অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে ‘শেখ হাসিনা মডেল আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ঘর পাওয়া উপকারভোগীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে অতীতে কষ্টের কথা শুনিয়েছেন। ঘর পাওয়ার আগে তারা ছিলেন সমাজের অবহেলিত, দুখী, ভাসমান মানুষ। সেসব দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। সুখের সেই কান্নায় সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। ঘর পেয়ে তারা যে কতটা সুখী, তা বেরিয়ে আসে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের দোয়া আর ভালোবাসায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলের জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে সরকারের আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ পরিকল্পনার আওতায় মঙ্গলবার (১১ জুন) সারাদেশে গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে আরও ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর করেন।
সকাল ১১টায় নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি উপকারভোগীদের অনুভূতি শোনেন।
ভোলা চর ফ্যাশন এলাকার চর কচ্ছপিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগী বিবি আয়েশা জানান, ২৪ বছর আগে তার স্বামী লিভার ক্যান্সারে মারা যান। সেই থেকে তার কষ্টের জীবন শুরু। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার একটি ভাঙা ঘর ছিল। আমার কিছু ছিল না যে, একটা টিন আইনা সেই ঘর ঠিক করবো। আপনি ঘর দিছেন, বিদ্যুৎ দিছেন, পুকুর, টিউবওয়েল দিছেন। আমি ভাবি নাই এমন একটা ঘর পাব। আপনারে কী বলে যে ধন্যবাদ দেব প্রধানমন্ত্রী, আমার ভাষা জানা নেই।
একই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া মৎস্যজীবী জাহাঙ্গীর মাঝি জানান তার কষ্টের গল্প। তিনি বলেন, নিজের বলতে কিছু ছিল না আমার। কোনরকমে একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল। কিন্তু ঝড়ে তা ভেঙে যায়। পলিথিন দিয়ে কোনরকমে জোড়াতালি দিয়েছিলাম। এখন এই ঘর আমার জন্য আশীর্বাদ। নামাজ পড়ে আপনার জন্য দোয়া চাই, যেন দেশের জন্য ভালো কাজ করতে পারেন। আপনি আমাদের মা, দেশের মা। আপনার জন্য দোয়া চাই।
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ভাদীতলা পূর্ব দরগাহপাড়া আশ্রয়ণ গ্রামে ঘর পেয়েছেন হোসনে আরা। প্রতিবন্ধী হওয়ায় এক সময় স্বামী তাকে ফেলে চলে যান। সেই থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, কিন্তু কোনও সহযোগিতা পাননি। অবশেষে আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে কষ্টের দিনের শেষ হচ্ছে তার।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হোসনে আরা বলেন, আপনি প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়েছেন। সংসার নামক জীবন খুব কষ্টের ছিল। আপনার কাছ থেকে ঘর পেয়েছি। আপনার কাছে আমি ঋণী। আপনি হচ্ছেন যোগ্য নেতার যোগ্য কন্যা। আপনার হাতে দেশ থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে।
এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকোরভোগী রবিউল আলম পেশায় জেলে। সারাদিন সাগরে মাছ ধরতেন। ঘর বলতে কোনরকম মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাও পরের জমিতে। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়-বৃষ্টিতে টেনশনে থাকতেন স্ত্রী-সন্তানদের জন্য।
সেই কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার কোনও ঘর ছিলে না। চিন্তা হতো ঝড়-বৃষ্টিতে আমার পরিবার কী করবে? যখন মাছ ধরতাম তখন স্বপ্ন দেখতাম একটা বাড়ি করবো, কিন্তু জমি ছিল না। সেটিই আর করতে পারি নাই। আপনার উপহারে একটি ঘর, জমি পেয়েছি। এখন আমার ছেলে-মেয়ে ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারে। তারা খুব খুশি। আমার স্ত্রী হাস-মুরগী লালন-পালন করে। এখন যখন সাগরপাড়ে যাই, আমার টেনশন হয় না।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মহিষামুড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া ঝালমুড়িবিক্রেতা বাবু মিয়ার কষ্ট আরও নিদারুণ। মা-ছেলে একসাথে কাজ করতেন। কিন্তু দিনশেষে থাকার জায়গা ছিল না। যে খাবার হোটেলে কাজ করতেন কখনো সেখানেই ঘুমাতেন, কখনো ব্রিজের পাশে ঘুমিয়েছেন। বিয়ের পরে মা, স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে মানুষের বাড়িতে থেকেছেন।
