Categories: Bangladesh News

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা


প্রায় দেড় মাস ধরে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে সব কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থা চলছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বর্তমান প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেছেন। গত সপ্তাহ থেকে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা হলে ফিরতেও শুরু করেছেন। তবে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এই অচলাবস্থা কাটছে না বলে জানালেন শিক্ষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। তবে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আচার্য ও রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা পাওয়ার পর শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে শিক্ষকদের মাঝে দলাদলি এবং গ্রপিং। প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনের কেউ না থাকায় ৯০০ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি মাসের বেতন এখনও পাননি। সেইসঙ্গে একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ আছে। নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট কাটছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

এদিকে, জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনের জন্য ডিন কমিটির সভায় নিয়োগ পাওয়া সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোরশেদ হোসেন যোগদানের একদিন পরই পদত্যাগ করেছেন। ফলে নতুন করে কাউকে এই পদের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দফতর সূত্রে জানা গেছে, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার পদত্যাগ করায় একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ আছে। এ অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো পত্র অনুযায়ী, জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনের জন্য ডিনস কমিটি বসে একজন সিনিয়র শিক্ষককে দিয়ে এই দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়। সেই আলোকে ডিনস কমিটি ১ সেপ্টেম্বর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেনকে জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এই নিয়োগের বিরোধিতা করেন। নিয়োগ বাতিলের দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন। এ অবস্থায় যোগদানের পরদিন ২ সেপ্টেম্বর মোরশেদ হোসেন পদত্যাগ করেন। 

এ ব্যাপারে জানতে অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেনকে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি। এজন্য তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডিনস কমিটি, শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা একাধিক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনের জন্য প্রাথমিকভাবে চার শিক্ষকের নাম এলেও ডিনস কমিটি, শিক্ষক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের পছন্দ-অপছন্দের কারণে কাউকে নিয়োগ দেওয়া যায়নি। ফলে ডিনস কমিটির সভায় মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ওই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে না। এজন্য ৯০০ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি মাসের বেতন পাননি। উপাচার্য নিয়োগ না পাওয়া পর্যন্ত বেতন পাওয়া যাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেছেন, ‘এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনও নেতা নেই। আবার সবাই নেতা। তারা একবার এক সিদ্ধান্ত নেয়, আরেক পক্ষ আরেক সিদ্ধান্ত দেয়। আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিলে একপক্ষ সমর্থন করলে আরেক পক্ষ বিরোধিতা করে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হাবিবুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নুরুল্লাহ বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য যেতে স্কলারশিপের সব কাগজপত্র তৈরি করে রাখলেও উপাচার্যের দায়িত্বে কেউ না থাকায় তাদের বিদেশে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। একইভাবে একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে শুরু করে সব কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থা চলছে। প্রক্টর না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। হলগুলোতে প্রভোস্ট না থাকায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। সবকিছু স্থবির আছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসনিমা আক্তার, সাব্বির রহমান ও আবদুল মুত্তালিব জানিয়েছেন, কোরবানির ঈদে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনও ক্লাস হয়নি। এরই মধ্যে চলেছে শিক্ষকদের পেনশন স্কিম বাতিলের আন্দোলন, এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন, তারপর এলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং সরকারের পতন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় ক্লাস শুরু হচ্ছে না। ফলে আবারও সেশন জটের কবলে পড়তে হবে। এই অচলাবস্থা কবে কাটবে, জানা নেই কারও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন জরুরি ভিত্তিতে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে সমস্যার সমাধান হবে না। দিন দিন সংকট আরও বাড়বে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনের জন্য ডিনস কমিটি এক শিক্ষককে নিয়োগ দিলেও পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। ফলে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এই অচলাবস্থা কাটবে বলে মনে হচ্ছে না।’


👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago