হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক ফ্লাইওভার, ফুট ওভারব্রিজ ও সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস থেকে ইসিবি চত্বর পর্যন্ত অংশে। এগুলোর কারণে বদলে গেছে কালশী এলাকা। প্রতিদিন কোনও ভোগান্তি ছাড়াই চলছে শত শত যানবাহন। তবে আলোর নিচে যেন অন্ধকার কালশীর মোড়ে থাকা অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড। বছরের পর বছর এই স্ট্যান্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হলেও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বরং এই ট্রাকস্ট্যান্ড এখন স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। প্রতিনিয়ত এখানে বাড়ছে ট্রাকের সংখ্যা। দাপট বেড়ে চলেছে অবৈধ দখলদারদের। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘খুশি’ করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে এই অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে মিরপুর ১১ নম্বরের প্রধান সড়ক থেকে সরিয়ে এই ট্রাকস্ট্যান্ডটি কালশীতে নিয়ে আসা হয়। প্রথম দিকে অল্প কিছু ট্রাক এখানে রাখা হতো। তবে বর্তমানে এই স্ট্যান্ডে পাঁচ শতাধিক ট্রাক রাখা হয়। প্রায় অর্ধকিলোমিটার সড়কজুড়ে এই অবৈধ স্ট্যান্ডটি গড়ে তোলা হয়েছে। ১২০ ফুট চওড়া সড়কের দুই-তৃতীয়াংশ অংশ ট্রাকস্ট্যান্ডের দখলে। অভিযোগ রয়েছে, মাসে অন্তত ৮ লাখ টাকা চাঁদা ওঠে এই স্ট্যান্ড থেকে।
কালশী থেকে ডিওএইচএস ও ইসিবি পর্যন্ত অংশে দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ চলে, এসময় বেহাল অবস্থায় ছিল কালশী মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বাউনিয়া বাঁধ এলাকার ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি। ফলে এই পথ দিয়ে যান চলাচল কম ছিল। আর এই সুযোগে এখানে গড়ে ওঠে ট্রাকস্ট্যান্ড। পরে সড়কটি চওড়া করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। দুই পাশের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে দিয়ে ৪০ ফুট রাস্তাটি ১২০ ফুট চওড়া করা হয়। এতে আরও সুযোগ পেয়ে বসে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ডের দখলবাজরা। তাদের দখলে থাকা সড়কে ট্রাকের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
ট্রাকচালকরা জানান, প্রথমদিকে বিক্ষিপ্তভাবে এসব ট্রাক থেকে চাঁদা তোলা হতো। বর্তমানে শ্রমিক সংগঠনের নাম করে চাঁদা তোলার বিষয়টি স্থায়ী রূপ নিয়েছে। মাসিক ভাড়া হিসেবে চাঁদা দিতে হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের পাশেই ‘বাংলাদেশ আন্তজেলা ট্রাক ও মিনি ট্রাকচালক ইউনিয়ন’ নামে অবৈধভাবে একটি পাকা কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। এই স্ট্যান্ডে ট্রাক রাখার শর্ত হিসেবে ইউনিয়নের সদস্য হতে হয়। ভর্তি ফি ৪ হাজার টাকা। আর মাসিক ভাড়া ছোট পিকআপ ভ্যানের জন্য ১২০০ টাকা, মাঝারি থেকে বড় লরির ভাড়া ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। ইউনিয়নের তথ্যমতে, এখানে ২৫০টি ট্রাক রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সরেজমিন আরও বেশি ট্রাক দেখা গেছে। ট্রাকচালকরা জানিয়েছেন, এই সংখ্যা ৫০০টির মতো হবে।
চাঁদার ভাগ পান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও
কালশী অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ডটি ঢাকা-১৬ সংসদীয় আসনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওতায় পড়েছে। এই আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রউফ নান্নু। স্ট্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ আন্তজেলা ট্রাক ও মিনি ট্রাকচালক ইউনিয়নের অফিস ও বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে তোলা চাঁদার একটি অংশ এই দুই প্রতিনিধিও পেয়ে থাকেন।
জানতে চাইলে ইউনিয়ন অফিসে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, সবাইকে দিয়েই এই স্ট্যান্ড টিকে আছে। তা না হলে কি সরকারি রাস্তার ওপর এভাবে বছরের পর বছর স্ট্যান্ড রাখা যায়!
জনপ্রতিনিধিদের নাম ভাঙিয়ে চলছেন কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, খোঁজ নেন। কেউ তো আর তাদের নাম বলবে না। যারা নিয়মিত চাঁদার ভাগ নেয় তারাও অস্বীকার করবে। ভাগ সবাই পায়। এত টাকা ওঠে, কই যায়, কার পকেটে যায়? আমরা কি একা সবার সামনে দিয়ে এই টাকা হজম করতে পারবো? আমরা কে? আমাদের কি কোনও রাজনৈতিক পরিচয় আছে? ক্ষমতা আছে?
