বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় উম্মে সালমা খাতুন (৫০) হত্যাকাণ্ড নাটকীয় মোড় নিয়েছে। হাতখরচের টাকা না পেয়ে মাকে তার ছেলে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রেখেছিল বলে র্যাব যে তথ্য দিয়েছিল, তার উল্টো তথ্য রিমান্ডে দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯)। সেইসঙ্গে ফাঁসানোর কথা বলেছেন তিনি।
রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার নিহতের ছেলে পুলিশের কাছে এমন তথ্য দেন। ওই তথ্যের বরাত দিয়ে এখন পুলিশ বলছে, ছেলে নয়, বাড়ির ভাড়াটিয়ারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুপচাঁচিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত সিং।
গত রবিবার দুপুরে দুপচাঁচিয়ার জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামের চারতলা বাড়ি থেকে সালমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি দুপচাঁচিয়া দারুস সুন্নাহ কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। গ্রেফতারকৃত তার ছেলে সাদ ওই মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
গ্রেফতারকৃত তিন জন হলেন- দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের ইসলামপুর উত্তর সাজাপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর স্ত্রী মাবিয়া সুলতানা হাসি (৪১), গুনাহার ইউনিয়নের তালুচ পশ্চিমপাড়ার আবদুর রহিমের ছেলে মোসলেম উদ্দিন (২৮) ও তালুচ বাজার এলাকার নারায়ণ রবিদাসের ছেলে সুমন রবিদাস (৩০)।
এসআই সুব্রত সিং বলেন, ‘সাদ রিমান্ডে জানিয়েছেন মাকে হত্যার বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমনকি ঘটনার সময়ে বাসাতেও ছিলেন না। পরে বাসায় এসে দেখেন সব কিছু এলোমেলো। ঘর থেকে মায়ের মোবাইল এবং কিছু জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা জানা নেই। তাকে এই ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সালমার মোবাইল ও ঘর থেকে চুরি হওয়া জিনিসপত্রের সন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ ও ডিবি। হত্যাকাণ্ডের দিন ওই বাসা থেকে চুরি হওয়া ওয়াইফাই রাউটার ও মোবাইলের সূত্র ধরে সেই বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানা হাসিকে বৃহস্পতিবার রাতে আটক করা হয়। পরে মাবিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাতভর অভিযান চালিয়ে বাকি দুজনকে আটক করা হয়েছে।’
মাবিয়ার দেওয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সুব্রত সিং বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মাবিয়া বলেছেন সাত মাস আগে সালমার বাসা ভাড়া নিয়ে মাদক ও অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। বিষয়টি জেনে যাওয়ায় বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেন সালমা। ভাড়ার পাওনা টাকাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ হন মাবিয়া। এর জেরে দুই সহযোগী মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে নিয়ে সালমাকে হত্যার পর লাশ ফ্রিজে রেখে যান তারা। শুক্রবার বিকালে এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মাবিয়া।’
রিমান্ডে সাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বর্ণনা দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আজিজুর রহমান-সালমা খাতুন দম্পতির চার ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট সাদ। জয়পুরপাড়া এলাকায় আজিজিয়া মঞ্জিল নামের চারতলা বাড়ির তিনতলায় ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন এই দম্পতি। তাদের বড় দুই ছেলে ও মেয়ে ঢাকায় থাকেন। গত রবিবার সকালে নাশতা করে আজিজুর রহমান ও ছেলে সাদ মাদ্রাসায় চলে যান। দুপুরে সাদ বাড়িতে এসে দরজা বাহির থেকে তালাবদ্ধ দেখতে পান। বিকল্প চাবি দিয়ে দরজা খুলে মাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ঘরের জিনিসপত্র তছনছ দেখেন। ওয়াইফাই রাউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ না পেয়ে মায়ের মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে বন্ধ পান। ভেতরে গিয়ে দেখেন, আলমারিতে কুড়ালের আঘাত। পরে ডিপ ফ্রিজ থেকে পানির বোতল বের করতে গিয়ে দেখেন ভেতরে হাত-পা বাঁধা মায়ের লাশ। বিষয়টি বাবাকে জানান। তার বাবা পুলিশ নিয়ে বাসায় আসেন। এরপর লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের বড় ছেলে নাজমুস সাকিব দুপচাঁচিয়া থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।’
