গোয়েন্দা তৎপরতা ও পুলিশের উদাসীনতার কারণেই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন আত্মগোপনে থেকে দিনাজপুরের শশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুয়াডাঙ্গা প্রয়াত ব্যবসায়ী এম এ কুদ্দুস চৌধুরীর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন এই সাবেক সংসদ সদস্য। পরবর্তীতে জানাজানি হলে জনতা ও পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়েই সরে যান।
জানা যায়, কয়েক দিন আগে স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুয়া ডাঙ্গা শ্বশুর বাড়িতে (এমএ আব্দুল কুদ্দুস) আত্মগোপনে ছিলেন ময়মনসিংহ-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন। এ খবর ছিলো বৈষম্যবিরোধী কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছে।
বুধবার সকালে তিন ছাত্র নেতা দিনাজপুর শহরের ওই বাসা বাড়িতে যায়। সেসময় স্ত্রীসহ বাসার ড্রইং রুমে বসা ছিলেন তুহিন। পরিচয় নিশ্চিত হয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতা অন্তু খান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তুহিনকে পাননি। এখনো এই বাসায় অবস্থান করছেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা।
দিনাজপুর শহরের দক্ষিণ বালুয়াডাঙ্গা এলাকায় কয়েকদিন থেকে স্ত্রীসহ তুহিন খান শ্বশুর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানা যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দিনাজপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা অন্তু খান বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার সকালে আমরা তিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ওই বাড়িতে (বাড়ির মালিক প্রয়াত এমএ কুদ্দুস চৌধুরী) প্রবেশ করি। সে সময় ড্রইংরুমে ছিলো এমপি ও তার স্ত্রী (শিক্ষার্থীদের তুহিনকে জিজ্ঞাসাবাদের ৬ সেকেন্ডের ভিডিও আছে)। কথা বলে ও ইন্টারনেট ঘেঁটে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে জেলা পুলিশ সুপার নাজমুল স্যারকে ফোন দেই। এরই মধ্যে স্থানীয় অনেক লোক ও কয়েকজন মহিলা এসে জড়ো হন। আমরা উল্টো তাদের রোষানলে পড়েছিলাম। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পুলিশকে বাড়ির লোকেশন দেখিয়ে দিতে আমরা বাড়ির গেটের বাইরে বের হই। পরে পুলিশসহ বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে তুহিনকে খুঁজে পায়নি পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের আহবায়ক ছিলেন। আওয়ামী লীগ থেকে ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নিয়ে হেরে যান। ২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানের পরে তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা হয়। এরপর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এতগুলো লোকের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালানোটা সহজ নয়। তাকে পালাতে আশেপাশের কয়েকজন লোক সহযোগিতা করেছেন। কোতোয়ালী থানা থেকে বালুয়াডাঙ্গার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার। ১০ মিনিটেরও রাস্তা নয়। পুলিশও আসতে দেরি করলো, এখানেও একটা প্রশ্ন থেকে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী অন্ধহাফেজ মোড় এলাকার শহিদুল ইসলাম জানান, ‘অর্থ দিয়ে দফারফা হয়েছে। যে শিক্ষার্থীরা প্রথম তাকে শনাক্ত করেন পরে তারাও হেনস্তার শিকার হচ্ছিলেন। বিভিন্ন মাধ্যমের সহযোগিতা নিয়ে উনি বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়েছেন।’
এ বিষয়ে দিনাজপুর পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান মোবাইল ফোনে বলেন, ‘তথ্য পেয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। কিন্তু পরে তাকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যায় সে সময় অন্যান্য লোকজনও ছিলো। পুলিশের গাফিলাতে ছিল কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত ওসির সাথে কথা বলেন।
দিনাজপুর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সে সময় আমরা তুহিনকে পাইনি। তার স্ত্রীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, দুই সন্তানসহ দিনাজপুরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। তার সাথে স্বামী আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন আসেননি বলে দাবি করেছেন। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পুলিশ তুহিনকে পালাতে সহযোগিতা করেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এ ধরনের কথা কেউ বলতেই পারে। তবে পুলিশ আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনকে গ্রেপ্তার করতে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলা পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultractivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 bdphoneonline.com
👉 dailyadvice.us