সুনামগঞ্জে অতি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের কারণে মার্চের দিকে দেখা দেয় আগাম বন্যা। আর এই বন্যার কারণে কৃষকের সোনার ফসল ভেসে যায়।
ফলে বন্যার হাত থেকে কৃষকের ধান রক্ষায় প্রতি বছর সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে নির্মাণ ও মেরামত করা হয় ফসলরক্ষা বাঁধ। এবার ধান রক্ষায় গত ১৫ ডিসেম্বর ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। শেষ হওয়ার কথা ছিলো ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এবছর শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। বিগত দিনের মতো এবারও নানা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে বাঁধের কাজ দায়সারাভাবে করা হচ্ছে ও বাঁধ নির্মাণে স্বেচ্ছাচারিতাসহ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক একে কুদরত পাশা বলেন, আমরা বারবার দেখেছি সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে চলছে শুধু বাণিজ্য। এবং এই বাণিজ্যের সাথে জড়িত পাউবো, বাণিজ্যের সাথে জড়িত প্রশাসন, বাণিজ্যের সাথে জড়িত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। এই তিন-চার শ্রেণির মানুষ পরিকল্পিতভাবে হাওরের এই শত কোটি টাকায় প্রতিবারই দুর্নীতি করে।
তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি কিভাবে করে? আমরা প্রথমেই (পানি উন্নয়ন বোর্ড) পাউবো’র কাছে দাবি করি পাক-কলম তৈরি করার সময় একটা বাঁধের মাপ বর্তমানে কি অবস্থায় আছে, কেমন মাটি লাগবে সেই হিসাব করার জন্য। কিন্তু তারা সেই হিসাব না করে গড়পরতা একটা হিসাব করে এবং যাদেরকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) দেওয়া হবে তাদেরকে আগেই মনোনীত করে তাদের মাধ্যমে টাকাগুলো লুটপাট করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কর্মী ছাড়া, তাদের পছন্দের মানুষ ছাড়া অন্য কেউ পায় না। নীতিমালায় কৃষকের কথা বলা থাকলেও সেখানে সেই নীতিমালা উপেক্ষা করেই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সেই টাকার খেলা খেলছেন হাওরের এই বাঁধ নিয়ে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমরা (হাওর বাঁচাও আন্দোলন) ২০১৭ সালের পর থেকেই হাওর রক্ষা বাঁধ নিয়ে কাজ করছি। বর্তমানে এবছর আমরা দেখছি সেই বছরের চেয়ে খারাপ অবস্থা। গত কয়েকদিন আগে যে বৃষ্টিপাত হয়েছিল, এই বৃষ্টিতেই একটার পর একটা বাঁধ ধ্বসে গেছে। আমরা প্রতিবারই পাউবোকে জানিয়েছি এবং তারা তড়িঘড়ি করে বাঁধ মেরামত করেছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও; দুঃখজনক হলেও সত্য মার্চ মাসের ১ তারিখ মধ্যনগরে দু’টি বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। তাহলে ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের কাজ শুরু হয়ে যদি মার্চে এসেও শেষ না হয়, তাহলে মার্চে শুরু হওয়া বাঁধের কাজ শেষ হবে কবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অফিসের সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে ৭৩৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো জেলায় ১১৮টি বাঁধ নির্মাণের কাজ করা হবে। যার মধ্যে ৭৩৪টি অংশে ৫৯১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। গত ১৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হলেও কাজ শেষ হয়নি।
কৃষক ও স্থানীয়দের অভিযোগ অনেক বাঁধের সঠিক উচ্চতা দেওয়া হয়নি। পুরাতন বাঁধের কাছ থেকে মাটি তুলে নতুন বাঁধ করা হচ্ছে। অনেক স্থানে পূর্বের পুরাতন বাঁধের মাটি খুঁড়ে দায়সারাভাবে নতুন বাঁধ করা হচ্ছে। আবার বালু মাটি দিয়েও বাঁধের কাজ করার অভিযোগ আছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষক জুয়েল মিয়া বলেন, আমাদের উপজেলায় এখন পর্যন্ত অনেক হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। আমরা সাধারণ কৃষকরা দুশ্চিন্তায় ভুগছি। দিনে রাতে নামাজ পড়ে আল্লাহের কাছে দোয়া করছি, নয়তো বন্যা হলে এসব দুই নম্বরি বাঁধ টিকবে না।
তাহিরপুরের কবির হোসেন বলেন, প্রতিবছর দায়সারাভাবে বাঁধের কাজ করা হয়। আমরা একবারও তার বিচার পাই না। এই যে বাঁধ দিয়েছে, একটু বৃষ্টি এলেই কৃষকদের ঘুম হারাম হয়ে যায়। বাড়ি থেকে দৌড়ে হাওরের বাঁধে আসি। ফসল ঘরে তোলার আগে যদি পানি বাড়ে তাহলে আমরা এবার শেষ।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ নূর আহমেদ বলেন, বাঁধের নামে এবার যে বিভিন্ন অনিয়ম হয়েছে তা বিশেষ করে অনেক জায়গায় বালির বাঁধ হয়েছে। অনেক জায়গায় অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প করা হয়েছে। বাঁধের গোড়া থেকে মাটি কেটে বাঁধ করা হয়েছে। যেখানে সময়মতো বাঁধের কাজ করা হয় নাই; সেখানে কাজে নানা অনিয়ম হওয়ায় বাঁধগুলো ঝুঁকির মধ্যে আছে। আমরা দাবি করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিয়ে বাঁধের কাজটাকে অতিবৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢল নামার আগেই যেন শেষ করেন।
তবে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, এখন পর্যন্ত ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার বলেন, এবার বাঁধ একদম নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমা পর্যন্ত আসলেও বাঁধের সমস্যা হবে না। তবে এই বিপদসীমা যদি অতিক্রম করে তাহলে সমস্যা হতে পারে। নয়তো আমরা যেসব জায়গায় বাঁধের কাজ করেছি তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা নাই।
প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, কেউ যদি সঠিকভাবে অভিযোগ করে আমরা তা খতিয়ে দেখবো।
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…