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাদকে পরদিন সোমবার রাতে কাহালু উপজেলার আড়োবাড়ি গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করে র্যাব। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিং করে র্যাব-১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. এহতেশামুল হক খান এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে মেজর মো. এহতেশামুল হক খান দাবি করেন, ‘রবিবার সকালে সাদ তার মা সালমার কাছে হাতখরচের টাকা চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সকালের নাশতা না খেয়েই মাদ্রাসায় চলে যান। বেলা ১১টার দিকে ক্লাসের বিরতিতে বাসার কাছাকাছি কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ান। একপর্যায়ে মাকে হত্যার কথা ভাবেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাসায় গিয়ে দেখেন যে তার মা বটি দিয়ে তরকারি কাটছেন। সাদ পেছন দিক থেকে মায়ের নাক-মুখ চেপে ধরেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মায়ের হাতে থাকা বটি লেগে ছেলের হাতের তর্জনির নিচে সামান্য কেটে যায়। পরে নাক-মুখ দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।’
ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ‘হত্যার পর সাদ মায়ের দুই হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে লাশ বাসার ডিপ ফ্রিজের ভেতর রেখে দেন। এরপর ডাকাতির ঘটনা সাজানোর জন্য বাসায় থাকা কুড়াল দিয়ে আলমারিতে কোপ মেরে কুড়াল সেখানে রাখেন। এরপর বাসার প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বের হয়ে যান। পরে আবার বাসায় ঢুকে বাবা আজিজুর রহমানকে কল করে জানান যে তার মাকে বাসায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আজিজুর দ্রুত বাসায় এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। খবর পেয়ে সালমার ভাইসহ প্রতিবেশীরা ছুটে এলে সাদও খোঁজাখুঁজির নাটক করেন। একপর্যায়ে সাদ নিজেই ফ্রিজের ঢাকনা খুলে লাশ বের করেন।’
ওই দিনই সাদকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুপচাঁচিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সালমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বড় ছেলে বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। হত্যায় জড়িত সন্দেহে তার ছোট ছেলে সাদকে গ্রেফতারের পর থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। বুধবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করা হয়। কিন্তু আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া সিদ্দিকা তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুব্রত সিং বলেন, ‘রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন সাদ র্যাবের কাছে দেওয়া স্বীকারোক্তি অস্বীকার করে ফাঁসানোর কথা বলেন। তার দেওয়া তথ্য অনুসারে ডিবি ও পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সালমার চুরি হওয়া দুটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে হত্যার রহস্য উন্মোচন এবং হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে। বৃহস্পতিবার রাতভর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। প্রথমে নিহতের বাড়ির চারতলা থেকে মাবিয়াকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উপজেলার চালুচ গ্রাম থেকে মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে সালমার দুটি মোবাইল, তাদের বাড়ির ইন্টারনেট রাউটার ও ঘরের একটি চাবি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে সালমাকে হত্যার পর লাশ ফ্রিজে রাখার কথা স্বীকার করেন। বিষয়টি ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়ির জিনিসপত্র তছনছ এবং আলমারিতে কুড়াল দিয়ে কোপ দেওয়ার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। শুক্রবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের জবাববন্দি রেকর্ড করা হয়।’
এ ব্যাপারে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘মাবিয়া প্রায় সাত মাস আগে উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের বাড়ির চারতলায় বাসা ভাড়া নেন। তিনি তার দুই সহযোগীকে নিয়ে ওই বাসায় অনৈতিক কাজ ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও অপরাধ করে আসছিলেন। বিষয়টি জেনে সালমা তাকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেন। মূলত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহতের দুটি মোবাইল ফোন, বাড়ির রাউটার ও ঘরের চাবি তাদের কাছে পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলের সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে চার্জশিট থেকে নাম বাদ হবে। তখন ছাড়া পাবেন।’
কোন তথ্যের ভিত্তিকে নিহতের ছেলেকে এ ঘটনায় জড়ানো হয়েছে জানতে শুক্রবার বিকালে র্যাব-১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. এহতেশামুল হক খানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। এমনকি তার হোয়াটসঅ্যাপে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও কোনও উত্তর দেননি।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…