Categories: Bangladesh News

সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের


সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৮ সালের কোটা বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের এ রায়ের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩ জুলাই) বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে তারা এসব কর্মসূচি পালন করে। রাইজিংবিডির সংবাদদাতাদের খবরে থাকছে বিস্তারিত-

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিক্ষোভ মিছিল ও বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ অবরোধের ফলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় সড়কের দু’পাশে হাজার হাজার যানবাহনকে ইঞ্জিন বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

অবরোধ চলাকালে গুগল ম্যাপে ঢাকাগামী রাস্তায় চন্দ্রা পর্যন্ত এবং আরিচাগামী রাস্তায় হেমায়েতপুর পর্যন্ত যানজটের তথ্য পাওয়া যায়। যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। অসংখ্য যাত্রীকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে পথ পাড়ি দিতে দেখা যায়। তবে যানজটে পড়া একটি অ্যাম্বুলেন্সকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল হাইকোর্টের রায় ছাত্র সমাজের বিরুদ্ধে গেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, অবরোধ চলাকালে ঢাকাগামী সড়কে গাড়িবহরসহ আটকে পড়েন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। সাভারের হেমায়েতপুরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় অংশ নিতে যাচ্ছিলেন বলে জানান তার অনুসারীরা। এসময় তার অনুসারীরা গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে শিক্ষার্থীরা অস্বীকৃতি জানায়। এরপর তিনি কিছুক্ষণ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের ভিতরে অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে প্রায় আধা ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা শেষে বের হয়ে কিছুদূর হেঁটে গিয়ে আরেকটি গাড়িতে করে প্রস্থান করেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘বায়ান্নোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথা কবর দ ‘. ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই, মেধা ছাড়া চাকরি নাই’, ‘মেধাবীদের মেরে ফেলেন, নয়তো কোটা বাতিল করেন’, ‘নিপাত যাক নিপাত যাক, কোটা প্রথা নিপাত যাক’, ‘বৈষম্যের ঠাঁই নাই, লাখো শহিদের বাংলায়’, ‘মেধা নাকি কোটা, মেধা মেধা’, ‘মানতে হবে মানতে হবে, আমাদের দাবি মানতে হবে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, জাবি জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না, আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত চারদফা দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

অবরোধে অংশ নেয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ সিফাত বলেন, আজকে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের আগমন ঘটেছে একটি যৌক্তিক দাবিতে। এ দাবি পূরণ না হওয়ার পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকবে। বাংলার ছাত্র সমাজ জেগে উঠেছে। ২০১৮ সালের রায় যদি পুনর্বহাল না রাখা হয়, তাহলে আমাদের আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। বাংলার ছাত্র সমাজকে দমিয়ে রাখা যাবে না।

অন্যদিকে, অবরোধ চলাকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সাভার হাইওয়ে থানা ও আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল। তবে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় যায়নি পুলিশ।

সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, অবরোধের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দূর্ভোগের কথা ভেবে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

মহাসড়ক অবরোধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, আমরা সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ করেছি, যাতে তারা সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি খেয়াল রাখে। তবে এটা জাতীয় ইস্যু, শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)
কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে বাকৃবির সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা। কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কে.আর. মার্কেট হয়ে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। মিছিল চলাকালে তাদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে মিছিল শেষে মুক্তমঞ্চের সামনে একটি প্রতিবাদ সভা করেন তারা।

প্রতিবাদ সভা শেষে সেখান থেকে আব্দুল জব্বার মোড় পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি আব্দুল জব্বার মোড়ে পৌঁছালে ওই সময় ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে দুপুর ১টা ২০ মিনিট থেকে ২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত রেললাইন অবরোধ করে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধ শেষে শিক্ষার্থীরা রেললাইন থেকে সরে গেলে ট্রেন চলাচল সচল হয়।

বাকৃবি মেডিসিন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মাশশারাত মালিহা বলেন, কোটা বাতিলে ছয় বছর পরে একই দাবিতে আবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এটাকে কি দেশের উন্নতি বলা যায়? ঘুরেফিরে আমরা ছয় বছর পিছিয়েই রইলাম। মুক্তিযোদ্ধা কোটা যদি থাকবেই তাহলে ৭১-এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রাণত্যাগ অর্থহীন হয়ে যায়। আমরা আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রায়ই বলে থাকি, তাদের তো মুক্তিযোদ্ধা কোটা আছে। চাকরি পেতে তাদের তো মেধার দরকার নেই। এর মাধ্যমে কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরই প্রতিনিয়ত অবমাননা করা হচ্ছে। আমরা দেশের বীরদের অবশ্যই সম্মান করব। তবে কোনো ধরনের কোটা বৈষম্য আমরা মেনে নিবো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, চাকরিতে নিয়োগ এবং অন্যান্য সব প্রতিযোগিতায় আমরা মেধার শতভাগ মূল্যায়ন চাই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)
হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের প্রতিবাদে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার অবরোধ করেন জবি শিক্ষার্থীরা। দুপুর আড়াইটায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কাঁঠালতলা থেকে শুরু হয়ে বাংলাবাজার মোড়, রায়সাহেব বাজার হয়ে তাঁতিবাজার মোড়ে এসে রাস্তা অবরোধ করে।

শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধের সময় পুরো পুরান ঢাকা অচল হয়ে পড়ে, শুরু হয় তীব্র যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। সদরঘাটগামী গাড়িগুলো আটকা পড়ে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এদিকে অবরোধ চলাকালে বৃষ্টি শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে দেখা যায়। এসময় তাদের ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, জেগে উঠো আরেকবার’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথায় কবর দে’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে।
 
অবরোধ চলাকালে শাহীনুর ইসলাম সান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য একটি পরিপত্র জারি করেছিল সরকার। সম্প্রতি হাইকোর্ট বাতিল করেছে, আমাদের সেটি পুনর্বহাল করতে হবে।

আন্দোলনরত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জসীম উদ্দিন বলেন, সব ধরনের কোটা বাতিল করা আমাদের দাবি। তবে সরকার চাইলে শুধু প্রতিবন্ধী কোটা ১-২ শতাংশ রাখতে পারে। কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে কোটা বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে মিছিলটি নিয়ে তারা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে গিয়ে প্রতিবাদী সমাবেশের আয়োজন করে।

বিক্ষোভ মিছিলে ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’,  ‘১৮ এর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’, ‘সংবিধানের মূল কথা, সুযোগের সমতা’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’ স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বিদ্যমান। এ বৈষম্যের জন্য কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম? আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। এবার আমরা যুদ্ধে নেমেছি এ বৈষম্য দূর করার জন্য। আমরা যদি এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে না তুলি তাহলে ভবিষ্যতে বারবার এরকম বৈষম্যমূলক নীতি আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য একটি পরিপত্র জারি করেছিল সরকার। সম্প্রতি হাই কোর্ট তা বাতিল করায় বিক্ষোভ প্রকাশ ও পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago