচ্ছি না।

বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্লাহপুর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের সোহেল রানা (৩০) তার ১১ মাস বয়সী মেয়েকে মঙ্গলবার রাতে এনে ভর্তি করেছেন।

সোহেল রানা বলছিলেন, তাদের গ্রামে আরও কয়েকজন শিশু ডায়রিয়ায় অসুস্থ হয়েছে। প্রথমে তারা বাড়ি রেখেই চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। পরে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালে এসেছেন।

সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের শান্তরহাট বাংলাবাজারের ইয়াসমিন আক্তার (২০) পানিশূন্যতা নিয়ে তিনদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি বলছিলেন, বাড়ির চারদিকে পানি। এ অবস্থায় লোকজনের চলাচলেও কষ্ট হচ্ছে। অনেকে অসুস্থ হলেও বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না।

বেগমগঞ্জের পূর্ব হাজিপুরের সায়েদুল হক (৭০) চৌমুহনীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুইদিন চিকিৎসা নিয়ে সেখানে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না দেখে মঙ্গলবার রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন।

কুমিল্লার ৩ উপজেলায় রোগীর চাপ

বন্যা কবলিত এলাকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ভিড় বেড়েছে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্তদের। যদিও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সার্বিকভাবে কুমিল্লার পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।

কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন মুহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, ২১ অগাস্ট থেকে কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৯৭৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮১ জন ডায়রিয়া রোগী।

বন্যার পানি কমতে শুরু করায় ডায়রিয়া ও বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ও স্যালাইন রয়েছে।

ডেপুটি সিভিল সার্জন বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রসহ বন্যাদুর্গত এলাকায় তাদের ২২৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। প্রতিটি এলাকায় মানুষকে অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নাজমুল আলম বলেন, কুমিল্লার ১৪টি উপজেলা বন্যা কবলিত হলেও চারটি উপজেলায় ডায়রিয়া রোগীদের সংখ্যা কিছুটা বেশি। উপজেলাগুলো হলো- চৌদ্দগ্রাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট ও লাকসাম।

তবে এত বড় বন্যার পর পরিস্থিতি এখনো ‘যথেষ্ট ভালো’ বলে তার মূল্যায়ন।

তিনি বলেন, মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে নিরাপদ খাবার গ্রহণ ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

বর্তমানে আমাদের হাসপাতালে ১৫ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছেন। এই হাসপাতালে প্রতিদিনই আট থেকে ১০ জন করে ডায়রিয়ার রোগী আসছেন। বানভাসি মানুষদেরকে সচেতন করতে আমাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আকলিমা জাহান বলেন, মনোহরগঞ্জের বেশিরভাগ এলাকা এখনো প্লাবিত। আমাদের হাসপাতালের সামনেও হাঁটু পানি। তবে আগের চেয়ে পানি কিছুটা কমেছে। বর্তমানে এ উপজেলায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

ডায়রিয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন চর্মরোগসহ পা পঁচা রোগী বেশি আসছেন। গড়ে প্রতিদিন ১০ জন করে ভর্তি হচ্ছেন ডায়রিয়ার রোগী। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ ও খাবার স্যালাইন রয়েছে। রোগীরা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দেবদাস দেব বলেন, নাঙ্গলকোটে ডায়রিয়ার রোগী সেভাবে বাড়েনি। প্রতিদিন দু-তিনজন করে রোগী আসছেন; বন্যার আগেও এ উপজেলার পরিস্থিতি এমন ছিল।

তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে বন্যার শুরু থেকেই কাজ করেছি। এজন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে আমাদের মেডিক্যাল টিম বন্যার শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে।

মানুষকে পানি বিশুদ্ধকরণের পর্যাপ্ত পরিমাণে ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে। ওষুধ ও খাবার স্যালাইন পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। সার্বিকভাবে অন্যান্য উপজেলার চেয়ে আমাদের পরিস্থিতি ভালো রয়েছে।

১০৭ রোগীর ৭৬ জনই শিশু

লক্ষ্মীপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত ৯০৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জেলা সিভিল সার্জন আহমেদুল করিম জানান।

লক্ষ্মীপুর ১০০ শয্যা সদর হাসপাতালে যত ডায়রিয়া রোগী ভর্তি আছে, তার বেশিরভাগই বন্যা কবলিত এলাকা থেকে এসেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অসুস্থ হয়েও অনেকে এসেছেন।

আছিয়া খাতুন তার সাত বছরের ছেলে আরমানকে নিয়ে কয়েকদিন ধরেই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি। তিনি বলছিলেন, বন্যার সময় আমরা পানিবন্দি ছিলাম। আমাদের ঘরে হাঁটু পানি ছিল, আমাদের টিউবয়েল পানির নিচে ছিল। খাওয়ার পানির সমস্যা ছিল তখন। ত্রাণের সঙ্গে পানির বোতল দিছিল। আমরা ঘরে রান্না করে খেয়েছি। তারপরও আমার ছেলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকায় জহির উদ্দিন (৫১) বলেন, তাদের বাড়িতে এখনো গলা সমান পানি। পরিবার নিয়ে তিনি বাড়ির পাশে একটি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সেখানে তারা ১২ দিন ধরে আছেন। মঙ্গলবার তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। তারপরই সদর হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে তিল ধরনের জায়গা নেই। বুধবার দুপুরে হাসপাতালে ১০৭ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা ৭৬ জন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অরূপ পাল বলেন, ১০ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১০৭ রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ১০০ শয্যার হাসপাতালে আজ রোগী ভর্তি রয়েছে ৩৮০ জন। চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।

সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবিটি




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles