Categories: Bangladesh News

ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের মতো চলবে মিঠুর ‘সোশ্যাল জলি’


ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের মতো একটি নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরি করেছেন পাবনার ঈশ্বরদীর সন্তান মিঠু ইসলাম। নাম ‘সোশ্যাল জলি’। ইতোমধ্যে সামাজিক প্লাটফর্মটির অ্যাপ ‘প্লে স্টোরে’ ওপেন করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে আকর্ষণীয় সব ফিচার। যা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো ব্যবহার করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এখানে রয়েছে ফ্রিতে টেলিভিশন দেখা আর অনলাইনের মাধ্যমে আয় করার সুযোগ।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মারজানী গ্রামের কৃষক তক্কেল আলী ও মিনারা খাতুন দম্পতির ছেলে মিঠু ইসলাম। পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মিঠু। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় মিঠু।

জানা গেছে, ২০১২ সালে কালিকাপুর আব্দুল জব্বার খান স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন মিঠু। পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ২০১৬ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন তিনি। ২০২১ সালের মার্চে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রোসাটম কোম্পানিতে যোগ দিয়ে বর্তমানে সেখানেই কর্মরত আছেন তিনি।

আলাপকালে মিঠু ইসলাম বলেন, ‌‘আ‌মি পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। পাশাপাশি অনলাইন থেকে আয় করার চিন্তা করি। ইউটিউবে ভিডিও দেখতে দেখতে জানতে পারলাম মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে মাসে ভালো টাকা আয় করা যায়। ভিডিওটা শেষ পর্যন্ত দেখার পর নিজেই একটা অ্যাপ তৈরির কথা ভাবি। এ বিষয়ে ভারতের একটি ডেভেলপার কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করি। পরে তাদের সাথে কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘সোশ্যাল জলি’ অ্যাপটির ধারণা তৈরি করতে সক্ষম হই। ভারতের ডেভেলপার কোম্পানি আমার অ্যাপটি তৈরি করে দেয়।

মিঠু আরো বলেন, এই সোশ্যাল জলি অ্যাপটিতে ১৬টি ফিচার রয়েছে। এটি কোনো জুয়ার সাইট নয়। এটি একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। মানুষ যেভাবে ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে, সেভাবে সোশ্যাল জলি অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন। এটার মধ্যে অনেকগুলো অপশন আছে। তার মধ্যে ভালো কিছু অপশন রাখা হয়েছে। ফ্রিতে টেলিভিশন দেখার অপশন আছে। সেইসঙ্গে ব্যবহারকারীরা যতক্ষণ সোশ্যাল জলিতে সময় কাটাবেন তার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। এই সুবিধা অন্য কোনো অ্যাপে নেই। আয়ের টাকাটা জমা হবে তার নিজের অ্যাকাউন্টে ডলার হিসেবে। আর সেই ডলার দেশীয় কারেন্সি অনুযায়ী নগদ, বিকাশ, রকেট অথবা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সে যেভাবে চায় সর্বনিম্ন ৫০ ডলার হলে উত্তোলন করতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের শেষের দিকে ভারতের ওই কোম্পানির সাথে যোগাযোগ হয়। তখন অ্যাপটির আইডিয়া তৈরি করি। তারা তৈরি করে দেয়। কয়েকমাস হলো অ্যাপটি চালু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভালোই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

মিঠু ইসলাম বলেন, এই সোশ্যাল জলির মধ্যে রাখা ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে শপ। নিজে নিজে অনলাইনে ব্যবসা করতে পারবেন। প্রতিদিন জবের সার্কুলার আসবে। চ্যাটজিপিটি, পডকাস্ট, টেলিভিশন, রিলস, ভিডিও, হাইলাইট, কম্পিটিশন, ক্লাব, স্টোরিসহ বিভিন্ন ফিচার রাখা আছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম যেমন ব্যবহার করবে, সোশ্যাল জলিও সেভাবে ব্যবহার করবে। সেইরকম চিন্তাভাবনা করেই ফিচারগুলো দেওয়া যাতে ব্যবহারকারীরা একটি অ্যাপের মধ্যে অনেকগুলো ফিচার পেতে পারেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মিঠু ইসলাম বলেন, সর্বপ্রথম সোশ্যাল জলি অ্যাকাউন্টটাকে ভেরিফাইড করতে হবে। এরপর সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে একটা লাইসেন্স নিতে হবে। যাতে আমার অ্যাপসটি দীর্ঘমেয়াদী হয়। যখন এটি বড় একটি প্লাটফর্ম হবে, তখন এখানে জনবল নিয়োগ হবে, অনেক যুবকের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা হবে।

মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুক থেকে যেভাবে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, আমিও তেমন সম্মান অর্জন করতে চাই উল্লেখ করে মিঠু বলেন, আমার অ্যাপ্লিকেশনটি বাংলাদেশসহ ১৭৬টি দেশে অনুমোদিত আছে। বিশ্বকে আমি দেখাতে চাই, বাংলাদেশের বুক থেকে একজন মানুষ এমন একটি অ্যাপ তৈরি করেছে। আমি দেশবাসীর কাছে চাইবো আপনারা আমার সোশ্যাল জলি অ্যাপটি ব্যবহার করুন। দেশি উদ্ভাবনকে সহযোগিতা করুন। সবাই ব্যবহার করলে আমার উদ্ভাবনটা সার্থক হবে।

ইতোমধ্যে স্থানীয় তরুণ-যুবকের মাঝে সাড়া ফেলেছে সোশ্যাল জলি অ্যাপ। আন্তর হোসেন ও আশরাফুল ইসলাম বলেন, মিঠুর এই আবিষ্কারে তারা খুব গর্বিত। অনেক উন্নত দেশ যেমন উত্তর কোরিয়া কিংবা চায়না তারা কিন্তু ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম সোশ্যাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে না। ওরা তাদের নিজস্ব সোশ্যাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে। তেমনটি বাংলাদেশের মানুষ যদি নিজেদের তৈরি নতুন অ্যাপ সোশ্যাল জলি সবাই ব্যবহার করে তাহলে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। সরকার যদি সহযোগিতার হাত বাড়ায় তাহলে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে।

এমন উদ্ভাবন একটি ভাল উদ্যোগ বলে মনে করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ট্রিপল-ই) বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে তরুণ, যুবক, শিক্ষার্থী যারা আছে তারা অনুপ্রাণিত হবেন। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব বলে মনে হয়। এ ধরনের কাজে সরকার এগিয়ে আসলে আরো ভাল হবে। ভার্চুয়ালি যে জিনিসগুলো তৈরি হচ্ছে, তাদের জন্য (যারা তৈরি করছেন) প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় যদি পদক্ষেপ নেয় তাহলে আরো উদ্যোক্তা তৈরি হবে।

প্রসঙ্গত, যে কেউ গুগল প্লেস্টোর থেকে অ্যাপটি ইনস্টল করার পর রেজিস্ট্রেশন করে ব্যবহার করতে পারবেন। প্লে স্টোরের লিংক-  https://play.google.com/retailer/apps/particulars?id=com.bm.socialjolly



Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago