সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার মাহফুজুর রহমান হাসান। আর কিছু দিন পরই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দেবেন তিনি। গ্রামের বাড়ি শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওর ও সংগাই হাওরে মোট ৩২ কিয়ার (১ কিয়ার=৩০ শতক) জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে তার পরিবার। চাষের পর থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু মে মাসের শুরু থেকে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই খবর শুনে ধান কাটতে কাস্ত হাতে হাওরে নেমেছেন মাহফুজুর রহমান হাসান।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে সংগাই হাওরে ধান কর্তনকালে মাহফুজুর রহমান হাসানের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। এ সময় হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এ বছর আমরা দেখার হাওরে ১১ কিয়ার ও সংগাই হাওরে ২১ কিয়ার জমিতে ধান চাষ করেছি। আল্লাহ এবার আমাদের হাওরে ভালো ফসল দিয়েছেন। কিন্তু কয় দিন ধরে টিভি-পত্রিকায় বৃষ্টিপাতে বন্যা পূর্বাভাস শুনছি। এখন বৃষ্টি হলে আমাদের নিচু এলাকার হাওরের পাকা ধান তলিয়ে যাবে। এই ভয়ে সুনামগঞ্জ থেকে বাড়িতে এসে কৃষকদের সঙ্গে ধান কাটতে এসেছি। গরমের কারণে ধান কাটার শ্রমিক পর্যাপ্ত সংখ্যক পাওয়া যাচ্ছে না, তাই নিজেই আজ থেকে হাওরের পাকা ধান কাটায় নেমেছি। বিকালে বাড়িতে গিয়ে ধান মাড়াই দিতে হচ্ছে। যদিও প্রচণ্ড গরমে কষ্ট হচ্ছে। তবে ধান তুলতে না পারলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়ে যাবো। আবহাওয়া যদি এভাবে আরও ৫ থেকে ৬ দিন ভালো থাকে তাহলে সকল ধান গোলায় তুলতে পারব।’
কেবল হাসান একা নেন, তার মতো কলেজ পড়ুয়া রাহাত আহমেদও সিলেট থেকে দিরাই উপজেলায় এসেছেন কৃষক বাবার সঙ্গে ধান কাটায় সহযোগিতা করতে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা হাওরের মানুষ লেখাপড়া, ব্যবসা, চাকরির জন্য বাড়িতে থেকে দূরের শহরে যেতে হয়। কিন্তু বৈশাখ মাস এলে কৃষকের সঙ্গে ধান কাটা, মাড়াই শুকানির কাজের জন্য বাড়িতে আসি। কারণ প্রতি বছরই আমাদের আগাম বন্যার আশঙ্কায় থাকতে হয়। আবার অনেক বছর বন্যায় হাওরের ধান ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এবারও সেই বন্যার আতঙ্ক নিয়ে হাওরের অর্ধেক ধান কাটা শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় দুই একের মধ্যে বন্যা হওয়ার শঙ্কার সংবাদ জেনে চিন্তায় আছি। পাহাড়ি ঢলে আসলে নদীর পানি বেড়ে হাওরে তলিয়ে যাবে। তখন বাবার পক্ষে সারা বছর পরিবার ও আমাদের পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব হবে না।’
হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ধান উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। ফলে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেও বৈশাখী ধান গোলায় তুলতে উৎসব চলে হাওরে বৈশাখজুড়ে। এ ধান কাটার উৎসবে যোগ দিচ্ছেন হাওরপাড়ের শিশু থেকে শুরু করে নারী-পুরুষ, বয়োবৃদ্ধরাও। এমনকি দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা চাকরিজীবী, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ছুটে আসেন কৃষক বাবা মায়ের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার জন্য। কারণ এই সোনার ফসল দিয়েই সারা বছরের স্বপ্ন বুনেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের সব হাওরে মোট ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। নির্বিঘ্নে হাওরের ফসল গোলায় তুলতে পারলে ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকার ধান উৎপাদিত হবে।
দেখার হাওরের আরেক কৃষক আব্দুল কাহার বলেন, ‘গরমটা একটু বেশি ধান কাটা অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবু আমি আমার তিন ছেলে ও ছোট ভাইকে নিয়ে গত দুই দিন থেকে ধান কাটছি। এখন মেঘ বৃষ্টির দিন তাই ভয়ে ভয়ে আছি। আমার ধান দেরিতে পেকেছে তাই হাওরে আমার ধান দেরিতে কাটা পরছে। আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। এখন বন্যা হলে আমার পাকা ধান নষ্ট হবে।’
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন হাওরে কৃষকরা ধান কাটছেন। কৃষক-শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনও ধান কাটায় আছে। সারা জেলায় এখন পর্যন্ত ৮৩ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তাহলে কৃষকেরা তাদের ফসল শতভাবই গোলায় তুলতে পারবেন। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তাদের জমির ধান ৮০ ভাব পেকে গেলে দ্রুত কর্তন করা ও ধান শুকিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার রাইজিংবিডিকে বলেন, সুরমা নদীর পানি গত কালকের তুলনায় আজকে ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সপ্তাহে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি যেতে পারে। এতে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…