সেই দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, যখন ঘর ছিলো না আমরা অনেক কষ্টে ছিলাম। মাথার ওপর ছাদ ছিল না। কত কান্না করেছি। আমার মেয়ে বলতো, বাবা আমাদের কি ঘর হবে না? আমি বলতাম হবে মা, আল্লাহর কাছে দোয়া করো। আমার তো টিন কেনারও যোগ্যতা নাই। আজকে অনেক খুশি আছি।
বাবু মিয়া বলেন, যখন মানুষের বাড়িতে ছিলাম, ওরা শাকসবজি চাষ করতো, আমি চেয়ে চেয়ে দেখতাম। ভাবতাম আমার বাড়ি থাকলে তো আমিও চাষ করতে পারতাম। এখন আমি শাকসবজি চাষ করি। হাস-মুরগী লালন করি। নিজের জমিতে গাছ লাগাই। কখনো চিন্তা করি নাই পাকা বাড়িতে থাকতে পারবো। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে খুশি হয়ে গান শোনান।
উপকারভোগীদের আরেকজন স্বামী হারা মোসা সাহেরুন। ছেলের বই মারা গেছেন। ছেলেও পাগল। ছেলে দুই সন্তানকে তাকেই দেখভাল করতে হয়। কোনও উপার্জন নেই। কষ্টের জীবনে নিজের থাকার জন্য কোনো ঘরও ছিল না। এখন প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জমিসহ ঘর পেয়েছেন।
ঘর পেয়ে নিজের খুশি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘তোমাক জড়ায় ধরে আমি কান্দিত চাই মা। আমার মা বাপ নাই। আমি খুব দুঃখের মানুষ। অনেক কষ্ট করে জীবন কাটি লাগিছে। বয়স হইছে কাজ কাম করি পারি না। কী করি চলবো মা। আমি অনেক কষ্ট থেকে মানুষ। আমার কপালে দুঃখ। তোমার দেওয়া ঘরে অনেক শান্তিতে আছি। ভাতা পাই।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেন তিনি।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পঞ্চম পর্বের দ্বিতীয় ধাপে ১৮ হাজার ৫৬৬টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি হস্তান্তরের পাশাপাশি তিনি ২৬ জেলার সব উপজেলাসহ আরও ৭০টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীন মানুষমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার লালমনিরহাটে ১ হাজার ২৮২টি, কক্সবাজারে ২৬১টি এবং ভোলা জেলায় ১ হাজার ২৩৪টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। নতুন ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত জেলা ও উপজেলা নিয়ে সারা দেশে জেলার মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৫৮টি এবং উপজেলা হলো ৪৬৪টি।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি এবং চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি বাড়ি বিতরণ করেন।
প্রকল্পের আওতায় ভূমি ও গৃহহীন প্রতিটি পরিবারকে দুই দশমিক ৫ শতাংশ জমির মালিকানা দিয়ে একটি আধা-পাকা বাড়ি দেওয়া হচ্ছে, যা স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই হবে। প্রতিটি বাড়িতে দুটি বেডরুম, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং বারান্দা রয়েছে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম পর্যায়ের প্রথম ধাপে মোট ২ লাখ ৬৬ হাজার ১২টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে এবং আগামীকাল আরও ১৮ হাজার ৫৬৬টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহ ও ভূমিহীনদের ঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে, ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন (একটি পরিবারে পাঁচজন ব্যক্তি হিসাবে)।
প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত সারাদেশে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৪ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের প্রায় ৪৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে আশ্রয়ণ এবং অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় পুনর্বাসন করা হয়েছে। শুধুমাত্র আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ৫ লাখ ৮২ হাজার ৫৩ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…