দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আগস্টের শেষে এসে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। কিছু জায়গায় পানি নামতে শুরু করলেও নিচু অঞ্চলগুলোতে এখনও পানিবন্দি হয়ে আছে প্রচুর মানুষ। খাল-বিল, নদী-নালার প্রবাহ বন্ধ থাকায় এই পানি দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনে বাসস্থান, কৃষি, মৎস্য ও স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি জরুরি। ত্রাণ সরবরাহের শত চেষ্টার পরও প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাহাকার থামানো যায়নি, পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তেমন কিছু করার সুযোগ নেই। মানুষ যখন বাড়ি ফিরে ঘর পাবে না, তখন তার জীবন আরও শঙ্কায় পড়বে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আকস্মিক বন্যায় সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এখনও দেশের ১১টি জেলায় ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
এবারের বন্যায় দৃশ্যমান বড় ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। অনেক এলাকায় পাকা আউশ ধান তলিয়ে গেছে। রোপা আমনের বীজতলা, নতুন রোপণ করা আমন ধানের খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাণিজ্যিক সবজিখেত ছাড়াও বসতবাড়ি লাগোয়া মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, লাউ, ঢ্যাঁড়শ, করলা, বেগুনখেত তলিয়ে গেছে পানির নিচে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফল আম, কাঁঠাল, লেবু, আনারস, কলা, পেঁপে, সফেদাও নষ্ট হয়ে গেছে।
এ ছাড়া বেরিয়ে গেছে পুকুরে চাষ করা মাছ। বাড়িতে পালিত হাঁস-মুরগি মারা গেছে। এই পরিস্থিতিতে পুনর্বাসনের কাজে কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে বলে মনে করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা।
কাদায় জন্মে, এমন বীজে মনোযোগ চায়
ধানবীজ ও সবজি বীজের পাশাপাশি কাদায় হয়, এমন ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছেন কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, কখন পানি নামবে আর কখন কী বীজ উপযোগী মাটি হবে, সেটার অপেক্ষার সুযোগ নেই। নোয়াখালীর আটটি উপজেলা এখনও আক্রান্ত। কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলায় আমন, আউশ ধান এবং শরৎকালীন শাকসবজির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
কৃষি পুনর্বাসনে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) মো. মোজদার হোসেন বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ৪০০ মেট্রিক টন ধানবীজের অনুমোদন পেয়েছি। আর বসতবাড়ি জেগে ওঠা সাপেক্ষে শাকসবজির বীজের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এসব কোন এলাকায় বিতরণ করা হবে, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন বন্যাকবলিত মোট ২৩টি জেলা নির্ধারণ হয়েছে। যার মধ্যে ৯টি জেলা বেশি আক্রান্ত। এই ৯টির মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর এবং সিলেটের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। পানি প্রায় নেমে গেছে বললেই চলে। এখন কৃষি পুনর্বাসনের কাজ চলছে।
প্রাকৃতিক কৃষির কৃষক ও সমন্বয়কারী দেলোয়ার জাহান মনে করেন, এই মুহূর্ত থেকেই কাজ শুরু না করলে বিপদে পড়বেন কৃষক। বন্যা সব সময় আমাদের এলাকার জন্য আশীর্বাদ। যদি কৃষককে সেটা বোঝানো যায়। যে যে ফলন কাদামাটিতে ভালো হয়, সেটা দিয়েই কাজ শুরু করা দরকার। সেটা কৃষি বিভাগকে নির্ধারণ করতে হবে। যারা সহায়তা দিতে প্রস্তুত, তাদের সঙ্গে রাখা যেতে পারে।
২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি পোষাতে হবে
গত ২৪ আগস্ট মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, দেশের উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলে বন্যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগে আকস্মিক বন্যায় ১২টি জেলার ৮৬টি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। এতে অনেক গবাদি পশুর মৃত্যু এবং ভেসে যাওয়াসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খাদ্য এবং অন্যান্য পশুখাদ্য বিনষ্ট হয়েছে। দুর্যোগে দুধ, ডিমের প্রায় ৪১১ কোটি টাকা এবং অবকাঠামোসহ অন্যান্য ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
কী পরিমাণ মাছ ভেসে গেছে এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় করণীয় নির্ধারণ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে মৎস্য অধিদফতরের পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য) মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সর্বশেষ পরিস্থিতি রবিবার জানানো সম্ভব হবে। তবে পুনর্বাসনের একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ শুরু করা হবে।
দরকার নৌ অ্যাম্বুলেন্স ও ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিম
পানি নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে ইতোমধ্যে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. ইফতেখার আহমেদ নোয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় বন্যা-পরবর্তী ডায়রিয়া পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রতিটি ফার্মেসিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন ও ওষুধ সরবরাহ রাখতে নির্দেশ দেন। এ সময় কোনোভাবেই ওষুধের দাম বাড়ানো যাবে না বলেও উল্লেখ করেন।
এদিকে বেশ কিছু স্বাস্থ্যসেবাদান কেন্দ্র বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় যথাযথ চিকিৎসা দিতে বেগ পেতে হয়েছে পুরো সময়। স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্স ও ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, পানি যখন থাকে, তখন পানিতে ডুবে মৃত্যুর শঙ্কা থাকে। পানি কমে যাওয়ার পর তিন ধরনের রোগ ভোগায়। এর মধ্যে রয়েছে পেটের সমস্যা, টাইফয়েড-প্যারা টাইফয়েড, হেপাটাইসিস। এ ছাড়া ছত্রাকের সংক্রমণ, পচড়া, ত্বকের অ্যালার্জিসহ ত্বকের অসুখ বাড়ে। পাশাপাশি শ্বাসের টান, হাঁচি-কাশি বেড়ে যায়।
এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রও পানিতে ডুবে যেতে দেখেছি আমরা। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলার জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্স ও ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা করা গেলে ভোগান্তি কমানো যাবে।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…