Categories: Bangladesh News

সেমিস্টার জটে পড়তে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা ‘প্রত্যয়’ স্কিম থেকে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন ও প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে করে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলোর বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আন্দোলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর কবে নাগাদ এই আন্দোলন শেষ হবে তার সঠিক নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না শিক্ষকরা। ফলে সেমিস্টার জটে পড়তে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

গত ২০ মার্চ অর্থ বিভাগ ‘প্রত্যয়’ স্কিম চালুর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত ১ জুলাই থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা ‘প্রত্যয়’ স্কিমে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেসব শিক্ষকরা ১ জুলাই থেকে নিয়োগ পাবেন তারা এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। তবে বিদ্যমান শিক্ষকরা এর আওতার বাইরেই থাকবেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলছেন—‘প্রত্যয়’ স্কিমের ফলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবেন না। আর তাই সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ‘প্রত্যয়’ স্কিম থেকে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন ও প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

সর্বজনিন এই পেনশন স্কিম গত ১ জুলাই থেকে চালু হলে ওইদিন থেকেই ক্লাস, পরীক্ষা এবং সব দাফতরিক কাজ বন্ধ করে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হচ্ছে না হচ্ছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তো বন্ধ হয়ে গেছে, এতে যারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন তাদের ঘুম তো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। যদি তা না হয় তাহলে সমস্যা। দেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই তো থাকে না। সরকারের সিদ্ধান্ত কী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া? এখানে মন্ত্রণালয় দায়িত্ব এড়াতে পারে না। আমাদের দাবি তারা মানবেন না, মানার সামর্থ নেই সেটা অন্য বিষয়। তারা বসবেন না, আলাপ করবেন না, পরিস্থিতি দেখবেন না, তার মানে বিশ্ববিদ্যালগুলোর প্রতি তাদের দায়িত্ব নেই তাই বোঝাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ফেডারেশনের সভাপতি, আমার ফোন নম্বর তাদের কাছে নেই তা তো নয়। বিষয়টা হলো কোনও ধরনের আগ্রহ কারও নেই, দায়িত্ব নেওয়ার সাহস নেই। সমস্যার তো সমাধান আছে, আলোচনা করে সমাধান করা যায়। সেটি কেউ করছেন না। আমরা তো রাস্তা-ঘাট বেরিকেড দিয়ে ব্লক করতে পারি না। আমাদের ভাষা যদি তারা বুঝতে না পারেন তাহলে এই দেশের জন্য অমঙ্গল।’

পরীক্ষা বন্ধ, ক্লাস হচ্ছে না, সেমিস্টার তো জট হবেই, শিক্ষার্থীদের কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে আছে, অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনও ভূমিকা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কার, ভবনগুলো কার? দুই-একটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। আন্দোলন দুই সপ্তাহ হয়ে যাচ্ছে, এরপর আমাদের আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে। তারপরও হয়তো দেখবো কর্তৃপক্ষ কেউ নেই।’ 

আন্দোলন প্রসঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু বলেন, ‘আমরা তো ভালোভাবেই চালাচ্ছিলাম। আমরাও শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবনায় পড়ে গেছি। আগামীতে ঢাকায় একটি বৈঠক আছে। শিগগিরই হয়তো একটা সমাধান হয়ে যাবে।’  

এদিকে শিক্ষকদের আন্দোলন ও সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংবাদিকদের একাধিকবার জানিয়েছেন, সরকারের সর্বজনীন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করার তার এখতিয়ার নেই।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের আজকের যে বেতন-ভাতা তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। আমি আবারও বলবো আস্থাশীল থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সব সময় বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন (শিক্ষায়), এই বিনিয়োগ এখন পর্যন্ত যা বেড়েছে, আগামীতেও বাড়বে। শিক্ষকদের সম্মানী ও প্রাপ্যতা বাড়তে থাকবে। ১ জুলাই পরবর্তীতে যেসব শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবেন, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যারা যোগদান করবেন, সে বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা আছে। মন্ত্রণালয়ের যে নির্দশনা সেটা সরকারের সার্বিক একটি নির্দেশনা। যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারের একটি অংশ সেখানে সরকারের সার্বিক নির্দেশনা, সেটার বিষয়ে আলাদা করে মন্তব্য করবো না আমি। সেটি সরকারের সার্বিক ও নীতিনির্ধারণীর বিষয়। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমি মন্ত্রিপরিষদের একজন সদস্য। যেটি সর্বজনীন একটি সিদ্ধান্ত, সেটার বিষয়ে আলাদা করে মন্ত্রণালয় বা শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমার বক্তব্য নেই।’

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা ‘প্রত্যয়’ স্কিমে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক। গত ১ জুলাই থেকে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা এ কর্মসূচির মাধ্যমে এর জোর বিরোধিতা শুরু করেন। ঘোষিত আন্দোলন-কর্মসূচির আজ (১০ জুলাই) ১০ দিন।

এই পরিস্থিতিতে ফেরারেশনের নেতারা বলছেন, কোনও সমাধান না হলে কঠোর আন্দোলন-কর্মসূচিতে যাবেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যেসব সরকারি কর্মচারী রাজস্ব খাত থেকে বেতন পান, তাদের টাকা জমা হয় জিপিএফে। আর যারা রাজস্ব খাতের বাইরে থেকে বেতন পান, তাদের টাকা জমা হয় সিপিএফে। অবসরে যাওয়ার পর তারা এই টাকা পেয়ে থাকেন।

অর্থ বিভাগের তথ্যমতে, বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থায় কর্মচারী দেয় মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান দেয় মূল বেতনের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ‘প্রত্যয়’ স্কিমে প্রতিষ্ঠান দেবে মূল বেতনের সমান অর্থাৎ ১০ শতাংশ। বিদ্যমান সিপিএফ–ব্যবস্থা থেকে তা ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি।

কিন্তু এই স্কিম থেকে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন ও প্রতিশ্রুত সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলনে যান দেশের ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি প্রশাসনিক ও দাফতরিক কাজ, সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামসহ সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলা বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের একটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও সব পরীক্ষা এখন বন্ধ। আরবি বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ২ জুলাই থেকে। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা আন্দোলন শেষ হলে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত হবে। কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষা গত ৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। আন্দোলন কর্মসূচির কারণে সব বন্ধ হয়ে গেছে। একইভাবে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সেমিস্টার পরীক্ষা নির্ধারিত সময় অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার শিক্ষার্থীরা। সেমিস্টার জটের মুখোমুখি তারা। ভবিষ্যতে সেশনজটের আশঙ্কাও করছেন।


👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago