Categories: Bangladesh News

যে কারণে জোটের ওপর ভর করতে হচ্ছে মোদিকে


আরও একবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার। গতকাল মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ফল মোদির দল বিজেপি এককভাবে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেলেও তাদের এনডিএ তিন শ আসনও ছুঁতে পারল না। প্রবলভাবে উঠে এল কংগ্রেসের উদ্যোগে গড়া ‘ইন্ডিয়া’ জোট।

টানা এক দশক পর তারা মোদির বিজেপির একদলীয় শাসনের অবসান ঘটাল। সরকার গড়লেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে এখন থেকে হতে হবে পরমুখাপেক্ষী। তাঁর ঘাড়ে প্রতিনিয়ত শ্বাস ফেলবে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া।

ভারতের নির্বাচন কমিশন ও গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ২৮৬ আসন পেয়েছে। ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২০২টি আসন। বিজেপি একা সরকার গঠনের জন্য ২৭২ ম্যাজিক ফিগারের কাছে পৌঁছাতে ব্যর্থ। দলটি পেয়েছে ২৪০ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯টি। এর অর্থ, বিজেপিকে সরকার গড়তে হলে নির্ভর করতে হবে প্রধানত দুই শরিক নীতীশ কুমারের জেডি–ইউ ও অন্ধ্র প্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর দল তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) ওপর। এই দুই দলের সম্মিলিত আসন ২৮টি।

কংগ্রেস স্বভাবতই এই ফলে উৎফুল্ল। গতকাল বিকেলে দলীয় দপ্তরে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে পাশে নিয়ে সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই ফল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক ও নৈতিক পরাজয়। গোটা নির্বাচনটাই বিজেপি লড়েছিল মোদির নামে। যাবতীয় গ্যারান্টিও দিয়েছিলেন মোদি। এটা ছিল তাঁর পক্ষে অথবা বিপক্ষের গণভোট। জনতা তাঁর বিরুদ্ধেই মত দিয়েছে।

খাড়গে ও রাহুল দুজনেই জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে আজ বুধবার। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। ওয়েনাড ও রায়বেরিলি, দুই জেতা আসনের কোনটি রাখবেন কোনটি ছাড়বেন—সেই সিদ্ধান্তও সবার সঙ্গে আলোচনার পর নেবেন বলে রাহুল জানান। দুই নেতাই বলেন, এই জয় জনতার জয়।

এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই, আগামী দিনগুলোয় প্রশাসক নরেন্দ্র মোদিকে নতুনভাবে আবির্ভূত হতে হবে। সেই ভূমিকা কোনো দিন তিনি পালন করেননি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সরকার ছিল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ। কারও ওপর নির্ভর করতে হয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তাঁর নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে কখনো অন্য কারও মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়নি।

২০১৪ সালে সরকার গড়েছিলেন ২৮২ আসন পেয়ে। পাঁচ বছর পর পান ৩০৩ আসন। এবার এক ঝটকায় তা ২৪০– এ নেমেছে। সরকার গড়ার এই যে ৩২টি আসন ঘাটতি, তা মেটাতে হবে জেডি–ইউ, টিডিপি, শিবসেনার শিন্ডে গোষ্ঠী, চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি ও উত্তর প্রদেশের জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির মতো দলগুলোর সমর্থন নিয়ে।

এদের কাউকেই উপেক্ষা বা অবজ্ঞা করার মতো অবস্থায় মোদির বিজেপি থাকবে না; বরং সারাক্ষণ তাদের গুরুত্ব দিতে হবে। দাবি মানতে হবে। পছন্দের মন্ত্রিত্বও দিতে হবে। না হলে জোট ছাড়ার প্রচ্ছন্ন শঙ্কার মধ্যে থাকতে হবে। নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবুর অতীত মোদির জানা। বারবার তাঁরা জোটে এসেছেন, বেরিয়েও গেছেন।

নাইডু এবার আরও শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান। অন্ধ্র প্রদেশে একার ক্ষমতাতেই সরকার গড়ার মতো অবস্থায় তিনি। মোদি তাঁকে এতটাই গুরুত্ব দিচ্ছেন যে গণনা চলাকালীনই তাঁকে ফোন করে জানিয়ে দেন, তাঁর শপথে নিজে উপস্থিত থাকবেন।


