বাজারে এমনিতেই নকল পণ্যের ছড়াছড়ি দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে ওষুধের মতো জীবন রক্ষাকারী পণ্যও নকল হচ্ছে দেশে। জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত এ পণ্যটিও যদি ভেজাল দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে দেশের নাগরিকের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। এসব নকল ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ না হওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ। এসব ওষুধ সেবনে মানুষকে ভুগতে হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব ভেজাল ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও মুনাফালোভী রোগীদের কাছে এসব নকল ওষুধ বিক্রি করছে দেদার। এর আগেও বিভিন্ন সময় নকল ওষুধের খবর পাওয়া গেছে। তবে কয়েকটি ঘটনা নতুন করে আলোচনায় আসায় নকল ওষুধ নিয়ে মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল ওষুধ যারা তৈরি করছে, তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা বিচারিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। না হলে খারাপ ফল ভোগ করতে হবে মানুষকে।
সম্প্রতি রাজধানীর কিছু ফার্মেসিতে নকল ওষুধ রাখার তথ্য পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই সংস্থাটি বলছে, বিভিন্ন নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকটি চক্র। এসব চক্রের অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে ডিবি।
রাজধানীর কোতোয়ালি ও কেরানীগঞ্জে গত ৭ এপ্রিল অভিযান চালিয়ে নকল ভ্যাকসিন ও ওষুধ তৈরি চক্রের চার জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় কয়েক লাখ নকল ওষুধ, যার আনুমানিক বাজারমূল্য এক কোটি টাকারও বেশি।
অভিযানের পর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, দেশের বাজারে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা দামের কোরিয়ান এই ভ্যাকসিন কেরানীগঞ্জে তৈরি করতো একটি চক্র। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ওষুধটি মাত্র ১০ টাকার টিটেনাস দিয়ে নকল সিল বসিয়ে বাজারে বিক্রি করতো চক্রটি। শুধু হেপাবিগ নয়, এই চক্রের হাতে তৈরি হতো ভিটামিন ডি৩ অ্যাম্পুল ইনজেকশন, রেসোগাম পি, ক্লোপিকজল ডিপোর্ট, ফ্লুয়ানজল ডিপোর্ট, হেপাবিগ হেপাটাইটিস বি-সহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি নকল অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ।
মিটফোর্ড এলাকার ওষুধের মার্কেট থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ইনজেকশন তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল তারা। আর এসব ওষুধ ব্যবহারে সাধারণ মানুষের জীবনহানির মতো ঘটনা ঘটছে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, চক্রটি টিটেনাস দিয়ে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন বানাতো, ভিটামিন বি৩ বানাচ্ছিল অ্যাক্টুপিস সকেট দিয়ে এবং ক্লোপিকজল বানাচ্ছে ইন্ডিয়ান ড্রাইকিজাম অ্যাম্পুল দিয়ে। এই ওষুধগুলো নকল বানিয়ে বেশি লাভে বিক্রি করছে তারা। টিটেনাস ১০ টাকা দিয়ে কিনে হেপাবিগ বানিয়ে ৪ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি, ক্লোপিকজল পাঁচ টাকা দিয়ে বানিয়ে ডেনমার্কের ওষুধ বলে বিক্রি করছে ৪৫০ টাকা করে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের প্রয়োগ করা হয় রোসোগাম পি। এটা জেসন গ্রুপের একট্রোপিন ১০ টাকা দিয়ে কিনে রোসোগাম বানিয়ে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করতো। এভাবে বিভিন্ন ওষুধ নকল করে বাজারে ছড়িয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল তারা।
এর আগে গত মার্চে বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করার সঙ্গে জড়িত আরেকটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সংস্থাটি।
তারা বলছে, সন্তান জন্মের সময় প্রসূতি মায়েদের ব্যথা উপশমের জন্য ব্যবহার করা হয় ‘জি-পেথিডিন’ নামের একটি ইনজেকশন। অত্যন্ত সংবেদনশীল এ ওষুধটি অস্ত্রোপচারের সময় বা অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ সাত থেকে আট বছর ধরে নকল করে বাজারজাত করে আসছিল চক্রটি। প্রচলিত ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে ঘরোয়াভাবে রূপান্তর করে চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ হিসেবে চালানো হতো। অথচ ‘জি-পেথিডিন’ তৈরির জন্য শুধু অনুমোদন রয়েছে দেশীয় একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের।
গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে, ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ হিসেবে রূপান্তর করে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছিল। তারাও মিটফোর্ড এলাকা থেকে প্রতিটি ‘জি-ডায়াজিপাম’ আট টাকা দিয়ে সংগ্রহ করে আসছিলেন। কেনার পর ইনজেকশন অ্যাম্পুলকে অ্যাসিড দিয়ে ভিজিয়ে রেখে সেটির ওপরে থাকা লেখা তুলে ফেলা হয়। সেটিতে কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন নামকরণ করা হয়। এই অ্যাম্পুল প্লাস্টিকের ট্রেতে পাঁচটি করে সাজিয়ে হাতে চালানো চাপ মেশিন দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ব্যথানাশক ফয়েল পেপার সংযুক্ত করা হয়। পরে এসব নকল ‘জি-পেথিডিন’ প্রতিটি ৬০০ টাকায় বাজারজাত করা হয়।’
শুধু এসব ঘটনাই নয়, বিভিন্ন সময় নকল ওষুধ তৈরি করা ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার দায়েও গ্রেফতার ও জরিমানা করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তবু কেন এসব নকল ওষুধের সরবরাহ থামানো যাচ্ছে না, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রাজিব আল মাসুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নকল ওষুধ তৈরি করে যারা বাজারে বিক্রি করছে, এদের একাধিক চক্রের কয়েকজনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। আর যারা এসব চক্রের সঙ্গে মিশে এই অপরাধে জড়াচ্ছে, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। ইতোমধ্যে এসব চক্রের সঙ্গে বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের এক ফার্মাসিস্টের যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছি। তাকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শুধু বারিধারার এই ফার্মেসিতে নয়, গোপনে আরও বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে চক্রগুলো। এদের সঙ্গে আমরা যাদেরই সম্পৃক্ততা পাবো, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’
এ প্রসঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নকল ওষুধের কার্যকারিতা না থাকায় সাধারণ মানুষ কোনও উপকার পেতো না। বরং নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তারা এমনভাবে এসব ওষুধ হুবহু প্যাকেজ করতো, যাতে সাধারণ মানুষের চেনার উপায় নেই কোনটা আসল আর কোনটা নকল। তারা এসব ওষুধ রাজধানীর মিটফোর্ড মেডিক্যালের পাশের ওষুধের মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছিল। রাজধানীর অনেক হাসপাতালের নিচে থাকা বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব ওষুধ বিক্রি হয়। তদন্ত করে যাদের নাম পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নকল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি করে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবেও এসব লোক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে যেসব ফার্মেসি ব্যবসায়ী এসব নকল ওষুধ রেখে বিক্রি করছে, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, মুনাফার লোভে আজ এসব ওষুধ অন্যদের খাওয়াচ্ছেন, এই ওষুধই আপনার সন্তান, মা-বাবা ও পরিবারের স্বজনরা যে সেবন করবে না, তার নিশ্চয়তা কী?’
নকল ওষুধ যারা তৈরি করছে, তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে আলাদা বিচারিক ট্রাইব্যুনাল করে এদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে তাদের কালো হাত ছড়িয়ে পড়বে দেশব্যাপী। আর এর খারাপ ফল ভোগ করতে হবে সাধারণ মানুষকে।’
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…