পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নাশকতামূলক বেশ কিছু কাজকর্মের পর অভিযোগ উঠেছে, তারা প্রতিবেশী দেশ থেকে মদত পাচ্ছে। তবে তা সাফ অস্বীকার করেছেন পার্শ্ববর্তী মিজোরামের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদরা।
ভারতের মিজোরাম রাজ্য থেকে নির্বাচিত একমাত্র পার্লামেন্টারিয়ান তথা লোকসভা সদস্য সি লালরোসাঙ্গা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এটা ঠিকই যে বাংলাদেশ থেকে আসা বেশ কয়েকশো লোক আমাদের রাজ্যে আশ্রয় পেয়েছেন। কিন্তু তাদের আমরা শুধু মানবিক সাহায্যই দিচ্ছি, নাশকতায় তাদের প্রশ্রয় দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এটা কখনোই মিজোরামের নীতি নয়।’
ভারতের দাবি অনুযায়ী, তাদের পরিসংখ্যানে এই মুহূর্তে অন্তত ১ হাজার ১৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক মিজোরামে শরণার্থী হিসেবে বাস করছেন। তবে তৃণমূল স্তরের অ্যাক্টিভিস্টরা দাবি করছেন, সংখ্যাটি তারও বেশি।
এদের প্রায় সবাই রয়েছেন ভারত-বাংলাদেশ-মিয়ানমার তিন দেশের সীমানার খুব কাছে মিজোরামের লংতলাই জেলায় বিভিন্ন শরণার্থী শিবির বা অস্থায়ী ক্যাম্পে। এথনিক পরিচয়ে এরা বৃহত্তর কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর অংশ হলেও তাদের বেশির ভাগই কিন্তু ‘বম’ সম্প্রদায়ের।
এছাড়াও মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ৪০ হাজার চিন শরণার্থী এবং ভারতেরই মণিপুর থেকে আসা আরও প্রায় হাজার দশেক কুকি-চিন-জো ‘ইন্টারন্যালি ডিসপ্লেসড পিপল’ (দেশের ভেতরই যারা ভিটেছাড়া) এই মুহূর্তে মিজোরামে আশ্রয় নিয়ে আছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) নিবন্ধনের জন্য মিজোরাম সরকারকে এক বছর আগে নির্দেশ দিলেও আজ পর্যন্ত মিজোরাম সেই প্রক্রিয়া শুরু করেনি। তার কারণ মিজোরাম সরকার মনে করে, একবার এই শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক নেওয়া হলে কেন্দ্র তাদের নিজ দেশে (বাংলাদেশ বা মিয়ানমারে) ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করবে।
মিজোরামে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এমএনএফ) নেতৃত্বাধীন সরকার, মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা জোরামথাঙ্গা। মাসচারেক আগে বিধানসভা ভোটে জিতে মিজোরামের ক্ষমতায় এসেছে জোরাম পিপলস মুভমেন্ট, মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা
লালডুহোমা। কিন্তু বাংলাদেশি শরণার্থীদের ব্যাপারে দুই দলের অবস্থানে কোনও ফারাক নেই।
নতুন মুখ্যমন্ত্রী লালডুহোমা কিছুদিন আগেই রাজ্য বিধানসভায় জানিয়েছেন, তার সরকার কিছুতেই এই শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহ করবে না, কারণ তারা চান না এদের নিজ দেশে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হোক।
মুখ্যমন্ত্রীর লালডুহোমার একজন রাজনৈতিক উপদেষ্টা বাংলা ট্রিবিউনকে এদিন বলেন, ‘মিজোরাম সরকার এই শরণার্থীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিপরায়ণ ঠিকই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা চাইবো তারা বাংলাদেশের মাটিতে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাক।’
বাংলাদেশকে ‘অত্যন্ত বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী’ বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি, কারণ তারা আমাদের ভাইবোন- বৃহত্তর কুকি-চিন-মিজো জনগোষ্ঠীরই অংশ। তবে আমরা এটাও চাইবো, বাংলাদেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আবার নিজেদের দেশে ফিরে যাবেন।’
তবে বিষয়টি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বিধায় ওই উপদেষ্টা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
এদিকে এমপি লালরোসাঙ্গা বলছিলেন, ‘আমাদের ছোট্ট রাজ্য, এই হাজার হাজার শরণার্থীকে খাওয়াতে-পরাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের শরণার্থীরা এসেছেন তিন বছরের ওপর হয়ে গেলো, বাংলাদেশ থেকেও শরণার্থীদের আসার পর বছর ঘুরে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এদের জন্য নামেমাত্র ত্রাণ পাঠিয়েছে, তারপরও স্থানীয় চার্চ ও যুব সংগঠনগুলির ভরসায় এখনও আমরা তাদের সাহায্য করতে পারছি।’
‘এই পরিস্থিতিতে তাদের বিপদে সাহায্য করা ও তাদের কাছে মানবিক সাহায্যটা পৌঁছে দেওয়াই একমাত্র লক্ষ্য। আমরা কখনওই তাদের নাশকতামূলক কাজকর্ম করতে উৎসাহ দেই না, আর সেটার প্রশ্নও ওঠে না’, বলেন তিনি।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে তৎপড় হয় কেএনএফ। এরপরই একটু একটু করে মিজোরামে চলে আসার প্রবণতা শুরু হয়। প্রথমদিকে বিএসএফ কয়েকবার এমন কয়েকটি দলকে ‘পুশব্যাক’ করে ফেরত পাঠিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন এমএনএফ নেতা ও রাজ্যসভা এমপি কে ভানলাভেনা। এরপর ওই বছরেরই মার্চ মাসে একসঙ্গে মোট ৫৬৬ জন বাংলাদেশি নারী-পুরুষ-শিশু মিজোরামে আসেন বলেও দাবি করা হয়।
জানানো হয়, তাদের লংতলাই জেলার পার্ভা-থ্রি নামে একটি গ্রামে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশনের মতো এনজিও ও স্থানীয় চার্চগুলোর সহায়তায় তাদের খাদ্য সামগ্রী ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে ও মাথার ওপর ছাদের ব্যবস্থা করে আশ্রয় দেওয়া হয়।
পরে এই সংখ্যাটি ধীরে ধীরে বেড়ে সরকারি হিসাবেই ১ হাজার ১৬৭-তে পৌঁছেছে। যদিও স্থানীয় সমাজকর্মীদের দাবি, মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
সম্প্রতি বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে একাধিক ব্যাংকে কেএনএফের হামলা চালানো ও একজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে অপহরণের ঘটনার পর ওই সংগঠনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এরপরই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেএনএফের সঙ্গে আশপাশের সন্ত্রাসীদেরও যোগাযোগ আছে, পার্শ্ববর্তী দেশে যারা ইতিমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিল, তাদের অস্ত্রশস্ত্র তাদের (কেএনএফ) কাছে এসেছে বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে, ইতিমধ্যে ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে মুক্ত করা হয়েছে। তাদের নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কোনও ‘পার্শ্ববর্তী দেশে’র নাম উল্লেখ না-করলেও তিনি যে ভারতের মিজোরামের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট। তবে মিজোরামের রাজনীতিবিদরা বলছেন, কুকি-চিনদের প্রতি তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা মানবিক সাহায্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ– তার অতিরিক্ত কিছু নয়!
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…