সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সৃষ্ট সহিংসতা একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এই আন্দোলনের কেন্দ্রে ছিলেন বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভার্চুয়াল জগৎ ছেড়ে রাজপথের আন্দোলনের এই ভয়াবহতা গভীরভাবে আঁচড় কেটেছে তাদের হৃদয়ে। চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পরে তারা রাজপথ ছেড়েছেন। ফিরতে শুরু করেছেন দৈনন্দিন জীবনে। যদিও এই ফেরাটা ততটা সহজ নয় বলে জানিয়েছেন আন্দোলনে যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীরা। মনোবিশ্লেষকরা বলছেন, ফিরতে সময় লাগবে। ক্ষত যত বড়, সারতে সময় দিতে হয় তত। নিজেরা আহত হয়েছেন, বন্ধুদের লাশ দেখেছেন, সরকারকে সরিয়ে দিয়েছেন যে শিক্ষার্থীরা, তাদের ‘স্বাভাবিক’ হতে সময় দিতে হবে।
কী তাদের এত সাহস জুগিয়েছিল প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘লাশ দেখে ভয় কেটে গিয়েছিল। একসময় গুলির শব্দ স্বাভাবিক লাগছিল। ভয়াবহতার কথা তখন চিন্তা করি নাই। আমরা জানি, আমাদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। তাই আমাদের আন্দোলন ছিল ন্যায্য, আর এটাই ছিল আমাদের সাহস। তবে যখন সব স্বাভাবিক হলো, সব প্রকাশ পাওয়া শুরু হলো, তখন বুকে কাঁপন ধরেছে কীসের মধ্যে ছিলাম।
অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইয়াসিন শেখ বলেন, অবশ্যই এই স্মৃতি আজীবন মনে রাখার মতো। গুলিবিদ্ধ লাশ হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথে মারা যেতে দেখেছি, কিন্তু একবারও পিছপা হইনি। মনে হয়নি পরের ডেডবডিটা আমার হতে পারে। বরং মনের মধ্যে আরও বেশি রাগ, আরও বেশি ক্ষোভ জন্মেছিল যে এখনই সম্ভব হলে এই সরকারের পতন করে ফেলি। শুধু আমার না, সবারই একই চিন্তা ছিল।
এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে কীভাবে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা আরও ভয়াবহ হতো যদি আমরা জয়ী না হতাম। এখন অন্তত নিশ্চিত থাকতে পারছি, আমার আর ভয় নেই, আমার আর কেউ ক্ষতি করবে না। যা হবার তো তা হয়েই গেছে। এখন শুধু আমাদের একটাই চাওয়া, যে কারণে এতগুলো মানুষ মরলো, তাদের এই ত্যাগের জন্য আমাদের দেশে একটা সুন্দর পরিবর্তন আনতে হবে। তা না হলে আমরা যারা বেঁচে আছি, নিজেদের বেইমান মনে হবে।
মিরপুরে একেবারে সামনে থেকে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আবু হাসনাত। তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন। অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, চোখের সামনে একটা গুলি এসে একজনের মাথার মগজ উড়িয়ে দিয়েছে। সেই মগজ রাস্তায় পড়ে নড়তে দেখেছি। এটা তো একটা ঘটনা, কত গুলিবিদ্ধ দেহ দেখেছি। এসব দেখে তখন রক্ত আরও গরম হয়ে গিয়েছিল। ভয়ের কথা চিন্তা করি নাই। কিন্তু এখন যখন সব স্বাভাবিক, তখন এই চিত্রগুলো বারবার মনে পড়ে। শরীর শীতল হয়ে যায়। এখনও গুলির শব্দ শুনতে পাই, এমনও মনে হয়। এসব থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের জয় হয়েছে বলে আজ সহজেই ওই ভয়ংকর পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছি। যদি ব্যর্থ হতাম! তাহলে আজ হয়তো জীবন আর স্বাভাবিক হবে—এই চিন্তাও করতে পারতাম না। এখন সব ভয়ভীতি দূরে রেখে একটা সুন্দর বাংলাদেশ হবে, এমন স্বপ্ন দেখছি। অনেক আশা মনে। নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে, এরকম প্রচারণা চালাচ্ছি। আর স্বাভাবিক জীবনে তো ফিরতেই হচ্ছে। তবে আমাদের যারা মারা গিয়েছেন, তাদের জন্য হলেও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
পরিবার ও সহপাঠীদের সমর্থনে দ্রুতই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিউবিটি’র তাছনিয়া নাওরিন পূর্ণতা। আন্দোলনে তিনি পায়ে দুটি স্প্লিন্টারের আঘাত লেগে আহত হয়েছিলেন। তাই আতঙ্কটা বেশি ছিল বলেও জানান তিনি।
পূর্ণতা বলেন, আমি ৪ আগস্ট মিরপুরে আহত হই। কিন্তু যখন দেখলাম ৫ তারিখে আমাদের জয় হলো, তখন ওই আঘাতের ব্যথা আর আমাকে ছুঁতে পারেনি। মনে হয়েছে আমার কষ্ট সফল হয়েছে। এর পরের সময়টা আমরা কেবল পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছি। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকেও সমর্থন পাচ্ছি, দ্রুত মানসিকভাবে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তবে যে সহিংসতার চিত্র দেখেছি, তা কখনও ভুলবো না।
আন্দোলনে বন্ধু হারানোর শোকের কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থী বাঁধন হাসান নূর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ৪ আগস্ট বিকালে মিরপুর ১০ নম্বর আমার বন্ধুটা মারা যায়। আমি তো ভুলতে পারি না। কিন্তু বন্ধুর মৃত্যু আমাকে থামাতে পারেনি। বরং এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে পরের দিন আবারও নেমেছি। আন্দোলনে কীভাবে এত সাহস পেয়েছি জানি না। কিন্তু অনেক অন্যায়ের শিকার হয়েছি সবসময়। আন্দোলন চলাকালে যেভাবে মানুষ মেরেছে, তারপর তো এই সরকারকে মানা সম্ভব হতো না। এই সরকারকে না সরাতে পারলে, আজকে আপনার সঙ্গে কথাই হতো না আমার। পরিস্থিতি এমন গেছে যে পেছালেও মরতে হবে। তাহলে সামনে থেকেই মরবো।
এখন সব কিছুই অনুকূলে, তাই স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরতে পারছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনের আগে বেঁচে থেকেও মরার মতো ছিলাম। মনে ভয় নিয়ে চলতাম। কথা বলতে পারতাম না। এখন আমাদের ভয় কেটে গেছে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছি। বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছি। আমাদের জেনারেশন তো অনলাইনেই বেশি অ্যাক্টিভ থাকি, সেখানেও মত প্রকাশ করার সাহস পাচ্ছি। তাই একটা ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেলেও এখন তুলনামূলক ভালো আছি। তবে এসব স্মৃতি কখনও ভোলা যাবে না। ভুলতেও চাই না। এগুলোই আমাদের শক্তি নতুন বাংলাদেশ গড়ার।
মনোরোগ বিশ্লেষক তাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কখনও যদি মানুষ কোনও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়, তাহলে তার ওই অনুভূতি ব্যতিরেকে অন্য অনেক অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায়। তারা বাস্তবতার থেকে দূরে নিজেদের একটা বাস্তবতা তৈরি করে—সেখানে বসবাস করে। সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য সময় লাগবে। সামাজিক মানসিক আবেগীয়ভাবে ঠিক হওয়ার সময় যখন আসবে। তখন বাকি অনুভূতি সেনসেটিভ হবে। এটা একটু সময়ের ব্যাপার। এটা তাদের পাশের লোকজন অনুভব করতে পারলেও তারা নিজেরা চিহ্নিত করতে পারবে না, এটা স্বাভাবিক।’
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…