উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার তৈরি হচ্ছে, বাড়ছে কাজের সুযোগ। তাছাড়া অবৈধভাবে ইউরোপের দেশ ইতালি যাওয়ার অন্যতম একটি রুট এই লিবিয়া। অর্থাৎ মানবপাচারের একটি বড় গন্তব্যস্থল। সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী এই দুই কারণে দেশটি বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর এ দুটি বিষয়কে মাথায় রেখেই দেশটিতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস। লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মাদ খাইরুল বাসার জানিয়েছেন, তারা একদিকে যেমন শ্রমবাজার সম্প্রসারণের জন্য দেশটির বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন; তেমনি মানবপাচার ঠেকানো এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দেশে পাঠানোর দুরূহ কাজটিও করতে সব চেষ্টাই করে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত জানান, গত বছর লিবিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ। এটি নতুন সুযোগের তৈরি করেছে। এই এক বছরের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৫০০ বাংলাদেশি সেখানে কাজের সুযোগ পেয়েছে এবং তাদের মধ্যে ডাক্তার, নার্স, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও শ্রমিকও রয়েছেন। লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি।
শ্রমবাজার নিয়ে আছে চ্যালেঞ্জ
বর্তমানে লিবিয়ায় সবমিলিয়ে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। এই সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তবে সেখানে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে বলে মনে করেন রাষ্ট্রদূত আবুল হাসনাত মোহাম্মাদ খাইরুল বাসার। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু বাধা আছে। আমি প্রায়শই এখানে কর্মক্ষেত্রের সুযোগ আছে এমন বিভিন্ন কোম্পানি পরিদর্শনে যাই। এখানকার লোকদের কমন একটি অভিযোগ হলো, তারা বাংলাদেশিদের নিয়ে সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশই কিছুদিন কাজ করার পর পালিয়ে যান। মূলত তারা সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে পালান। আর এতে করে কোম্পানিগুলো সমস্যায় পড়ে। কারণ বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাদের কিছু অর্থ খরচ করতে হয়।‘
‘আমি যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই বাংলাদেশিদের এ বিষয়ে সাবধান করার চেষ্টা করি। কিন্তু একটি অংশ স্বপ্ন দেখছেন যে, ইতালি গেলে হয়তো তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যাবে। তাদের সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করা খুব কঠিন কাজ’, উল্লেখ করেন তিনি।
ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ
বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৬০০ জন ডাক্তার ও নার্স পাঠানোর বিষয়ে লিবিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি আছে। এরমধ্যে গত বছরের জুনে লিবিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৬০০ ডাক্তার ও নার্স বাছাই করে গেছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে গত বছরের জুন ও জুলাই মাসে ২০০ জনকে পাঠানো হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা ছিল যে, তিন মাস কাজ করার পরে তাদের চাকরিতে নিয়মিত করা হবে। বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে চিকিৎসকদের জন্য ১৪০০ থেকে ১৬০০ ডলার এবং নার্সদের জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ ডলার। কিন্তু তাদের এই বেতন লিবিয়ায় কর্মরত অন্যান্য চিকিৎসকের বেতনের প্রায় তিনগুণ। ফলে লিবিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আপত্তি তুললে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাদের বেতন দিতে পারছিল না।’
‘আমি এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করি। সবশেষ তারা আমাকে জানিয়েছে যে, বর্ধিত বেতনের বিষয়টি তাদের কেবিনেট অনুমোদন দিয়েছে এবং আগামী মাস থেকে তাদের সমুদয় পাওনাসহ নিয়মিত বেতন দেওয়া হবে। আমি আশা করছি, বেতন নিয়মিত দেওয়া শুরু হলে বাকি যে ডাক্তার ও নার্স নেওয়ার কথা রয়েছে; সেটিও পূরণ করা সম্ভব হবে।’
মানবপাচারের রুট লিবিয়া
২০২৩ সালের জুনে লিবিয়ায় দায়িত্ব নেন নতুন এই রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখলাম, কিছুদিন পরপর ইতালিতে যারা অবৈধভাবে যান, সেখানে কিছু দুর্ঘটনা ঘটছে।’
তিনি জানান, লিবিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে দুটি সরকার আছে। পূর্বাঞ্চলে ঢুকতে গেলে ভিসা বা অন্য কোনও ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয় না। এ কারণে যারা অবৈধভাবে ইতালি যেতে চান, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই অঞ্চলকে বেছে নেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে জানার চেষ্টা করি, কতজন বাংলাদেশি বিভিন্ন সরকারি ডিটেনশন সেন্টারে এবং অন্যান্য জায়গায় বন্দি আছেন। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করি এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় তাদের ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা নেই। গত বছরের জুন থেকে কয়েক দফায় প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি; যারা বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছে এবং বিভিন্ন শহরে অনিরাপদভাবে ছিল, তাদের ফেরত পাঠাতে সক্ষম হই। এ মাসের মাঝামাঝি বেনগাজি থেকে আরও ১৬২ জনকে ফেরত আনার জন্য একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছি।’
স্বপ্নপূরণ করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার
অবৈধ অভিবাসীরা প্রথমে দুবাই যান এবং সেখান থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে পূর্ব লিবিয়ার শহর বেনগাজিতে যান। সেখান থেকে সুযোগ বুঝে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে ঢোকার প্রচেষ্টা নেন। ওই প্রচেষ্টায় অনেকে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা যান। আবার অনেকে বিভিন্ন জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অন্যান্য সশস্ত্র গ্রুপের হাতে ধরা পড়েন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘সেখানে বাংলাদেশি কিছু মাফিয়া আছে এবং ধরা পড়া ব্যক্তিদের দুষ্ট-চক্রের হাতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই দুষ্টচক্র বাংলাদেশিদের নির্যাতন করে লাখ লাখ টাকা আদায় করে। এরপর কারো যদি ভাগ্য ভালো থাকে, তবে ইতালির জন্য সাগর পাড়ি দিতে পারে। আবার অনেক নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি অন্য মাফিয়া গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং বন্দিজীবন চলতে থাকে। কাউকে কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হলে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এছাড়া অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে।’
কী ধরনের নির্যাতন করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ’আমরা যে ভিডিও দেখেছি, সেটি কঠোর নির্যাতন। দুই হাত উঁচু করে বেধে পেটানো, হাত বা পায়ের আঙুল কেটে ফেলা, নখ তুলে নেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করা হয় তাদের ওপর।’
অবৈধভাবে ইউরোপ যেতেও গুণতে হয় লাখ লাখ টাকা
ভাগ্য ভালো থাকলে একজন অবৈধ অভিবাসীর ইতালি পৌঁছাতে সাধারণভাবে খরচ হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের নির্যাতন করে আরও ১০ থেকে ১৫ লাখ বেশি টাকা আদায় করে মাফিয়া চক্রগুলো।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু কেউ আমাদের দেশের কোন দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় পৌঁছেছে, তারা সেটি জানাতে চায় না।’
সতর্ক থাকার আহ্বান
‘আমি মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবসময় সতর্ক বার্তা দিয়ে যাচ্ছি, যাতে করে বাংলাদেশি তরুণরা অবৈধভাবে না জেনেশুনে দালালের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে যেন লিবিয়া না আসেন’, বলেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘আমি লিবিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি, যাতে করে এই অবৈধ চক্র দূর হয়। ইতিমধ্যে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, এটি লিবিয়ার একার পক্ষে বন্ধ করা সম্ভব নয়। মানবপাচার শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু তারা (পাচারের শিকার ব্যক্তিরা) সংযুক্ত আরব আমিরাত বা মিশর কিংবা অন্য দেশ হয়ে লিবিয়ায় এসে পৌঁছান। এরসঙ্গে যারা চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছে বা অন্য কিছুর ব্যবস্থা করছে, তারাও জড়িত। সব স্টেকহোল্ডার মিলে যদি কাজ না করা হয়, তবে লিবিয়া বা বাংলাদেশের পক্ষে এটি বন্ধ করা সম্ভব হবে না।’
ইতালি ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা এখন আর অবৈধ অভিবাসী গ্রহণ করতে চাইছে না। গত বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ৭ হাজার বাংলাদেশি ইতালিতে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু এ বছরের প্রথম ছয় মাসে এটি সাড়ে ৪ হাজারে নেমে এসেছে।
‘লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল সরকারের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ না থাকার পরও তাদের আমরা বিভিন্ন সময়ে বার্তা দিচ্ছি, এটি বন্ধ করার জন্য। ইতালিও তাদের বলছে, তাদের উপকূল থেকে যেন অবৈধ অভিবাসী নিয়ে কোনও জাহাজ না ছাড়া হয়’, উল্লেখ করেন তিনি।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…