রাজশাহীতে শেষ মুহূর্তে ঈদ ও পহেলা বৈশাখের পোশাকের বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে। রাত-ভোর চলছে কেনাকাটা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসেও স্বস্তির বার্তা নেই রাজশাহীর স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মাঝে। কেননা বিদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতার কাছে অসহায় হয়ে গেছে দেশীয় পণ্য। আর এতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাজশাহীর স্থানীয় ক্ষুদ্র, মাঝাড়ি ও বড় উদ্যোক্তাদের কপালে।
উদ্যোক্তারা বলছেন, অন্য সময়ের চেয়ে ঈদ বাজারে কিছু প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু এবার সে প্রত্যাশায় গুড়েবালি। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার বেচাবিক্রি কমেছে। অনেকে খরচের টাকাও তুলতে পারছেন না।
উদ্যোক্তারা আরও বলছেন, দেশীয় পণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে। আর এবারের ঈদে রাজশাহীর মার্কেটে ভারতীয় ও পাকিস্তানি পণ্যের আধিক্য সবচেয়ে বেশি। একারণে উদ্যোক্তাদের বেচাবিক্রি আরও কমেছে।
উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব) রাজশাহীর তথ্যমতে, প্রায় ৫০০ জন রাজশাহীর স্থানীয় পোশাক উদ্যোক্তা রয়েছেন। এরমধ্যে বড় উদ্যোক্তা রয়েছেন প্রায় ২০ জন, মাঝারি ২০০ জন এবং বাকিরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।
সংশ্লিষ্টদের তথ্য বলছে, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সাধারণ ঋণ নিয়ে ছোট পরিসরে কাজ করে থাকে। ঈদ ও বৈশাখের মতো উৎসবকে সামনে রেখে তারা স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু এবার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কেনাবেচা খুবই কম।
রাজশাহী নগরীর নুসরাত ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী উদ্যোক্তা রুপা মোস্তফা জানান, তার সিরাজগঞ্জে তাঁত আছে। তিনি মূলত থ্রি-পিস, লুঙ্গিসহ মূল চারটি দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করেন। প্রতি ঈদেই তার একটা ব্যবসায় টার্গেট থাকে। এবারও ছিলো। কিন্তু এবার টার্গেট পূরণের ধারে কাছেও নাই।
আরেক উদ্যোক্তা শারমিন সুলতানা বলেন, আমি অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই বিক্রি করে থাকি। গত বছরও ঈদে চার লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত দুই লাখ টাকা ছুঁতে পারিনি। ক্রেতাই তো নাই!
রাজশাহী নগরীর আরেক নারী উদ্যোক্তা রাহি বুটিকের সত্ত্বাধিকারী সায়মা খাতুন বলেন, অন্য বছরগুলোতে ঈদে অন্তত তিন লাখ টাকার বেচাবিক্র হয়। এবার এখন পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার বিক্রি হয়েছে। ক্রেতা তেমন নেই। আসলে ঈদের বাজার পাকিস্তানি ও ভারতীয় পোশাক দখলে নিয়েছে। মানুষও ওই পণ্যই বেশি কিনছেন।
রাজশাহী নগরীর সবচেয়ে অভিজাত থিম ওমর প্লাজায় শো-রুম নিয়ে ব্যবসা করেন উদ্যোক্তা নিলুফা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, ঈদ কেন্দ্রীক তার প্রায় ৭-৮ লাখ টাকার বেচাবিক্রি হয়। কিন্তু এবার এর ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারিনি। গত বছরও মোটামুটি বিক্রি হয়েছিলো। আসলে বাজারে পাকিস্তানি পোশাকের আধিক্য বেশি। এবার খরচ বাদে লাভের মুখ দেখতে পাইনি।
উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব), রাজশাহীর সভাপতি আঞ্জুমান আরা পারভীন ওরফে লিপি বলেন, মানুষ ঈদ বাজারে ব্যতিক্রমি পোশাক কিনতে চায়। যার কারণে দেশীয় পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ খুবই কম থাকে। যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে, ঈদ বাজারে আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বেচাবিক্রি তেমন হচ্ছে না। উৎসবে ব্যবসায়ের এমন চিত্রে উদ্যোক্তারা আশাহত।
অন্যদিকে রাজশাহীর অভিজাত নারীদের কেনাকাটায় বহু ধরনের পোশাক থাকলেও তালিকায় একটি হলেও সিল্কের পোশাক থাকবেই। পাঞ্জাবি, শাড়ি কিংবা রেশম কাপড়ে তৈরি থ্রিপিস কিংবা অন্য কোনও পোশাক যেন চাই-ই চাই। শেষ মুহূর্তে তাই জমে উঠেছে রাজশাহীর সিল্কের বাজার।
বিসিক নগরীর সিল্ক শোরুমগুলোতে এখন সকাল হলেই ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। ভিড় থাকছে গভীর রাত পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুরো বছরই কেনাকাটা হয়। তবে দুই ঈদে বেচাকেনা সবচেয়ে বেশি। যে কারণে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। ক্রেতাদের পোশাকে বৈচিত্র্য আনতে নতুন কিছু দেওয়ার প্রয়াস চালান ব্যবসায়ীরা।
সপরিবারে সিল্কের পণ্য কিনতে এসে কলেজ শিক্ষক তাজবুল হক বলেন, মেয়ের জন্য জামা ও স্ত্রীর জন্য থ্রিপিস নেবো। নিজের জন্য পাঞ্জাবি নেবো। ঈদের কেনাকাটায় সিল্ক ছাড়া তো জমে উঠে না। তাই প্রতিবারই সিল্ক থেকেই নেওয়া হয়।
ঈদের কেনাকাটা করতে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, রাজশাহী সিল্ক ঐতিহ্যবাহী। সিল্কের কদর সারাদেশেই আছে। ঈদে সিল্ক বাদে অন্য কিছু নিয়ে চিন্তাও করা যায় না। তাই প্রতিবার ঈদে সিল্কের শাড়ি কেনা হয়। এগুলো সব সময় পরা যায়। এটি বেশ আরামদায়ক কাপড়।
সপুরা সিল্ক মিলস লিমিটেডের শোরুমের ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষে শেষ মুহূর্তে তাদের শোরুম জমে উঠেছে। রমজানের শুরু থেকে বিক্রি শুরু হলেও এখনই ভিড় বেশি। সকাল থেকেই শোরুমে ক্রেতার সমাগম ঘটছে। আর ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ক্রেতারাও আসছেন। বিক্রি ভালো চলছে। এবারের আমাদের লক্ষ্য ২০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করা। এ কয়েকদিনে আমার লক্ষ্যে পূরণ হয়ে যাবে।
রাজশাহী সিল্ক ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী আবদুল কাদের মুন্না জানান, অন্যান্য ঈদের মতো এবারও ব্যবসা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, থ্রি-পিস, শার্টসহ বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে। বলাকা, মক্কা, কাতান, ছিপ কাতানসহ বিভিন্ন নামের শাড়ি ২ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। এছাড়া পাঞ্জাবি ৫০০ থেকে ৭ হাজার, শেরওয়ানি ৮ থেকে ২৫ হাজার, থ্রি-পিস ১ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।
এছাড়া সিল্কের থ্রি-পিস, হিজাব, ওড়না, স্কার্ফ ও মসলিন, মটকা, তসর কাতান, বলাকা কাতান, সাটিং সিল্ক ও এনডি প্রিন্টের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পছন্দের পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে কিনছেন জুতা। ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী জুতা সরবরাহ করতে রাত দিন সমান তালে কাজ করে যাচ্ছেন দোকানিরা। নগরীর শো-রুম থেকে শুরু করে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, সর্বত্রই ক্রেতাদের প্রচুর ভিড়। অন্যান্য ইদ পণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই সকাল থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পাদুকা দোকানীর। দোকানগুলোতে বিক্রয় কর্মীদের দম ফেলার সময় নেই। হাঁক-ডাক ও দাম দরে জমে উঠেছে বেচাকেনা।
ক্রেতা আশফাক চৌধুরি বলেন, এবারের ঈদে প্রতিটি পণ্যেরই দাম বেড়েছে। ইদে নগরীর জুতা দোকানে রং-বেরঙের ডিজাইন থাকে। কিন্তু দাম বেশি।
ক্রেতা চৈতি রাণী জানান, শোরুমগুলোতে বেশি দামের কারণে ঘুরে এসেছি। এখন নরমাল দোকানগুলোতে যাচ্ছি। কিন্তু এখানেও স্বস্তি নেই। তবে যেহেতু ঈদ। জুতা তো কিনতেই হবে।
নগরীর বাটার মোড় এলাকার মিডলি নিবেদিতা শো-রুমের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদে প্রতিবছরই বেচাবিক্রি ভালো হয়। এবারও বেশি। তবে দাম খুব বেশি বাড়েনি।
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…