জোট সরকার চালানোর কোনো অভিজ্ঞতাই মোদির নেই। জোটের ধর্ম কেমন, তা–ও তাঁর অজানা। টানা ১০ বছর দাপিয়ে তিনি শাসন করেছেন। কারও তোয়াক্কা না করে সরকার চালিয়েছেন। পুরোপুরি নিজের ইচ্ছেমতো। সেই উঁচু মাথা হেঁট করে অনমনীয় চরিত্র নমনীয় করে শরিকদের যাবতীয় আবদার মেনে শাসন করার কায়দা তাঁকে শিখতে হবে। আত্মমগ্ন ও কর্তৃত্ববাদী কোনো শাসকের পক্ষে রাতারাতি এই রূপান্তর কঠিন। সেই কঠিন কাজই মোদিকে রপ্ত করতে হবে। এমন মোদিকে কেউ কখনো দেখেনি। সে দিক দিয়ে তিনি নিজেই চমকপ্রদ দ্রষ্টব্য হয়ে উঠবেন।

এই ভোট ও তার ফল নরেন্দ্র মোদির কয়েকটি স্বপ্নও খানখান করে দেবে। যেমন তাঁর সাধের ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি। তিনি ভেবেছিলেন, প্রথম দুবারের মতো একক ক্ষমতায় তৃতীয়বার সরকারে এলে এই নীতি চালু করে দেবেন। ইন্ডিয়া জোট শুরু থেকেই ওই নীতির বিরোধী।

এনডিএর শরিকদেরও তাতে মত থাকবে কি না, সন্দেহ। একইভাবে বানচাল হয়ে যাবে বহু প্রচারিত অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার বিষয়টিও। দুটি সিদ্ধান্ত বলবৎ করতে গেলে সংবিধান সংশোধন জরুরি। সে জন্য প্রয়োজন সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সমর্থন; এই ফলের পর যা আশা করা বৃথা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া ‘ইলেকটোরাল বন্ড’ কিছুটা পাল্টে নতুন করে আনার পরিকল্পনা মোদির ছিল। সেই আশাও জলাঞ্জলি দিতে হবে। ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলও এরপর সরকারি অডিটের আওতার বাইরে রাখা মোদির পক্ষে সম্ভবপর হবে কি না, বলা কঠিন।

দেখার বিষয় আরও আছে। পাঁচ বছর ধরে মোদি সরকার ইডি, সিবিআই, আয়কর বিভাগ, এনআইএর যথেচ্ছ ব্যবহার করেছে। তাদের দল ভাঙানো ও দল গঠনের মতো কাজে লাগিয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। রাহুল নিজেই গতকাল বলেছেন, কংগ্রেসকে বিপদে ফেলতে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছিল। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শক্তিশালী বিরোধীদের চাপে এই প্রবণতা কতটা বজায় থাকে, সেটাও দেখার।

গতকাল সন্ধ্যায় মহা ধুমধামের সঙ্গে বিজেপি তাদের দলীয় দপ্তরে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করল। দৃশ্যত উৎফুল্ল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহাস্য মুখে অভিবাদন গ্রহণ করলেন। যদিও মনে খচখচানি তাঁর থাকারই কথা। দলের ৩৭০ পাওয়া তো দূরের কথা, জোটকে ৩০০ পাইয়ে দিতেও তিনি ব্যর্থ। শুধু কি তাই? যে বারানসি থেকে গতবার তিনি সাড়ে ৪ লাখের বেশি ব্যবধানে জিতেছিলেন, সেখানে পিছিয়ে পড়েও জয় পেয়েছেন মাত্র দেড় লাখ ভোটে। নরেন্দ্র মোদির কাছে দুটোর কোনোটাই সম্মানের নয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

Direct Ink Writing Method Shields Electronics from Static

- Commercial - Lawrence Livermore Lab develops a silicone-based 3D-printed options for electrostatic discharge safety…

21 mins ago

Infineon and Stellantis Workforce As much as Advance Innovation in Energy Conversion and Distribution for Subsequent Technology of Car Architectures

Collaboration goals to considerably improve value, vitality effectivity, driver expertise and automobile vary Firms signed…

1 hour ago

Israel’s new techniques in north Gaza stoke fears of ethnic cleaning marketing campaign | Gaza Information

Palestinian officers, witnesses and journalists are accusing Israel of stepping up a marketing campaign of…

5 hours ago

Deciphering the Price of Digital Twins

Know-how brings large alternatives, if accomplished proper. Think about the instance of the digital twin.…

5 hours ago

Safety Chew: Mechanics of Apple CarPlay

9to5Mac Safety Chew is solely dropped at you by Mosyle, the one Apple Unified Platform. Making…

5 hours ago

Airtel CEO Hints at New Construction for Cell Tariffs to Take ARPU Up

Bharti Airtel's CEO, Gopal Vittal, has hinted at a brand new tariff construction that the…

5 hours ago