Categories: Bangladesh News

মোবাইল আপনার সন্তানকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?


শিশুদের স্মার্ট ফোন আসক্তি এখন নতুন কিছু নয়। তবে এই আসক্তি কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপরাধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদের। ঘুম পাড়ানো, খাওয়ানো কিংবা কান্না থামানোর জন্য মুহূর্তেই অনেক স্বজন কার্টুন দেখার কথা বলে শিশুদের হাতে তুলে দিয়ে দিচ্ছেন স্মার্ট ফোন। এভাবে অভ্যস্ত হয়ে দিনের অর্ধেক বা পুরো সময়টাই ফোনে পার করে দিচ্ছে তারা। ফলে সবার অজান্তে অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে ঢুকে নেতিবাচক বা ক্ষতিকর কনটেন্ট দেখা রপ্ত করছে শিশুরা। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ। পাশাপাশি নানা রকম অপরাধপ্রবণ মানসিকতাও তৈরি হচ্ছে। এমনকি অনিয়ন্ত্রিত স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার কারণে প্রজনন স্বাস্থ্য বোঝার আগেই অনেক শিশু যৌনতার দিকে ঝুঁকছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

চলতি বছর চট্টগ্রাম নগরের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নগর পুলিশের বিশেষ শাখা (সিটিএসবি) একটি জরিপ চালায়। জরিপ চালানো হয় ৭৮২ জন শিক্ষার্থীর ওপর। এতে ভিত্তি ধরা হয়—গত এক বছরের (২০২৩ সাল) উপস্থিতির হার। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল গড়ে ৪৬ শতাংশ। অনুপস্থিত থাকা ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর বেশিরভাগই ছাত্র, যাদের অনেকে জড়িয়ে পড়েছে অপরাধে।

সিটিএসবি জানায়, নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, সামাজিক অস্থিরতা বা কিশোর গ্যাংয়ের উত্থানের কারণ খুঁজতে গিয়ে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পায় পুলিশ। এসব ছাত্র পর্নোগ্রাফি, সাইবার অপরাধ, ছিনতাই, চুরি, মাদক গ্রহণ ও কেনাবেচা এবং অনলাইন জুয়ার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে তারা বেছে নেয় স্কুলের সময়টা। এমনকি স্কুল ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিশু-কিশোররা যে মোবাইল আসক্তি থেকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে, এটা কারও একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। এ জন্য প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। পারিবারিক, সামাজিক, সাংগঠনিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই শিশু-কিশোরদের অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।

শিশুদের নিয়ে কাজ করা সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের চাইল্ড প্রোটেকশন অ্যান্ড চাইল্ড রাইটস গভর্ন্যান্সের পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বর্তমানে বিভিন্নভাবে অপরাধের দিকে ঝুঁকছে শিশুরা। বিশেষ করে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে কিছু বোঝার আগেই নেট দুনিয়ার অপরাধ জগতে ঢুকে যাচ্ছে কিছু শিশু। ফলে নিজেদের অজান্তেই বিভিন্ন সাইটে ঢুকে নেতিবাচক কনটেন্ট গ্রহণ করছে। অনেক সময় প্রজনন স্বাস্থ্য বুঝে ওঠার আগেই যৌনতার দিকে ঝুঁকে পড়ছে শিশুরা।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের সভাপতি মাহবুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শিশুদের অধিকার রক্ষায় সরকারিভাবে নানান কাজ হচ্ছে। তবে এর ফলাফল আশাব্যঞ্জক নয়। এ বিষয়ে কাজ করার জন্য বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে কোনও উদ্যোগ নেই। তেমন কোনও ফান্ডিং নেই। ফলে বেসরকারি খাতও শিশু অধিকার রক্ষায় আগ্রহ হচ্ছে না। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও মনোযোগ হওয়ার প্রয়োজন আছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বাংলাদেশে যে শিশু আইন রয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে—১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তারা সবাই শিশু। আইনের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। সেই আইনের বাধ্যবাধকতা হচ্ছে—সাজার মান ও পরিমাণের বিষয়ে। তারপর যদি তারা অপরাধী প্রমাণিত হয়, তবে তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশনা আছে।

তিনি বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং র‍্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও সেই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যায়। শিশু ও কিশোর অপরাধীর মধ্যে এখন দেখা যাচ্ছে মাদকের বিস্তার বেশি হচ্ছে। তারা বেশিরভাগই মাদকসেবী। নিজেরা মাদক সেবন করে, আবার কেনাবেচা করে। পাশাপাশি সমাজে, রাস্তাঘাটে তাদের যে মুভমেন্ট, তাদের যে চলাচল দেখা গেছে, তারা অনেক বেশি সহিংস হয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের আত্মপ্রকাশ হচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। তারা একে অপরের সঙ্গে মারামারি, কোন্দল, অস্ত্র প্রদর্শন এবং তুচ্ছ কারণে মারাত্মকভাবে একে অন্যকে জখম করছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের অনেক বেশি কাজ করা প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পরিবারের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, শিশুরা নানা ধরনের সমাজ ও সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এই জড়িয়ে পড়া শিশুদের একটি বড় অংশ পড়াশোনা ও জীবন গঠনমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। বয়সে তরুণ বা কিশোর হলেও সাইবার অপরাধ, টিজিং, চুরি, পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি, ঘরের বাইরে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করা, কখনও পারিবারিক সিদ্ধান্ত না মানা ও অশান্তি সৃষ্টি করাসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। এই সম্পৃক্ততার পেছনের পটভূমি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সৃষ্টি হচ্ছে—প্রযুক্তি তথা ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে। শিশু বা কিশোরদের একটি বড় অংশ দিনের বেশিরভাগ সময় নেট দুনিয়ায় চলমান অনাকাঙ্ক্ষিত কনটেন্টগুলো উপভোগ করে। সেখান থেকে প্রাপ্ত ধারণা শিশুর আচরণ ও ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ইতিবাচক ভূমিকার ক্ষেত্র কিংবা উদাহরণ খুবই সীমিত। শিশুদের এ পথ থেকে সরিয়ে আনতে হলে প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। এ বিষয়গুলো নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। পারিবারিক, সামাজিক, সাংগঠনিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।


👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

NDTV InfraShakti Awards Stay: Celebrating India’s Infrastructure Progress

From engineering feats to sustainable city planning, these awards have fun all of it.Infrashakti Awards…

1 min ago

The What, Why, and How of Predictive Upkeep

With the fast improvement of know-how and its unimaginable skills, predictive upkeep has emerged as…

3 mins ago

How the Utilized Physics Laboratory is tackling Artemis moon exploration

The moon is way from being a “been there, completed that” world, even making an…

8 mins ago

Orban visits Zelensky in Ukraine

KYIV — Hungarian Prime Minister Viktor Orban, the European Union’s most outstanding critic of offering…

1 hour ago

Accelerating enterprise digital transformation with XPPC touchscreen panel PC

In right this moment’s quickly evolving digital panorama, companies should embrace cutting-edge applied sciences to…

1 hour ago

Biman Bangladesh Airways plans to purchase 32 new aircrafts

Biman Bangladesh Airways has unveiled an formidable plan to develop its fleet to 47 plane…

1 hour ago