অভিযোগের বিষয়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রউফ নান্নু বলেন, ‘আমি এখান থেকে কী সুবিধা নেবো? তারা আমার নাম ভাঙিয়ে সত্যকে আড়াল করে। ট্রাকস্ট্যান্ডটি ওখানকার কিছু লোক পরিচালনা করে। তাদের নাম আমি বলবো না। আমি তো সিটি করপোরেশনের লোক। আমরা নতুন রাস্তা বানাচ্ছি। এই রাস্তা বানাতে কাউকে কোনও সুবিধা দেইনি। আমি নিজে ওই ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে গিয়েছি। এখন কিছু হলেই তারা আমার নাম বলে।’
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে তার মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
নষ্ট হচ্ছে নতুন সড়ক
দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থা থাকার পর কালশী মোড় থেকে বাউনিয়া বাঁধ পর্যন্ত অর্ধকিলোমিটার সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০ ফুট প্রশস্ত সড়কটি নতুন করে ডাবল লেন করা হচ্ছে। সড়কের মাঝে চওড়া আইল্যান্ড রাখা হয়েছে গাছ রোপণ ও পার্ক করার জন্য। ইতোমধ্যে সড়কের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এরপরও সরছে না অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড।
সড়কের সংস্কার কাজ করতে হচ্ছে অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড বহাল রেখেই। সড়কের যে অংশে কাজ শুরু হয়, সেই অংশ থেকে কিছু ট্রাক সরিয়ে অন্যপাশে রাখা হয়। পরে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রাকগুলো আবার আগের জায়গায় রাখা হয়। এভাবে ভোগান্তি নিয়েই ধাপে ধাপে চলছে সড়কের সংস্কার কাজ।
সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তার পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। সড়কের আইল্যান্ড বা মিডিয়ান ঘেরাও দেওয়া অবস্থায় আছে। ফুটপাতে টাইলস বসানোর কাজও শেষ। তবে নতুন লেনের ওপরই রাখা হয়েছে সারি সারি ট্রাক। সড়কের ওপরেই চলছে ট্রাক মেরামত ও ধোয়াসহ বিভিন্ন কাজ। নির্বিচারে সড়কের ওপর ফেলে রাখা হয়েছে ট্রাকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এরইমধ্যে নতুন সড়কের কয়েক জায়গায় জমাট বেঁধেছে কাদামাটি। ফলে নতুন সড়ক চালু হওয়ার আগেই বিভিন্ন অংশ নষ্ট হতে দেখা গেছে।
স্কুলশিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের ভোগান্তি
কালশীর অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্ট্যান্ড ঘিরে বিচরণ করছে বখাটে ও মাদকসেবীরা। তাদের হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে কালশী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কিশোরী শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই স্ট্যান্ডের কারণে বছরের পর বছর ধরে আশপাশের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর থাকে। এই সড়ক দিয়ে এলাকায় প্রবেশ করা কষ্টকর।
দুর্ভোগের বিষয়ে এই সড়কে কয়েকজন পথচারীর সঙ্গে কথা হয়। বাউনিয়া বাঁধ এ ব্লকের বাসিন্দা শিউলি আক্তার বলেন, এ পথ দিয়ে চলাফেরা কঠিন। পুরো রাস্তাজুড়ে থাকে ট্রাক। যেটুকু খালি আছে, তার ফুটপাতে বসানো হয়েছে চায়ের দোকান।
নাজমা নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, আমি এই এলাকায় অনেক বছর ধরে ভাড়া থাকি। ট্রাকস্ট্যান্ডের কারণে জায়গাটা সবসময় নোংরা থাকে। পাশে স্কুল আছে, মেয়ে শিক্ষার্থীদের এ পথে যাতায়াত করতে হয়। তাদের জন্য এ রাস্তা পার হওয়া সমস্যা। সবসময় বাতাসে ভেসে বেড়ায় গাঁজার গন্ধ। বখাটেরা এখানে জটলা করে আড্ডা দেয়। ফলে এ রাস্তা পথচারীদের জন্য মোটেও স্বস্তিকর নয়।
ট্রাকস্ট্যান্ড পরিচালনার ‘খরচ আছে’
অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ডের বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশ আন্তজেলা ট্রাক ও মিনি ট্রাকচালক ইউনিয়নের অফিসে গেলেও সভাপতি আবুল হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও কল রিসিভ করেননি।
কালশীর ‘বাংলাদেশ ট্রাক ও মিনি ট্রাকচালক ইউনিয়নের’ সভাপতি আবুল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ট্রাকস্ট্যান্ড পরিচালনার জন্য খরচ আছে। সেজন্য গাড়িপ্রতি মাসে ৮০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। কিন্তু কোনও ধরনের ভর্তি ফি নেই। তবে নতুন গাড়ির মালিকদের কাছে গিয়ে কেউ কেউ বলে— আবুল ভাই আমার পরিচিত, তোকে ভর্তি করিয়ে দেই, দুই-তিন হাজার টাকা দিস। এগুলো ট্রাক ড্রাইভার ও স্টাফদের পুরনো খাসলত।
চাঁদার টাকা কী কাজে ব্যয় হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সার্জেন্ট পুলিশদের মাসোহারা হিসাবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা করে দিয়ে থাকি। এছাড়াও অন্যান্য খরচ রয়েছে। এখানে লুকানোর কিছু নাই।’ তবে নিয়মের বাইরেও কিছু চাঁদাবাজি হচ্ছে, কিন্তু সেই টাকা তার কাছ পর্যন্ত আসে না বলে জানান আবুল হোসেন।
ট্রাকস্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন ও গণপূর্ত অধিদফতরের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছিল জায়গা দেবে। কিন্তু কবে দেবে, কীভাবে দেবে, সেটা তারা বলেনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অবগত হলাম। খুব দ্রুত ট্রাকস্ট্যান্ডটি উচ্ছেদে অভিযান চালানো হবে।’
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
Within the Cloud Cultures sequence, leaders from 12 totally different international locations share how they’re…
Posted by Matthew McCullough – VP of Product Administration, Android Developer The second developer preview…
India's main telecom operators have reportedly criticised the Telecom Regulatory Authority of India's (TRAI) new…
WASHINGTON — NASA chosen 4 corporations to supply communications providers in Earth orbit and out…
Former President Donald Trump sharply criticized President Joe Biden on December 24 for commuting the…
- Commercial - What if you happen to may see how stretchable electronics deform in…