প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে করা ১০টি সমঝোতা-স্মারক সইয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে আজীবন দেশটির গোলামে পরিণত করবে বলে মনে করে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী বর্তমান অবৈধ মাফিয়া সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা গোলামির নবতর সংস্করণ মাত্র। কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে যা করা হয়েছে, তাতে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।’
রবিবার (৩০ জুন) বিকালে রাজধানীর গুলশানে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এ অবস্থান তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-স্মারক প্রসঙ্গ ছাড়াও সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যেরও বিশ্লেষণ করেছে বিএনপি।
প্রসঙ্গত, গত ২১-২২ জুন ভারত সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিগত ১৫ বছরে একটি অনন্য উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। যার সুফল দুই দেশের জনগণ ভোগ করছেন। বিশেষ করে ২০২৩ সালে দুই দেশের সম্পর্কে নতুনমাত্রা যুক্ত হয়েছে।’
‘‘বাংলাদেশ-ভারত সমঝোতা স্মারক: জনম্যান্ডেটবিহীন সরকার প্রধান শেখ হাসিনার ভারত সফর আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক গোলামি চুক্তির নব সংস্করণ’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামি চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সেই ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করা হলো, তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।’
‘এসব চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জোটনিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থি।’
বিএনপি মনে করে, ‘‘বস্তুত, এ সব সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তা কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চায়। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পড়বে। যে সাতটি সমঝোতা স্মারক নতুন করে সই করা হয়েছে, সেগুলোর প্রায় সবগুলোই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকেন্দ্রিক।’
দলটির দাবি, ‘প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশ ভূখণ্ডকে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক পণ্য পরিবহনের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেন নেক’কে বাইপাস করে ব্যবহার করার সুদূরপ্রসারী মহাপরিকল্পনা থেকেই এসব সমঝোতা চুক্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে জলাঞ্জলি দিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে ভারতের গোলামি চুক্তির গভীর ফাঁদে ফেলার সেই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জাতীয় স্বার্থবিরোধী এই চুক্তি জনগণ মেনে নেবে না।’
‘ভারতের সঙ্গে সাধারণ কূটনৈতিক দর কষাকষির ক্ষমতা হারিয়েছেন শেখ হাসিনা’
বিএনপির মহাসচিব সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, ‘‘ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রজেক্টটা করে দেয়, তাহলে আমাদের সব সমস্যাই তো সমাধান হয়ে গেলো।’ শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে সাধারণ কূটনৈতিক দর কষাকষির ন্যূনতম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন।’’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘সংবাদ সম্মেলনে তিস্তার পানির অভাবে পর্যুদস্ত অসহায় মানুষের আর্তনাদকে শেখ হাসিনা ‘প্যাঁ প্যাঁ’ করা বলে আখ্যায়িত করেছেন— যা সমগ্র জাতির সঙ্গে তামাশা ও হাস্য রসিকতার শামিল।’’
ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা সবাই জানি, কেউ কেবলমাত্র বিরক্ত হলেই ‘প্যাঁ প্যাঁ’ না করতে বলে। একদিকে ভারত থেকে তিস্তার পানি আদায়ে ব্যর্থতা, অপরদিকে অসহায় মানুষের সঙ্গে এ নিয়ে তামাশা— এটি জাতির জন্য নিতান্তই দুঃখজনক। শেখ হাসিনা তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তিকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করেছেন। তিস্তাচুক্তি তাদের এজেন্ডাতেই স্থান পায়নি। অনেকে মনে করেন, পানি মানুষের জীবন, জীবিকা ও জলবায়ুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং পানি নিয়ে ভবিষ্যতে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াতে পারে।’’
‘ইউরোপের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই, ঝুলন্ত ফেলানিও নেই’
গত ২৫ জুন গণভবনে অনুষ্ঠিত ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতীয় রেল ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশের জনগণ উপকৃত হবে।’ এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অথচ বিশেষজ্ঞরা রেল করিডোরের ফলে বাংলাদেশের লাভ নিয়ে দারুণ সংশয় প্রকাশ করেছেন। জানা যায়, এ ট্রেন বাংলাদেশের কোনও মানুষ ব্যবহার করতে পারবে না।’
‘একতরফাভাবে ভারতকে করিডোর সুবিধা দেওয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনও লাভ হবে না। তাহলে শেখ হাসিনা কীভাবে দাবি করেন— এ রেল ট্রানজিট বাংলাদেশের মানুষের উপকারে আসবে? অপরদিকে এ রেল ট্রানজিটের কোনও সমীক্ষা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি।’ বলেন, বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘‘সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা রেল করিডোরকে ইউরোপের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘তারা পারলে আমরা পারবো না কেন।’ কথা হলো, ইউরোপের ক্ষেত্রে বিষয়টি বহু দেশীয়, আমাদের ক্ষেত্রে যা কেবলই দ্বিপাক্ষিক। তাছাড়া ইউরোপের সব দেশে সুশাসন ও ন্যায়নীতি বিরাজমান, যা আমাদের দেশে অনুপস্থিত। ইউরোপের সীমান্তগুলোতে আমাদের মতো কাঁটাতারের বেড়া নেই, ঝুলন্ত ফেলানিও নেই।’’
‘অতএব আমাদের বিষয়টি ইউরোপের সঙ্গে তুলনীয় নয়।’ বলে উল্লেখ করেন ফখরুল।
১০ সমঝোতার বিষয়ে ব্যাখ্যা, রংপুর বিভাগ বিচ্ছিন্নের আশঙ্কা বিএনপির
ভারত সফরে করা দুই দেশের সমঝোতা-স্মারক বিষয়ে বিএনপি মতামত দিয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গ্রিন পাওয়ার’ এর বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা সমঝোতা স্মারকের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভারতীয় সহায়তার রামপাল ও জাপানি সহায়তার মাতারবাড়ী কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ইতোমধ্যেই সুন্দরবন ও উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনীকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছি। ক্রমবর্ধমান কয়লানির্ভর প্রকল্প সামনে রেখে গ্রিন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কতটা আছে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।’
‘ভারতে চিকিৎসা প্রার্থীদের ভিসা সহজ করতে ই-ভিসা, চিকিৎসাসেবায় আমাদের আরও বেশি পরনির্ভর করবে। প্রয়োজন ছিল আমাদের দেশেই চিকিৎসা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তার কার্যকর চুক্তি।’ ফখরুলের ভাষ্য, ‘কোনও দেশের সরকারপ্রধান নিজ থেকে দেশের মানুষকে অন্য দেশে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য উৎসাহিত করে, এটি বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বিএনপির দাবি, ‘আইসিটি নিয়ে সহযোগিতার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ সহায়তা বৃদ্ধির সহযোগিতার বিষয় ভবিষ্যতে আমাদের নিরাপত্তা সুসংহতকরণে বিরূপ প্রভাব ফেলবে মর্মে সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। রাডার পরিচালনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যদি প্রতিবেশীর হাতে থাকে, তাহলে তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হবে।’
ফখরুল উল্লেখ করেন, ‘২০২২ সালের এক এমওইউতে উল্লিখিত ভারতীয় রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে হিলি-মেঘালয় প্রশস্ত সড়ক সংযোগ ও ১১ কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র সেতু— বিশেষ সামরিক পরিস্থিতিতে সমগ্র রংপুর বিভাগকেই বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে বলে সামরিক বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।’
তিনি বলেন, ‘ভারত কেবল আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়, সরকারি প্রশাসনযন্ত্র, জাতিগঠনমূলক নানাবিধ কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন স্পর্শকাতর অর্থনৈতিক প্রকল্প, যেমন- রূপপুর পারমাণবিককেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, রাডার স্থাপন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করছে। এক্ষণে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়ও ভারতীয় হস্তক্ষেপের সুযোগ সৃষ্টি হলে আমাদের সার্বভৌমত্ব মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।’
‘যে সমুদ্রসম্পদের জন্য বাংলাদেশকে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হয়েছে, বাংলাদেশের সেই সমুদ্রসম্পদকেই ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আকাশ সীমান্ত ভারতের হাতে তুলে দিতেই যৌথ স্যাটেলাইট নির্মাণের চুক্তি করা হয়েছে।’ বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, দলের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিহউল্লাহ, জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…