Categories: Bangladesh News

সারা দেশে ‘অজ্ঞাত’ আসামি করে মামলার হিড়িক, হয়রানির শঙ্কা


‘আসামি অজ্ঞাত’— এই শব্দটিতেই মিশে আছে অদৃশ্যমান ভয় আর শঙ্কা। কোনও এলাকায় সৃষ্ট অপরাধকে কেন্দ্র করেই কয়েকজন অভিযুক্তের নাম উল্লেখ থাকলেও অধিকাংশ চলে যায় ‘অজ্ঞাত’র তালিকায়। ফলে অপরাধে সম্পৃক্ততা না থাকলেও সংঘটিত অপরাধের জেরে এলাকাজুড়ে নেমে আসে আতঙ্ক। সাম্প্রতিক দায়ের হওয়া এমন কিছু মামলায় সারা দেশে আতঙ্কে ভুগছেন লক্ষাধিক মানুষ।

মূলত কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নতুন করেই সামনে এসেছে ‘অজ্ঞাতনামা আসামি’র প্রসঙ্গ। আন্দোলনকারীদের দমাতে কিংবা আন্দোলনকে ঘিরে হতাহত-ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের হয়েছে একাধিক মামলায়। সেসব মামলার এজাহারে নাম উল্লেখ করা হয়েছে গুটি কয়েকের। অথচ একই এজাহারে কয়েক হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এদিকে বিগত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ও আদালতে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলাগুলোতেও উল্লেখযোগ্য আসামিদের নামের শেষে হাজার হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে। ফলে থানা কিংবা আদালতে গত ১ মাসে দায়ের করা কয়েক হাজার মামলায় আসামি করা হয়েছে কয়েক লাখ মানুষকে। যাদের অনেকেই এখন ঘর ছাড়া।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় সাভার ও আশুলিয়া থানায় ১১টি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো দায়ের হয়েছে ১২ থেকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে হয়েছে। সেসব মামলায় অজ্ঞাতনামা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও গত ২১ জুলাই রাজধানীর কাফরুল থানার মামলায় ৪ থেকে ৫ হাজার অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীকে আসামি করা হয়েছে। গত ২৩ জুলাই সাভার মডেল থানায় প্রায় পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা চার থেকে পাঁচ হাজার।

এদিকে গত আগস্ট মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং করে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেছে বেসরকারি সংস্থা মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী-এমপি ও দলের নেতাকর্মীর নামে এ পর্যন্ত ২৬৮ মামলা হয়েছে। শুধু শেখ হাসিনার নামেই হয়েছে ১০০ মামলা। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে ২৬ হাজার ২৬৪ জনের। একইসঙ্গে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫৫৫ জনকে।

স্থানীয় সহিংসতায় অজ্ঞাতানামা আসামি হিসেবে গ্রেফতারের ভয়ে আছেন, এমন কয়েকজন (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিগত সরকারের পতনের আগে ও পরে এলাকাতে কয়েক হাজার মামলা করা হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যারা যখন ক্ষমতা পেয়েছেন তারা তাদের মতো করে এসব মামলা করেছেন। হাতেগোনা কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলেও হাজার হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা করা হয়েছে। এতে করে পুলিশকে ধরপাকড়ের নামে নতুন করে বাণিজ্যের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ৫৪ ধারার ক্ষমতাবলে গ্রেফতার দেখিয়ে সেসব অজ্ঞাতনামা আসামিদের তালিকায় নাম দিয়ে দিচ্ছে। ফলে এলাকাজুড়ের যে আতঙ্ক চলছে তাতে পরিবার ছেড়ে এখন পালিয়ে থাকতে হচ্ছে।

স্থানীয় অনেকে প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বিষয়টিও এসব রাজনৈতিক মামলায় নাম যুক্ত করে ফায়দা নিতে চাচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অজ্ঞাতনামা আসামি করার বিষয়টি ঠিক না, আমি আইনজীবী হিসেবে এটি সমর্থন করতে পারি না। একটি বিপ্লবকে কেন্দ্র করে মানুষ খুব অসহনশীল হয়ে পড়েছে। মানুষের যে ক্ষোভ তা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।

তবে এটি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাধা নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘যখন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে তখন স্বাভাবিকভাবেই তাদের বাদ দেওয়া হবে। মূলত আওয়ামী লীগের শাসনামলে আইনের শাসন ছিল না। তারা একেকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভৌতিক মামলা, মৃত মানুষদের নামেও মামলা দিয়েছে। এসব তো এখন আর হচ্ছে না।‘ দেশের বিচার বিভাগ যখন দলীয়করণের বাইরে চলে আসবে এবং সুস্থভাবে চলবে, তখন এ বিষয়গুলো ঠিক হয়ে যাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

‘গত ৫ আগস্টের পর দেশে আইনের শাসন এখন ধীরে ধীরে কায়েম হচ্ছে। আগেতো দেশে কোন আইনের শাসন ছিল না। তাই এসব মামলায় কেউ শঙ্কিত হলে, সেই ব্যক্তি আগাম জামিন নিতে পারেন। এখন অনেকেই আগাম জামিন পাচ্ছেন। এছাড়াও আইনিভাবে মামলাগুলো মোকাবিলা করতে পারেন’, বলেও পরামর্শ দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

মূলত ‘হয়রানি’র উদ্দেশ্যে এসব মামলা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এসব মামলা প্রথম ধাপেই টিকবে না। আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে দেখেছি, এসব মামলা টেকে না। এসব মামলা মানেই একপ্রকার ‘হয়রানি‘ করা। দেশে একটি ট্রেন্ড চালু হয়েছে, কোনও বাসাও যদি ছোটখাটো কোনকিছু চুরি হয়, সেখানে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি দেখানো হয়। সেই অজ্ঞাতনামাদের ভেতর আমাদের যে কাউকে ধরে নিয়ে যেতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদের নামে ধরে আনে মূলত ইনকামের আশায়। এটাকে বন্ধ করতে হবে। বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনার চেষ্টা করবো।

 


👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago