রাসেলস ভাইপারের পর এবার এক ধরনেরর স্থলচর শামুক নিয়ে কিশোরগঞ্জে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ‘কৃষি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর’ এমন গুজব ছড়িয়ে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে এগুলো। আফ্রিকান জায়ান্ট নামে পরিচিত শামুকটি মেরে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগও। ফলে প্রতিদিনই হত্যার শিকার হচ্ছে।
তবে পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আফ্রিকান জায়ান্ট শামুকের খারপের চেয়ে ভালো গুণ অনেক বেশি। জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি এটি ঘিরে রয়েছে বিশাল বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। ফলে ধ্বংস না করে কাজে লাগাতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাড়াইল ও হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় শামুকগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে। বাসাবাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়েছে এগুলো।
গত শুক্রবার তাড়াইল সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানের পেছনের দেয়াল, স্যাঁতসেঁতে জায়গা ও বিভিন্ন গাছপালায় ঝুলে আছে বড় বড় শামুক।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দিনের বেলায় দেয়ালে, ঘরের টিনে, গাছে ও নানা জায়গায় দলবেঁধে লুকিয়ে থাকে এগুলো। বের হয় রাতের বেলায়। হানা দেয় বাসাবাড়ি, দালানকোঠা, বাগান ও ক্ষেত-খামারে। এমনকি গাছের মাঝেও ঝুলে থাকে। ফসল ও বাগানও নষ্ট করছে।’
বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় কৃষক আলিউর রহমান এসব শামুক অপসারণের কাজ করছেন। তিনি একটি বালতিতে এগুলো সংগ্রহ করছেন। তিনি বলে, ‘এগুলো পরিবেশ, ফসল, ঘরের আসবাবপত্র এবং দেয়ালের জন্য ক্ষতিকর। সড়কে অবস্থান নিলে ছোট যানবাহনের জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়। ফলে যে যেভাবে পারছে, এগুলোকে মেরে ফেলছে। আমিও এগুলোকে মেরে ফেলবো।’
তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, স্থলচর শামুকটিকে স্থানীয় লোকজন উপদ্রব ভেবে নির্বিচারে মেরে ফেলছে। অতি বৃষ্টির সময় পাকা ভবনের দেয়াল বেয়ে ওপরে উঠে আশ্রয় নেয়, ভবনের জন্যও এটি ক্ষতিকর। এর মাংস খুব বেশি শক্ত হওয়ায় পশু-পাখিরাও খেতে চায় না। ফলে পিষে মারতে হয়।
তাড়াইল বাজরের পাটপট্টি, খাদ্যগুদাম ও মাখনাপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নারীরা এসব শামুক ধরে লবণপানি ও ডিটারজেন্ট দিয়ে মেরে ফেলছে।
খাদ্যগুদাম এলাকার স্কুলশিক্ষিকা ঝরনা রানী সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার সবজি বাগানের সবগুলো গাছের পাতা খেয়ে ফেলেছে এই শামুক। স্কুলের বেঞ্চ, টেবিল, দেয়ালে বসে থাকে। গাছের নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত জড়িয়ে থাকে। শিশুরা ভয় পায়। শুধু তাই নয়, বইপত্র এমনকি কাগজপত্র খেয়ে ফেলে।’
মাখনাপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তি জানালেন, তিন মাসে তার ৩০টি পেঁপে ও ২৫টি আমের চারা খেয়ে ফেলেছে এই শামুক। তাই এগুলো চোখে পড়লেই ধ্বংস করে দিচ্ছেন তিনি।
এ অবস্থায় গত ২৩ জুন অতিষ্ঠ লোকজনের পক্ষে করণীয় জানতে স্থানীয় কৃষি অফিসে লিখিত আবেদন করেছে ‘অরণ্য’ নামে একটি পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এগুলো আফ্রিকান জায়ান্ট। তাদের দাবি, এসব শামুক পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও কৃষির জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটি ছড়িয়ে পড়লে হুমকির মুখে পড়বে কৃষি ব্যবস্থা। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শ চেয়েছে তারা।
সংগঠনের সভাপতি জেনাস ভৌমিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই শামুকের যন্ত্রণায় ঘরে থাকা যাচ্ছে না। সবজি জাতীয় গাছ ও বিভিন্ন চারা গাছের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করছে। বাড়িঘরের দেয়াল পর্যন্ত বিনষ্ট করছে। শুধু তাড়াইল নয়, হোসেনপুর উপজেলাতেও ছড়িয়ে গেছে। সেখানকার লোকজনও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।’
তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা শামুকটিকে আফ্রিকান জায়ান্ট বলে উল্লেখ করেছেন। এটি ক্ষতিকর দাবি করে তিনি বলেন, ‘এর উপদ্রব নিয়ে উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনা করেছি আমরা। যেন ছড়িয়ে না পড়ে, সে লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।’
কৃষি কর্মকর্তা এটিকে কৃষি ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বললেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন উল্টো কথা। তারা জানালেন, এই শামুক মোটেও ক্ষতিকর নয়; বরং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ও পরিবেশের জন্য সহায়ক।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে শামুকটি। ওই সময়ে এর সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু বাগান ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়। জানাশোনা ও গবেষণা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও এটিকে ক্ষতিকর আখ্যা দিয়ে ধ্বংসের কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি আফ্রিকান জায়ান্ট ল্যান্ড স্নেইলস। তখন এসব নিয়ে দেশে গবেষণা না থাকায় এটিকে ধ্বংসের কথা বলা হয়েছিল। পরে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে দীর্ঘদিন বিস্তর গবেষণা করেছি আমরা।’
গবেষণায় দেখেছি এই শামুক মোটেও ক্ষতিকর নয়; বরং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ও পরিবেশের জন্য সহায়ক উল্লেখ করে ড. এম এ সালাম বলেন, ‘এই শামুকের মাংস খুবই মূল্যবান। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশ্বের অনেক দেশে এর লালা থেকে তৈরি পাউডার উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়। আফ্রিকায় এই শামুকের খামার আছে। আমাদের দেশে এটি হতে পারে লাভজনক বাণিজ্যিক খাত। কাজেই গুজবে কান দিয়ে এগুলো ধ্বংস করা যাবে না। পরিকল্পিতভাবে এগুলোর চাষাবাদ বাড়ানো দরকার। এতে লাভ আছে।’
আফ্রিকান এই শামুক ধ্বংস না করে বাগান কিংবা গাছপালা রক্ষা করাও সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক সালাম। এটিকে ধ্বংস বা মেরে ফেললে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের কোনও উপকার হবে না। বরং এমন কর্মকাণ্ড বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এ বিষয়ে বন ও কৃষি বিভাগের বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভূমিকা রাখা জরুরি।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…