Categories: Bangladesh News

২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প পায় যুক্তরাষ্ট্রেরই সংস্থা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়


বাংলাদেশে ‘দুই ব্যক্তির অপরিচিত এক প্রতিষ্ঠানের’ ২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পাওয়ার যে তথ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছেন, তা ‘সত্য নয়’ বলে দাবি করেছে ঢাকা।

সোমবার (৩ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের দুজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে দেওয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। 

মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে জানিয়ে বর্ণনা করা হয়, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএআইডি যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। 

গত ২১ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে এমন এক সংস্থা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, যে সংস্থার নাম আগে কেউ শোনেনি। সেই সংস্থায় মাত্র দুজন কাজ করেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। 

পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি মেরিল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে আবারো সেই প্রসঙ্গ তোলেন ট্রাম্প। এদিন তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার গেছে রাজনৈতিক পরিসর শক্তিশালী করতে এবং তাদের সহায়তা করতে, যাতে তারা একজন কট্টর বাম কমিউনিস্টকে ভোট দিতে পারে।’’

ট্রাম্পের ওই বক্তব্য নিয়ে নানা মহলে নানা আলোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলামের প্রতিষ্ঠান মাইক্রোগভর্নেন্স রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (এমজিআর) এই অনুদান পেয়েছে।

বদিউল আলম মজুমদারের সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই অর্থ পেয়েছে বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় কেউ কেউ অভিযোগ করেন।

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য দেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। গত শনিবার তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, “এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সুজন কোনো নিবন্ধিত সংগঠন নয়। সুজন কোনো বিদেশি সাহায্য নিতে পারে না; সংগঠনটি পরিচালিত হয় বিভিন্ন ব্যক্তির সহায়তায়।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা) ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রকল্প নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান করেছে।

অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইউএসএআইডি যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালকে (ডিআই) নির্বাচিত করে। প্রকল্প প্রস্তাবনা আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং একটি স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া অনুসরণের মধ্য দিয়ে ইউএসএআইডি সিদ্ধান্তটি নেয়। ২০১৭ সালের মার্চে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিআই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। পরে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর অর্থ আসে ধাপে ধাপে।

শুরুতে এসপিএল প্রকল্পটি ছিল ৫ বছর মেয়াদি এবং বাজেট ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় ছিল ইউএসএআইডি এবং অর্থায়নে ছিল ইউএসএআইডি ও যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান ডিএফআইডি (বর্তমানে এফসিডিও)। এই প্রকল্পে ডিএফআইডির অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল ১০ মিলিয়ন ডলার।

এসপিএল প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস করে শান্তি ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি, দলগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার উন্নয়ন এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের বিকাশে উৎসাহ দেওয়া। প্রকল্পের অধীনে ডিআই বাংলাদেশে জরিপ কার্যক্রমও পরিচালনা করে।

এই প্রকল্পের বাস্তবায়নও শুরু হয় ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময়। চার বছর বিরতির পর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর প্রথমেই ইউএসএআইডির ওপর খড়্গহস্ত হন ট্রাম্প। মার্কিন এই সংস্থা গত শতকের ষাটের দশক থেকে বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহযোগিতা কার্যক্রম দেখভাল করে আসছে। শুরুতেই এক নির্বাহী আদেশে এ সংস্থাসহ বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের উন্নয়ন অর্থায়নে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ দেশ তিনি।

ইউএসএআইডির দিকে তোপ দাগার এই সময়ে তিনি সঙ্গী করেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ককে; যাকে নতুন গঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির (ডিওজিই) প্রধান করা হয়েছে।

ট্রাম্প ও মাস্কের দাবি, সংস্থাটি অহেতুক নানা প্রকল্পে মার্কিন করদাতাদের অর্থ খরচ করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কাজে তো আসেইনি, উল্টো জালিয়াতির মাধ্যমে অনেককে পকেট ভরার সুযোগ করে দিয়েছে। ইউএসএআইডি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক প্রচার নিয়ন্ত্রণেও অর্থ ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ তাদের।

এমন প্রচারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন ট্রাম্প ও মাস্ক। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ২৯ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্পের উদাহরণ টানছেন তারা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ওয়াশিংটনে আরেক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “২৯ মিলিয়ন ডলার গেছে বাংলাদেশে, যেন একজন উগ্র বামপন্থি কমিউনিস্টকে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করা যায়।”

উগ্র বামপন্থি কমিউনিস্ট হিসেবে কারো নাম উচ্চারণ করেননি ট্রাম্প। কিন্তু জো বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনায় প্রায়ই তিনি ‘উগ্র বাম কমিউনিস্ট’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন।

২৯ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়নের বিষয়ে আরো তথ্যের অপেক্ষায় থাকার কথা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধানে জানতে পারে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে। তাই এটি বাংলাদেশের দুজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে প্রদান করার অভিযোগটি সত্য নয়। বস্তুত এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তির (ডিওএজি–ডেভেলপমেন্ট অবজেকটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টস অ্যাগ্রিমেন্ট) মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষের কোনো কিছু করার ক্ষমতা থাকে না।

উল্লেখ্য, ইউএসএআইডির প্রকল্পের ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করাটা বাধ্যতামূলক। এতে আর্থিক নিরীক্ষার প্রক্রিয়াটি কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পরও এ-সংক্রান্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে পুনর্নিরীক্ষা করা হয়।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultractivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 bdphoneonline.com
👉 dailyadvice.us

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

Microsoft and NVIDIA speed up AI improvement and efficiency

Collectively, Microsoft and NVIDIA are accelerating a few of the most groundbreaking improvements in AI.…

4 weeks ago

Your subsequent smartphone would possibly embrace an even bigger 200MP principal digicam

Robert Triggs / Android AuthorityTL;DR Android OEMs are experimenting with a bigger 200MP major sensor…

4 weeks ago

How is the UK investing in AI infrastructure?

Final yr, 4 main U.S. companies dedicated a mixed £6.3 billion, or $8.16 billion, to…

4 weeks ago

Breaking Boundaries with Photonic Chips and Optical Computing

Introduction: The Shift from Electronics to Photonics As conventional semiconductor-based computing approaches its bodily and…

4 weeks ago

SparkFun

This week, we announce our assist of Python and MicroPython, launch two new IoT RedBoards,…

4 weeks ago

Reference Design For Gigabit Ethernet Entrance Finish

That includes optimized elements akin to transformers, common-mode chokes, and surge safety, this validated design…

4 weeks ago