Monday, October 6, 2025

গরমে পানির সংকট রাজধানীতে, যা বলছে ওয়াসা


রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এরইমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির সংকট। গুলশান, নন্দীপাড়া, ইব্রাহিমপুর, মণিপুর, সোলমাইদ, মাটিকাটাসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় চলছে তীব্র পানির সংকট। সেখানে লাইনের পানিতে গোসল বা গৃহস্থালির কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। সুপেয় পানির অভাবে রাস্তায় নেমে মিছিলও করছেন নগরবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রায় সব কয়টিতেই কমবেশি পানির সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে অঞ্চল-২-এর নবাবগঞ্জ, ঢুরি আঙুলি লেন, জাফরাবাদ ও কাটাসুর, অঞ্চল-৪-এর বড়বাগ, মণিপুর, আগারগাঁও ও মিরপুর ১২, জোন-৫-এর গুলশান-১, গুলশান-২-এর ৮৩ নম্বর সড়ক এবং মালিবাগ বাজার রোড এলাকায় পানির সমস্যা রয়েছে।

এছাড়াও অঞ্চল-৬-এর বনশ্রীর এফ ব্লক ও নন্দীপাড়া; অঞ্চল-৭-এর রসুলপুর, পাগলা, শাহী মহল্লা, নুরবাগ, আদর্শনগর, নামা শ্যামপুর, নিশ্চিন্তপুর, দেলপাড়া, শান্তিধারা ও দৌলতপুর এবং অঞ্চল-১০-এর ইব্রাহিমপুর, পূর্ব শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১১-এর মদিনা নগর, বাইগারটেক, মাটিকাটা এবং উত্তরা ১৫, ১৬, ১৭ নম্বর সেক্টরে পানির সমস্যা রয়েছে।

এদিকে ঢাকা ওয়াসার দাবি, সার্বিকভাবে পানি সরবরাহে ঘাটতি নেই। তবে এলাকাভিত্তিক কিছু জায়গায় সাময়িক সমস্যা রয়েছে। মূলত ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, অতিরিক্ত গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং প্রয়োজনের তুলনায় গভীর নলকূপ কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা ওয়াসার একজন প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় কিছু জায়গায় গভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলন কমেছে। গরমে পানির চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং কয়েকটি এলাকায় চাহিদার তুলনায় গভীর নলকূপ কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে। প্রতিবছরই এপ্রিল-মে মাসে রাজধানীতে পানির সংকট বেশি হয়।

পানির সংকটের বিষয়ে গুলশানের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, গুলশানের মতো এলাকায় কয়েক দিন ধরে পানির সংকট চলছে। বিশেষ করে উত্তর গুলশান এলাকার মানুষ বেশি কষ্টে আছেন। এখানকার কমিটির লোকজনের সঙ্গে একাধিকবার ওয়াসার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। উত্তর গুলশান অংশে একটি পানির পাম্প বসানো জরুরি। ওয়াসাকে পাম্প বসানোর জায়গা কীভাবে দেওয়া যায় এখন সেই আলোচনা চলছে।

নন্দীপাড়ার ত্রিমোহনী এলাকায় তিনটি পানির পাম্প থাকলেও দুটি থেকে আসে ময়লা পানি। ভরসা কেবল একটিই। তাই এর সামনে পানি সংগ্রহে প্রতিনিয়ত চলে যুদ্ধ। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এখানকার অনেকে ভুলতে বসেছেন পানির আসল রঙ কিংবা স্বাদ। তীব্র পানি সংকট আর সুপেয় পানির অভাবে একদিকে যেমন বাড়ছে রোগবালাই, সেইসঙ্গে বাড়ছে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে পানি সংগ্রহের ভোগান্তি।

এই এলাকায় নল থেকে পড়া পানি দেখে বোঝা দায় পানি না অন্য কিছু। এই ময়লা পানি যেমন খাওয়ার অনুপযোগী, তেমনই রান্নার কাজেও ব্যবহার করা যায় না। এমনকি খেলেই হয় নানা রোগ। বারবার অভিযোগেও মেলেনি কোনও সমাধান। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এক সপ্তাহ ধরে পানির তীব্র সংকট। বারবার অভিযোগ করেও লাভ হচ্ছে না। অফিস থেকে বলছে কাজ চলছে, কাজ শেষ হলে পানির আর সমস্যা থাকবে না। কিন্তু কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে সে বিষয়ে কিছু বলছে না।

রাজধানীর নন্দীপাড়ার পানির সমস্যা সমাধানের বিষয়ে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানায়, দুই বা তিন সপ্তাহের মধ্যে পানির ভোগান্তি কমবে এই এলাকার মানুষের। ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইমরানুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এখানে আয়রন রিমুভাল প্ল্যান্ট বসানোর কাজ চলছে। কবে নাগাদ এই কাজ শেষ হবে তা আমি সঠিক বলতে পারছি না। সেটা প্ল্যান্ট বসানোর লোকজন বলতে পারবেন। আপনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

ঢাকা ওয়াসা দাবি করেছে, ঢাকায় পানির যে চাহিদা, উৎপাদন তার চেয়ে বেশি। তবে আয়রন রিমুভাল প্ল্যান্ট স্থাপন এবং পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে কিছু জায়গায় পানির সমস্যা হচ্ছে। ওয়াসার তথ্যানুযায়ী, সব এলাকায় ‘রেশনিং’ করার ব্যবস্থা না থাকায় কিছু জায়গায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এক এলাকায় পানির সংকট দেখা দিলে বা গভীর নলকূপ নষ্ট হলে আশপাশের এলাকা থেকে পানি এনে চাহিদা মেটানো হয়। এটাকে ‘রেশনিং’ বলা হয়। ওয়াসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও এলাকায় পানির সমস্যা হলে ঢাকা ওয়াসার হটলাইন নম্বরে (১৬১৬২) যোগাযোগ করতে হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পানির সমস্যা ও এর প্রতিকারের উপায় নিয়ে কথা বলার জন্য ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী. তাকসিম এ খানকে মোবাইলে ফোন দিলে তিনি কল কেটে দেন এবং এসএমএস পাঠিয়ে বলেন, ‘দুঃখিত, আমি এখন কথা বলতে পারবো না’। এছাড়াও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম সহিদ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীকে ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, তারা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, রমজান শুরুর আগে থেকেই রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় পানির সংকট দেখা দেয়। এর মধ্যে মালিবাগ, গুলবাগ, শেওড়াপাড়া, লালবাগ, রায়েরবাগ উল্লেখযোগ্য। রমজানে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, রাজধানীতে কোথাও পানির সংকট নেই। এলাকাভিত্তিক সাময়িক সমস্যা হতে পারে। সেটাও এক-দুই দিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যায়। এসব অভিযোগ আজগুবি। 

আরও পড়ুন- পানির সংকটে ভোগান্তি, ওয়াসা বলছে অভিযোগ ‘আজগুবি’




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles