টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের বেশিভাগ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সিলেট বিভাগের অনেক এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়া ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইত্যেমধ্যেই কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাঁচ জায়গায় পাহাড় ধসে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে, রংপুর বিভাগের চার জেলায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নীলফামারীতে পানির প্রবাহ বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও পানি বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বন্যা প্রসঙ্গে সিলেটের ডিসি রাসেল হাসান জানান, জেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বেড়ে আট লাখের বেশি হয়েছে। তিনটি নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। একই নদীর সিলেট শহর পয়েন্টে বইছে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি বইছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪০ সে.মি উপর দিয়ে সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ছাতক উপজেলায় বিপৎসীমার ১৪৬ সে.মি উপর দিয়ে সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
হবিগঞ্জের খোয়াই, কুশিয়ারা ও কালনীসহ সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর বাঁধ উপচে নবীগঞ্জ উপজেলার ১০-১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামে খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। টানা বর্ষণে হবিগঞ্জ শহরের বেশ কিছু এলাকা ডুবে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সার্কিট হাউস, অনন্তপুর, মাহমুদাবাদ, শ্যামলী, চৌধুরী বাজারসহ অনেক এলাকার লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন হবিগঞ্জের মানুষ।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, বৃষ্টির পাশাপাশি ভারত থেকে আসা পানির জন্য খোয়াই, কুশিয়ারা, কালনী, সুতাং, করাঙ্গী নদীসহ হাওরে পানি বাড়ছে। বুধবার সকাল ৯টায় খোয়াই নদীর পানি চুনারুঘাটের বাল্লা সীমান্তে বিপৎসীমার ১৩১ সেন্টিমিটার, শায়েস্তাগঞ্জে ২১ সেন্টিমিটার এবং হবিগঞ্জ শহরের মাছুলিয়া পয়েন্টে ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার এবং মার্কুলী পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কালনী-কুশিয়ারা নদীর আজমিরীগঞ্জে ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলার মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ধলাই নদীর বাঁধের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের তিনটি পুরোনো ভাঙন দিয়ে জনপদে পানি প্রবেশ করছে। ধলাই নদীর ভাঙনে মৌলভীবাজার-শমসেরনগর সড়কের ছয়কুট এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, হাকালুকি হাওরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পানি ঢুকেছে। অনেক এলাকার গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ১০ জনের মৃত্যুর হয়েছে। বুধবার (১৯ জুন) সকালে ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ৯, ১০, ৮ ও ১৪ নম্বর ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় পৃথক এই ধসের ঘটনা ঘটে।
উখিয়া ৮ এপিবিএন পুলিশের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো আমির জাফর জানান, গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে কক্সবাজার উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবার ভোরে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীর কয়েকটি ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড় ধ্বসে বেশ রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকটি ঘর মাটি চাপা পড়ে যায়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে, রংপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় তিস্তার পানি আরও বাড়তে পারে। গতকাল (মঙ্গলবার) মধ্যরাতে রংপুরে ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া নীলফামারী জেলায় বাড়ছে তিস্তার পানি। ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে আজ বুধবার সকাল ছয়টায় ডালিয়ায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর কিছুটা কমলেও সন্ধ্যায় পানি বাড়ার আভাস দিয়েছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার সকাল ছয়টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েণ্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল নয়টায় কিছুটা কমে ২৩ সেণ্টিমিটার এবং বেলা ১২টায় ২৭ সেণ্টিমিটার নিচে নামলেও সন্ধ্যা নাগাদ পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। নদীর ওই পয়েণ্টে বিপদসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার।
অন্যদিকে কুড়িগ্রামে প্রধান নদ-নদীগুলোর মধ্যে তিস্তা নদী ও দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সকাল ৯টায় পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। দুধকুমার নদের পানি বেড়ে নাগেশ্বরী উপজেলার চর লুচনী ও টেপারকুঠি এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদের পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার এবং তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই পরিমাণ পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আজ দুপুরে এ নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
লালমনিরহাট জেলা পাউবো সূত্র জানায়, জেলার পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার বেলা ৩টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ইতিমধ্যে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প পয়েন্টে পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
এর আগে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় নেত্রকোণায় দেশের সর্বোচ্চ ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটে ১০০ মিলিমিটার, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১৩৬ মিলিমিটার, হবিগঞ্জে ১৮৮ মিলিমিটার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৫৪ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা করে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
এছাড়া মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি রংপুর, ময়নসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেটে আগামী দুই দিন ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সতর্কতা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…