লাটাগুড়িতে আমাদের সঙ্গে পরিচয় হয় নির্মাল্য রায়ের সঙ্গে। জন্মসূত্রে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলার অধিবাসী। বাবা সরকারি চাকরিজীবি আর মা গৃহবধূ। ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রাভেল ম্যানেজমেন্টে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে তিনি এখন লাটাগুড়িতে বাস করছেন। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত, তার রয়েছে একটি ‘বার্ড আই’ নামের হোম স্টে। খুবই নিরিবিলি ছিমছাম পরিবেশ, আর অসাধারণ খাবার! যা পর্যটকদের দৃষ্টিকাড়ে। লাটাগুড়িতে আমরা তার হোম স্টেতে ছিলাম। তিনি নেশায় আলোকচিত্রী; সেই সূত্রেই ঘনিষ্ঠতা।
বাকিটা তার কাছ থেকেই শুনুন। তিনি বললেন, যদিও ক্যামেরা হাতে ছবি তুলবার সময় আমি কিছুটা রক্ষণশীল, কারণ আমার পছন্দ শুধুই প্রকৃতির চালচিত্রে ভারতীয় উপমহাদেশের পক্ষীকুল। তাই আজ শ্যামলীমার টানে, হাজারো পাখির সন্ধানে আমি নতুন এক জগৎ খুঁজে নিয়েছি আমার স্বপ্নসম এই হোম স্টেতে। আমার শান্ত নিলয়, যেখানে আমার মনের আনন্দ, চোখের আরাম আর ক্লান্তির অবসান। আমি আজ দক্ষিণ থেকে উত্তরে, ভাগীরথীর গাম্ভীর্য ছেড়ে উচ্ছ্বল তিস্তা পাড়ের মোহময়ী ডুয়ার্স- এর ঘন সবুজ বনানীর ঘেরাটোপের মায়ায় ছোট্ট জনপদ, লাটাগুড়ির অভিবাসী।
নিউ জলপাইগুড়ি জংশন স্টেশন ছাড়িয়ে সড়ক পথে মাত্র এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে এলেই এই স্বপ্নভূমির শুরু, যার শেষ সেই ‘পাহাড়ের রানি’ দার্জিলিংয়ের কোলে। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ, মাঝে বুক চিড়ে যাওয়া ইস্পাত কালো পথ। এখানে নীরবতা ভাঙে শুধুই পাখির কলতান, এখানে বসন্ত রাজা, আর বর্ষা বিরাজ করে পাটরানির মহিমায়। খোলা আকাশের নিচে হাতিদের বৃংহিত, ময়ূরের কেকা, চিতার গর্জন এখানে বন্য পশুপাখির মুক্তি সুখের উল্লাস ধ্বনি। বাইসন আর গন্ডারদের দৃপ্ত ভঙ্গিমায় এখানে জেগে থাকে বিদ্রোহ চেতনার আবেগ, স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক। গরুমারা, চপড়ামারি, জলদাপাড়ার জঙ্গল আমাদের জাতীয় উদ্যানগুলির অন্যতম, আমাদের জাতীয় সম্পদ। তিস্তা-তোর্সা-করলা-ধরলা-মূর্তি-রঙ্গিত-কালচিনির আবেশে জড়ানো কলমে লেখা নদীদের স্বরলিপির মূর্ছনায় ডুয়ার্সয়ের বাতাসে ভেসে বেড়ায় এক নীরব সংগীত মুখরতা। দিগন্ত বিস্তৃত চা বাগান, আর দূরে মেঘের ঘোমটার আড়াল থেকে হঠাৎ বেরিয়ে আসা কাঞ্চনজঙ্ঘার চকিত চাহনির মায়ার টানে এখানে আসতে মন চাইবে বারবার। গাজোলডোবার স্নিগ্ধতায়, তিস্তার বুকে পরিযায়ী পাখির বাহারি রঙের মেলায় নিজেকে হারানোর আনন্দ অপার্থিব।
সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে আজ আমি পেশায় একজন পর্যটন উপদেষ্টা এবং ব্যবসায়ী। পরিসীমার আয়তে নয়, আমি পরিষেবার পরিসর আর আন্তরিকতার গভীরতায় বিশ্বাসী। অতিথিদের স্বাস্থ্যকর, সুরক্ষিত পরিবেশ, রুচিকর খাদ্য পরিবেশন আর পর্যটনে যাবতীয় সাহায্য করতে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। আর সঙ্গে থাকছে আমার সাথে ঘুরে পাখি দেখা আর পাখির ছবি তোলার সুযোগ। এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার সুবর্ণ সুযোগ। ঘন জঙ্গলের মাঝ দিয়ে সরু আঁকাবাঁকা ভিজে পথ, হাতে ক্যামেরা, নজর খুঁজছে গাছের ডালে, পাতার আড়ালে- এই বুঝি দেখা দিল একটা গ্রীন বিল্ড কালকোহা কিংবা রংবাহারি ইন্দোচাইনিজ রোলার, ক্লিক! হ্যা, সময় খুব কম পাওয়া যায় পাখি ফ্রেমে বন্দি করতে।
এগিয়ে চলুন, আরো, নজর রাখুন, দৃষ্টিকে করুন আরোও তীক্ষ্ণ, ওই দেখুন জলার ধারে মাছের মায়ায় সুন্দরী মাছরাঙার শবরীর প্রতীক্ষা ক্লিক্! আহা সে কি ভালোলাগা! গরুমারার গহনে, চাপরামারির আলো আঁধারীর খেলায় পায়ে হেঁটে শুধুই ধৈর্যের পরীক্ষা। চলুন এবার ঘুরে আসি গাজোলডোবার দিকে, মাঝি রেডি। নিয়ে যাবে আমাদের তিস্তার বিভঙ্গে, জলের ওলিগলি পথে। সেখানে হয়তো অপেক্ষায় আছে সপরিবারে বার হেডেড গুজ , লিটিল রিংড প্লোভার, রেড ক্রেস্টেড পচার্ড, গ্রেট ক্রেস্টেড গ্রেবি। আরোও চলুন, ওই দিকে দেখুন! ঝাঁকেঝাঁকে নামজানা- না জানা পরিযায়ী পাখির দল। কি তাদের রূপ, কি উড়বার ভঙ্গিমা- ক্লিক্! ক্লিক্! আরে ওটা তো চেনা! রুডি শেলডাক অসাধারণ রং-উফ্! জীবন না ক্যামেরার চোখকে আজ সার্থক তার লড়াই চলবে অনেক দিন।
এবার আসি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, কীভাবে আসবেন, কোথায় থাকবেন, কী দেখবেন? প্রথমেই বলে রাখি লাটাগুড়ির নিজস্ব কোনো এয়ারপোর্ট নেই। শিলিগুড়ির বাগডোগরা এয়ারপোর্ট একমাত্র কাছাকাছি এয়ারপোর্ট। এয়ারপোর্টের বাইরে এসে বেশ কিছু ছোট ও বড় গাড়ির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাবে, এ ছাড়াও রিসোর্ট বা হোম স্টের সঙ্গে গাড়ির কথা বলে রাখলে সেখান থেকেই গাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এয়ারপোর্ট থেকে লাটাগুড়ির দূরত্ব ৬৫ কিমি, গাড়িতে সময় লাগবে প্রায় ২ ঘণ্টা।
আর ট্রেনে এলে পৌঁছোতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে, স্টেশনের বাইরে অনেক গাড়ি থাকে এবং রিসোর্ট বললে তাদের গাড়িও ২ ঘণ্টার পথ অনায়াসে জঙ্গল পার করে পৌঁছে দেবে লাটাগুড়িতে। সড়কপথে এলে চ্যাংড়াবান্ধা বর্ডার হয়ে আসতে হবে, বর্ডার থেকে দূরত্ব ৪১ কিমি। সময় লাগবে প্রায় ১.৩০ ঘণ্টা।
লাটাগুড়িতে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের সরকারি ও বেসরকারি রিসোর্ট ও হোম স্টে। অল্প খরচেই পেয়ে যাবেন ঘরোয়া খাওয়া ও থাকার পরিষেবা, সঙ্গে নিজ খরচায় উপভোগ করতে পারবেন আদিবাসী নৃত্য। ইন্টারনেটের যুগে অনলাইনেই পেয়ে যাবেন লাটাগুড়ির নানান রিসোর্ট ও হোম স্টের তথ্য ও যোগাযোগের নম্বর।
লাটাগুড়িতে ঘুরে আসার আদর্শ সময় সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখ থেকে জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত, বাকি ৩ মাস জঙ্গল বন্ধ থাকে। তখন না আসাই ভালো। লাটাগুড়ির প্রধান প্রাণকেন্দ্র হলো গরুমারা জাতীয় উদ্যান, এখানে জঙ্গলের নিজস্ব জিপ রয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় ২২০০ টাকার বিনিময়ে গাইডসহ ছয়জন জঙ্গলে প্রবেশ করতে পারবেন। জঙ্গলে বন্যপ্রাণীর মধ্যে রয়েছে – বুনো হাতি, বাইসন, গন্ডার, লেপার্ড, হরিণ ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
প্রধানত শীতকালে এখানে জঙ্গলের আশেপাশে ও জঙ্গল লাগোয়া বেশকিছু এলাকায় স্থানীয় ও পরিযায়ী পাখির আনাগোনায় সেই সময় বার্ড ফটোগ্রাফির জন্য ভালো। এ ছাড়াও গাড়ি রিজার্ভ করে ঘুরতে যাওয়ার মতো বেশ কিছু স্থান রয়েছে। যেমন একদিন যেতে পারেন ৭ ভিউ পয়েন্ট, এখানে দেখতে পাবেন মূর্তি নদী, ঝালং ভিউ পয়েন্ট, বিন্দুয়া ভারত ভুটানের এক অন্যতম বর্ডার এলাকা, সামসিং চা বাগান, সুলতানখোলা, রকি আইল্যান্ড এবং লালিগুরাস। অন্য একদিন যেতে পারেন, বক্সা-জয়ন্তী বা পাহাড়ের সৌন্দর্যে মোরা লাভা-রিসপ্ কিংবা জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, কোচবিহার রাজবাড়ী ইত্যাদি।
সবশেষে বলতে চাই, যারা প্রাকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের পাশপাশি বার্ড এবং ওয়াইল্ড ফটোগ্রাফি করতে চান তাদের জন্য লাটাগুড়ি হতে পারে আদর্শ স্থান। আর আমি আছি আপনাদের সেবা দেওয়ার জন্য। (শেষ)
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…