ধারাবাহিকভাবে গত দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে অবস্থান করছে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধান খাদ্যগুলোর দাম বেড়েছে। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব বলছে— গত এক বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩৫ ডলার। বিবিএসের হিসাবে গত তিন বছর ধরে মাথা পিছু আয় ২ হাজার ৭০০ ডলারের ঘরে আটকে আছে। এ নিয়ে অবশ্য অর্থনীতিবিদরা ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। মাথাপিছু আয়ের সরকারি হিসাবকে ‘কাগজেকলমের হিসাব’ বলে বর্ননা করে থাকেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে। তারা বলছেন, এই ধরনের আয়ের খবর মানুষের কাছে গুরুত্বহীন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাথাপিছু আয় নিয়ে বিবিএস যে হিসাব করেছে, তা সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, সার্বিকভাবে দেশের প্রকৃত আয় বাড়েনি।’ তিনি বলেন, ‘ডলারের রেট বেড়ে এখন ১২০ টাকারও বেশি, কিন্তু বিবিএস ডলারের হিসাব ধরেছে ১০৯ টাকা। এ কারণে মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে বলা হচ্ছে।’ তিনি উল্লেখ করেন, দেশের প্রকৃত মজুরি বাড়েনি, একইভাবে প্রকৃত আয়ও বাড়েনি। সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘অবৈধ ও কালো টাকার মালিক ও অর্থপাচারকারীদের হয়তো আয় বেড়েছে। কিন্তু দেশের প্রকৃত আয় বাড়েনি।’
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিবিএসের এই হিসাবে মূল্যস্ফীতিকে আমলে নেওয়া হয়নি। মূল্যস্ফীতিকে আমলে নেওয়া হলে প্রকৃত আয় বোঝা যেতো।’ তিনি বলেন, ‘মাথাপিছু আয় বেড়েছে— এটা দেখানোর জন্য ডলারের মূল্য ধরা হয়েছে ১০৯ টাকা। ডলারের মূল্য ১১৭ বা ১২০ টাকা ধরা হলে মাথাপিছু আয় কমে যেতো।’ তিনি উল্লেখ করেন, বাজার মূল্যে মাথাপিছু আয় বাড়লেও প্রকৃত আয় বাড়েনি।
বিবিএসের সর্বশেষ হিসাবে দেশে মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৭৮৪ ডলার। ডলারের দাম ১০৯ টাকা ৯৭ পয়সা ধরে এই মাথাপিছু আয়ের হিসাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৪৯ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে এই আয় ৩৫ ডলার বেড়েছে।
বিবিএসে হিসাব অনুযায়ী, টাকার অঙ্কে প্রথমবারের মতো মাথাপিছু গড় আয় তিন লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। সাময়িক হিসাবে চলতি অর্থবছরের মাথাপিছু গড় আয় ৩ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) চূড়ান্ত হিসাবে টাকায় মাথাপিছু আয় ছিল ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা। অর্থাৎ, এক বছরে মাথা পিছু আয় বেড়েছে ৩২ হাজার ৭৮৪ টাকা।
প্রসঙ্গত, দেশের অভ্যন্তরে আয়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্স অর্থাৎ প্রবাসী আয়কেও অন্তর্ভুক্ত করে মোট জাতীয় আয় হিসাব করা হয়। এ আয়কে মোট জনসংখ্যা বা মাথাপিছু ভাগ করে দিয়ে এই হিসাব করা হয়ে থাকে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড .আহসান এইচ মনসুর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গরিব মানুষের আয় বাড়েনি, উল্টো কমেছে।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় আয়ে গরিব মানুষের ভাগ কমেছে। অর্থনীতির অবস্থা খারাপ, গরিব মানুষের আয় বাড়ানোর সুযোগও কম।’
এদিকে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের মাথাপিছু খাবার কেনায় খরচ বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু ১ হাজার ৮৫১ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা— যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।
ডব্লিউএফপি’র আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যঝুঁকিতে ছিল— যা এর আগের মাসের তুলনায় ২ শতাংশ বেড়েছে। দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ বাকিতে খাবার কিনছে। ২২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বাবদ খরচ কমিয়েছে। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙছে। খাদ্যঝুঁকিতে থাকা মাত্র ২১ শতাংশ মানুষ বাইরে থেকে সহায়তা পাচ্ছে।
সরকারি ও বেসরকারি সব হিসাব বলছে, গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থেকেছে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধান খাদ্যগুলোর দাম বেড়েছে। বিশেষ করে চাল, আটা ও আমিষের প্রধান উৎস মুরগির মাংস, ডিম, মাছ ও সবজির দাম বাড়তির দিকে। বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ও ফলের দামও।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, গত ১৪ মাস ধরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশের আশপাশে আছে। এর মধ্যে সর্বশেষ এপ্রিলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। এর আগের মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তার আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। গ্রাম ও শহর সব জায়গাতেই মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। কারণ, মূল্যস্ফীতির বিপরীতে আয় ও মজুরি তেমন বাড়েনি। মূল্যস্ফীতির কারণে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রায় পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
বিবিএসের হিসাবে মহামারি করোনার পর থেকে ডলারের হিসাবে মাথাপিছু আয়ে খুব বেশি অগ্রগতি নেই। তবে গত ১০ বছরে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে।
বিবিএসের হিসাবে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৩১৬ ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। পরের বছর তা কমে ২ হাজার ৭৪৯ ডলারে নামে। চলতি বছরে আবারও তা বেড়ে ২ হাজার ৭৮৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ তিন বছর ধরে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭০০ ডলারের ঘরে আটকে আছে।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি…
কোটা সংস্কার ও ২০১৮ সালের মেধাভিত্তিক নিয়োগের সরকারি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আগামীকাল রবিবার (৭ জুলাই)…
Storm is predicted to once more attain hurricane energy over Gulf of Mexico after killing…
At first, Nigel Farage stored his cool. When protesters disrupted an election victory speech by…
Kazi Abu Mahmud Faisal, a former first secretary of the Nationwide Board of Income (NBR)…
The depth and inaccessibility of the interior core imply that uncertainties stay.Deep inside Earth lies…