Wednesday, October 30, 2024

চলতি বছর নির্বাচন যেভাবে বিশ্বরাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে


জানুয়ারিতে শেষ হয়েছে তাইওয়ানের সাধারণ নির্বাচন। নভেম্বরে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই ১১ মাসে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যার দেশগুলো নির্বাচন হয়েছে এবং হতে যাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত এবং বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনাসহ ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের মধ্যে এই ভোট চলছে।

কিছু দেশে গণতন্ত্রের স্থিতিস্থাপকতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। কারণ রাজনৈতিক বক্তৃতা মেরুকরণ হয়েছে বা ভুল তথ্য দিয়ে বার্তা বিকৃত হয়েছে। এই বছরের অনেক নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না – অথবা তাদের ফলাফল বিতর্কিত হবে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নির্বাচনের বছরের মাত্র অর্ধেক পথ অতিক্রান্ত হয়েছে। এই বছরে নির্বাচন নিয়ে কিছু সাধারণ চিত্র রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে-

জীবনযাত্রার ব্যয়: ইন্দোনেশিয়ায় পেঁয়াজের দাম থেকে শুরু করে ইউরোপজুড়ে উচ্চ জ্বালানি বিল, খাদ্য, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য মৌলিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি সারা বিশ্বে পরিবারের জীবনযাত্রার মানকে আঘাত করেছে। বর্তমান সরকার ও নেতারা এর খেসারত দিচ্ছে।

প্রথম ছয় মাসে শেষ হয়ে যাওয়া কয়েকটি দেশের নির্বাচনে দেখা গেছে, ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলের সমর্থনে পতন ঘটেছে, জুনের ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে মূলধারার দলগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে এবং ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন রক্ষণশীলদের ভোটের পরাজয়ের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ব্যয়ের উদ্বেগ একটি শক্তিশালী কারণ ছিল।

আফ্রিকায়, জীবনযাত্রার মান নিয়ে অসন্তোষ এবং বেকারত্ব দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনে দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন এএনসির সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে ভূমিকা রেখেছে। ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য ডিসেম্বরে ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-আদ্দোর ক্ষমতাচ্যুতিতে প্রভাব রাখবে।

সবুজ রূপান্তর: জীবনযাপনের ব্যয়ের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের দলগুলোর ভূমিকা অনেক ভোটারের মনে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে পরিবেশবাদী দল গ্রিনস পাঁচ বছর আগের তুলনায় বেশি আসন পেয়েছে। তবে ব্রিটেনে লেবার পার্টি সাধারণ নির্বাচনের আগে ২৮ বিলিয়নপাউন্ডের সবুজ বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি বাদ দিয়েছিল। তাদের ভাষ্য ছিল, দেশ এটি বহন করতে পারে না। অপরদিকে এই বিনিয়োগে পূর্ণ সমর্থন ছিল কনজারভেটিভ পার্টির। সবজ রূপান্তরের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প অব্যাহত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের নীতি প্রচার করছেন। ট্রাম্পের বিজয়ের ক্ষেত্রে বাইডেনের সবুজ ভর্তুকি কতটা কার্যকর তা দেখা যাবে নির্বাচনে।

ডানপন্থিদের উত্থান?: জীবনযাত্রার সংকটের কারণে পশ্চিমা দেশগুলোতে অতি ডানপন্থি আন্দোলনের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে। ডানপন্থিদের অভিবাসন বিরোধী এবং জাতীয়তাবাদী নীতির মিশ্রণ, অর্থনৈতিক ব্যয় পরিকল্পনা এবং বিশ্বব্যাপী অভিজাতদের আক্রমণকারী জনতাবাদী বক্তব্যে সাড়া দিচ্ছেন জনগণ।

মার্চ মাসে পর্তুগালের পার্লামেন্টে ডানপন্থি চেগা পার্টির  আসন চারগুণ বেড়েছে। তিন মাস পরে ইউরোপজুড়ে অতি ডানপন্থি ইউরোসেপটিকরা ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে জয় পায়। ফ্রান্সে মেরিন লি পেনের নেতৃত্বাধীন উগ্র ডানপন্থিদের উত্থান ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত জোটবদ্ধ হতে হয়েছিল বামপন্থি দলগুলো। ব্রিটেনে অভিবাসীবিরোধী জাতীয়তাবাদী সংস্কার পার্টি ৪০ লাখেরও বেশি ভোট পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প অভিবাসনকে তার শীর্ষস্থানীয় অভ্যন্তরীণ প্রচারণার ইস্যুতে পরিণত করেছেন। তিনি অভিবাসীদের গণ নির্বাসনে পাঠানোর কথা বলেছেন এবং  জন্মগত নাগরিকত্ব বাতিল ও নির্দিষ্ট দেশের লোকেদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ঋণ ও নির্বাচনী ব্যয়: অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে অনেক রাজনীতিবিদ ক্ষমতা জয়ের জন্য বড় ব্যয় এবং কর কমানোর প্রস্তাব দিচ্ছেন। ধনী দেশগুলোর অর্থনীতিতে মহামারি পরবর্তী উদ্দীপনা প্যাকেজের পরে রেকর্ড মাত্রায় ঋণ যুক্ত করার ঝুঁকি রয়েছে।

ক্রেডিট রেটিং ফার্ম এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং গ্রুপ অফ সেভেন দেশগুলোর সরকারের ‘তাদের নির্বাচনী চক্রের বর্তমান পর্যায়ে’ ঋণের বৃদ্ধি থামানোর সম্ভাবনা কম।

জুন মাসে বিআইএসের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ধরনের একটি নির্বাচনী বছর রাজস্ব সম্প্রসারণের ‘উচ্চ’ ঝুঁকি নিয়ে এসেছে যা মূল্যস্ফীতি নামিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে জটিল করতে পারে।

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা: ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ার সাথে সাথে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো চলতি বছর বেশ কয়েকটি নির্বাচনী প্রচারণায় বড় ভূমিকা রাখছে। ফেব্রুয়ারিতে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব নির্বাচিত হন, যিনি জোট নিরপেক্ষ দেশটিকে ন্যাটোতে সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করার এবং এর মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র পরিবহনের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। লিথুয়ানিয়ায় ক্ষমতাসীনরা উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের আহ্বানের মাধ্যমে নির্বাচনে জয় পেয়েছে।

চীনকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা একটি বড় ইস্যু ছিল ১৩ জানুয়ারি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে। ক্ষমতাসীন ডিপিপি পার্টি তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে জয় পেয়েছে। কারণ দলটির প্রার্থী বেইজিংয়ের সাথে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডে সমর্থন ইস্যুতে মার্কিন ডেমোক্রেট ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের অব্যাহত সমর্থন – তার জন্য একটি বড় দুর্বলতা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। অপরদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি পুনরায় নির্বাচিত হলে ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনা করবেন। এছাড়া তিনি ইউক্রেনের সংঘাতের অবসান ঘটাবেন।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles