Categories: Bangladesh News

‘ফেলে আসা দিনগুলো স্বপ্নের মতোই মনে হয়’


১৯৫৪ সালের এই দিনে (৪ সেপ্টেম্বর) পৃথিবীর আলোয় চোখ মেলেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। আজ এই শিল্পী পেছনে ফেলে এলেন ৭০ বছরের বর্ণাঢ্য জীবন। ৭১ বছরে পা রেখে সংগীতের এই সূর্যকন্যা মনে করেন, ফেলে আসা দিনগুলো স্বপ্নের মতো মনে হয় তার কাছে।

১৯৬৭ সালে জহির রায়হানের ‘আগুন নিয়ে খেলা’ ছবিতে আলতাফ মাহমুদের সংগীত পরিচালনায় মাত্র ১৩ বছর বয়সে প্রথম প্লেব্যাক করেন সাবিনা ইয়াসমিন। আর পেছনে তাকাতে হয়নি। একজীবনে তিনি মোট কত গান গেয়েছেন সেই হিসেবটাও নেই তার কাছে। 

পাঁচ দশকের সংগীত ক্যারিয়ার প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‌‘গানে গানে কীভাবে এত বছর কেটে গেল তা টেরই পাইনি। ফেলে আসা দিনগুলো আমার কাছে স্বপ্নের মতোই মনে হয়। মায়ের অনুপ্রেরণা আর বোনদের গাইতে দেখে ছোটবেলায় গানের তালিম নেওয়া শুরু করেছিলাম। এরপর থেকে গান করেই চলেছি। গানের মাধ্যমে পাওয়া অগণিত মানুষের ভালোবাসাই আমাকে এগিয়ে চলার শক্তি জুগিয়েছে। বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে কতো গান গেয়েছি, সঠিক হিসাব নিজেরও জানা নেই।’ 

গাওয়ার স্বীকৃতি হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিন পেয়েছেন ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ স্বাধীনতা পুরস্কার আর একুশে পদকও।

জন্মদিনের প্রসঙ্গ টানতেই শৈশবে ফিরে গেলেন, ‘ছোটবেলায় জন্মদিন ঘিরে কতো পরিকল্পনা থাকতো। এখন আর তেমন কিছু ভাবি না। অন্য সব দিনের মতো এ দিনটিও পার করতে চাই। প্রতি বছর ভক্ত-শ্রোতা আর প্রিয়জনের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হই। এবারও হয়তো তেমন কিছুই হবে।’

সংগীতের চলমান সময় নিয়ে মোটেই খুশি নন সাবিনা ইয়াসমিন। তার ভাষায়, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব পাল্টে যাচ্ছে। সিনেমায় গল্প বলার ধরন পাল্টে গেছে। আগের মতো গুণী নির্মাতা, সংগীত পরিচালক আর নেই। তাই তো গানসমৃদ্ধ ছবি নির্মাণ নেই বললেই চলে। গানের জন্যই ছবি হিট হয়, এ বিষয়টি এখন আর নেই। কিন্তু একটা সময় ছিল, যখন মানুষ শুধু গানের জন্যই প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছেন। সেসব দিন হারাতে বসেছি আমরা। ‘সে যে কেন এলো না’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘দুঃখ ভালোবেসে’, এমন অসংখ্য গান শ্রোতাদের মুখে আজও ফিরছে। সময়ের প্রবাহে গানগুলো পেয়েছে কালজয়ীর মর্যাদা। এখন তো এসব সৃষ্টি আর নেই।’’ 

আগের মতো সৃষ্টি কেন হচ্ছে না সেই ব্যাখ্যাটাও দিলেন তিনি। বললেন, ‘এখন সব কিছুতেই চলছে বাণিজ্যিকীকরণ। তাড়াহুড়া করে সবাই কাজ করছে। গানের চেয়ে ভিডিওর প্রতি সবার মনোযোগ। ফলে ভালো গান হচ্ছে না। খেয়াল করে দেখবেন, গত ১০ বছরে সিনেমায় ম্যাসিভ হিট কোনও গান আমরা পেয়েছি? পাইনি। মাঝেমধ্যে দু-একটি গান কানে বাজলেও কয়েকদিন পরই শ্রোতারা ভুলে যাচ্ছে। এখন নতুন প্রজন্মের নির্মাতারা ভালো ভালো কাজ করছেন ঠিকই। আশা করছি, তারা গানের বিষয়গুলো নিয়েও ভাববেন।’

এই প্রজন্মের সংগীতশিল্পীদের নিয়েও সাবিনা ইয়াসমিনের মনে রয়েছে হতাশা। তরুণ শিল্পীদের লক্ষ্য করে এই কোকিলকণ্ঠী বলেন, ‘এ সময়ের অনেক তরুণ শিল্পীই বেশ ভালো কাজ করছেন। তবে তাদের অনেকেই জানেন না- কী করতে হবে, আর কী করা যাবে না। যে এটুকু বুঝতে পারবে, সে সামনে আগাবে। নয় তো ঝরে যাবে।’

সাবিনা ইয়াসমিনের বাবা লুৎফর রহমান ব্রিটিশ রাজের অধীনে সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মা বেগম মৌলুদা খাতুন। পৈতৃক বাড়ি সাতক্ষীরায়। তার পাঁচ বোনের মাঝে চার বোনই সংগীতের সাথে যুক্ত। তারা হলেন ফরিদা, ফৌজিয়া, নীলুফার ও সাবিনা। তার আরেক বোন নাজমা ইয়াসমিন। তার ভগ্নীপতি চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা, সুরকার খান আতাউর রহমান এবং তার ভাগ্নে সংগীতশিল্পী-অভিনেতা আগুন। সাবিনা ইয়াসমিনের কন্যা বাঁধনও গান করেন। 

সাবিনা ইয়াসমিন তার বাবার চাকরির সূত্রে নারায়ণগঞ্জে বেড়ে ওঠেন। শৈশব থেকে তিনি গানের পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন। তার বাবা রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। মা মুর্শিদাবাদে সে সময়ের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ ও ওস্তাদ কাদের বক্সের কাছে গান শিখতেন। তার বড় বোন ফরিদা ও ফৌজিয়া দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত শিখতেন। তিনি ও নীলুফার ইয়াসমিন তাদের সাথে বসতেন। তার মা তাকে তালিমে সহায়তা করতেন এবং হারমোনিয়াম বাজিয়ে সঙ্গ দিতেন। হারমোনিয়াম বাজিয়ে তার শেখা প্রথম গান ছিল ‘খোকন মনি সোনা’। এছাড়া মায়ের কাছ থেকে তিনি সুপ্রীতি ঘোষের কয়েকটি গান শিখেন। মাত্র সাত বছর বয়সে তিনি প্রথম মঞ্চে গান করেন। পরবর্তীকালে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে একটানা ১৩ বছর শাস্ত্রীয় গানের তালিম নিয়েছেন।

১৯৬৪ সালে সাবিনা ইয়াসমিন বেতারে ছোটদের গানের অনুষ্ঠান খেলাঘর-এ নিয়মিত অংশ নিতেন। এই অনুষ্ঠান থেকে তার প্রথম সম্মানী ছিল ১০ টাকা। এই অনুষ্ঠানে তার সঙ্গী ছিলেন আরেক কিংবদন্তি শাহনাজ রহমতুল্লাহ। শিশুশিল্পী হিসেবে তারা দুজন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের কাছ থেকে পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। সাবিনা ইয়াসমিন রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার প্রতিবেশীর বাড়িতে আলতাফ মাহমুদ আসেন। মাহমুদ তখন চলচ্চিত্রের সংগীত ও সুরায়োজন করতেন। তার মা ও তিনি চলচ্চিত্রের গানের সুযোগ দেওয়া অনুরোধ করেন এবং মাহমুদ তাকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৬৭) চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার সুযোগ দেন।

সাবিনা ইয়াসমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তার সহপাঠী ছিলেন শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল খুকী।


👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago