৩১ আগস্ট সন্ধ্যা। বরিশালের কোতোয়ালি থানা। তুচ্ছ একটি ঘটনার জের ধরে একদল কিশোর হঠাৎ থানায় ঢুকে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। পুলিশ সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতে থাকে তারা। থানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। কিশোর দলের সদস্যরা থানার একটি পিকআপ ও সরকারি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এরপর তারা থানার অভ্যর্থনা কক্ষেও ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এরইমধ্যে থানা পুলিশ খবর দেয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের। সেনাবাহিনী থানায় এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে কিশোররা জানায়, প্রতিপক্ষ একটি দলের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাদের কয়েকজন সদস্য মারধরের শিকার হয়। সেসময় পুলিশকে ফোন দিলেও তারা সহযোগিতা করেনি।
পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সবচেয়ে ‘নাজুক’ পরিস্থিতিতে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে গিয়ে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের কারণে সাধারণ মানুষের তীব্র ক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশের অন্তত চার শতাধিক থানায় হামলার ঘটনাও ঘটে। সিরাজগঞ্জের একটি থানাতেই সাধারণ মানুষ হামলা চালিয়ে ১৩ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।
তারা আরও মনে করছেন, বাংলাদেশ পুলিশ এর আগে এমন নাজুক পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনোই হয়নি। থানায় এসে কারও ভাঙচুর এবং তা নিয়ন্ত্রণে সেনা সদস্যদের ডাকার ঘটনা এই প্রথম।
সরকার পতনের পর প্রথম কয়েক দিন পুলিশ সদস্যদের ‘চরম আতঙ্ক’ নিয়ে রীতিমতো পালিয়ে ও আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে। বর্তমানে সবাই দায়িত্ব পালন করলেও পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ভয় ও অস্বস্তি এখনও কাটেনি। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও এখনও পুলিশ তাদের কার্যক্রম শতভাগ চালু করতে পারেনি।
পুলিশের এই সংকটময় অবস্থার মধ্যেই ৪ সেপ্টেম্বর থেকে যৌথ অভিযান চালু করতে যাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশের এই অভিযানে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। যদিও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন থানায় হামলা চালিয়ে লুট করে নেওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য এই অভিযান চালানো হচ্ছে, কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন– অভিযানের মাধ্যমে পুলিশের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশকে আরও বেশি কার্যকর করা হবে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় যৌথ অভিযানটা হচ্ছে শুধু অস্ত্র উদ্ধারের জন্য। একইসঙ্গে পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করা হচ্ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। নতুন যেসব পুলিশ সুপাররা দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের হেডকোয়ার্টার্স থেকে একটা ব্রিফিং দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশের এই মুখপাত্র বলেন, ‘অনেক থানা বা ফাঁড়ি পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেসব জায়গায় কোনোভাবে দৈনন্দিন কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। এজন্য দৃশ্যমান যেসব পুলিশি কার্যক্রম, যেমন- প্যাট্রলিং বা চেকপোস্ট চালু করতে সময় লাগছে। খুব শিগগিরই পুলিশ শতভাগ স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসবে।’
পুলিশের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম এখনও পর্যন্ত থানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। থানায় কেউ অভিযোগ বা মামলা করতে গেলে তা নেওয়া হচ্ছে। দিনে বা রাতে কোনও প্যাট্রল বা টহল ডিউটি দেওয়া হচ্ছে না। মাদকবিরোধী অভিযান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। মেট্রোপলিটন এলাকায় ট্রাফিক বিভাগ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছে। তবে ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও মামলা দিচ্ছে না।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অতি উৎসাহী কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার জন্য আজ এই অবস্থা হয়েছে। মানসিকভাবে পুলিশ ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এছাড়া পুলিশের নিম্ন পর্যায়ের সদস্যদের বিরুদ্ধেও একের পর এক মামলা হচ্ছে। এ কারণে সবাই একটা ভয় এবং আতঙ্ক নিয়ে দিন পার করছেন।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধেও থানায় মামলা হয়েছে। অথচ তিনি শুধু ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা পালন করেছেন। এখন তিনি বুঝতে পারছেন না অফিস করবেন, নাকি পালিয়ে থাকবেন। এরকম দোদুল্যমান অবস্থায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তো কাজও করা যাচ্ছে না।’
চালু হয়নি প্যাট্রল ডিউটি ও চেকপোস্ট
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপ হলো ক্রাইম প্রিভেনশন বা অপরাধের আগাম প্রতিরোধ। এজন্য সারা দুনিয়াতেই পুলিশের প্যাট্রল ডিউটি এবং চেকপোস্ট স্থাপন একটি সাধারণ বিষয়। কিন্তু সরকার পতনের প্রায় এক মাস পার হতে চললেও এখনও রাতে প্যাট্রল ডিউটি ও চেকপোস্ট চালু করা যায়নি। প্যাট্রলিং ও চেকপোস্টের মাধ্যমে সাধারণ অপরাধ বা চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই প্রতিরোধ করা হয়। একইসঙ্গে প্যাট্রলিং বা চেকপোস্ট থাকলে নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ তৈরি হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, থানায় থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের কারণে পুলিশের যানবাহনগুলো আংশিক বা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যানবাহন ছাড়া প্যাট্রলিং করা সম্ভব নয়। এছাড়া রাতের বেলা চেকপোস্ট স্থাপন করার মতো অবস্থাও এখনও তৈরি হয়নি।
বদলি-পদায়ন নিয়ে অস্থিরতাও কারণ
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পটপরিবর্তনের পর একদিকে যেমন নাজুক অবস্থায় পড়েছে পুলিশ, সেই সঙ্গে আগের সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে বেশিরভাগ দায়িত্বশীল জায়গায় কর্মরত কর্মকর্তারা বদলি-পদায়ন নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। ফলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ বা স্বাভাবিক পুলিশি কার্যক্রম চালু করতে তাদের মধ্যেও আগ্রহ নেই। এরইমধ্যে পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে যোগ দিয়েছেন নতুন কর্মকর্তারা। মঙ্গলবারও (৩ সেপ্টেম্বর) ২৬ জেলার পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পুলিশের আরও সময় লাগবে। পুলিশ সম্পর্কে মানুষের অনেক বেশি নেতিবাচক ধারণা জন্ম নিয়েছে। এজন্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে যেকোনও অপরাধ বা আইনের ব্যত্যয় ঘটলে ঠান্ডা মাথায় আইন প্রয়োগ করতে হবে। যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় কাজ করলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে।
আরও পড়ুন-
রাজধানীর থানায় থানায় হামলা-অগ্নিসংযোগ
ঢাকাসহ সারা দেশে ৬২৮ থানার কার্যক্রম শুরু
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…