রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা রানা। দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেলে ‘সাংবাদিক’ স্টিকার লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান। চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একই মহল্লার বাসিন্দা মাঈনুদ্দিন। স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তবে নিজের মোটরসাইকেলে ‘সিটি করপোরেশন’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে রাখেন। শুধু রানা বা মাঈনুদ্দিন নয়, রাজধানীতে হাজারো মানুষ তাদের গাড়িতে পুলিশ, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ নানা পেশার নাম লিখে বা বিভিন্ন বাহিনী, সরকারি-আধা সরকারি সংস্থার স্টিকার ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিচ্ছেন। কেউ কেউ এভাবে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত ২৮ এপ্রিল এক সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম ও ট্রাফিক বিভাগকে ভুয়া স্টিকারযুক্ত যানবাহনে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, অনেক অপরাধী তাদের গাড়িতে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার স্টিকার লাগিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই স্টিকারযুক্ত গাড়ি দেখলে যাচাই করে দেখতে হবে। ভুয়া স্টিকার ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।
এরই ধারাবাহিকতায় ১ মে থেকে অভিযান শুরু হয়। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে স্টিকারযুক্ত যানবাহনে অভিযান চালাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ ও থানার ডিউটিরত পুলিশ সদস্যরা। স্টিকার সম্পর্কিত তথ্যের পাশাপাশি গাড়ির কাগজপত্রও যাচাই-বাছাই করছেন তারা। এই অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (৫ মে) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোড়ে মোড়ে পুলিশি অভিযান দেখা যায়। সকালে ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সামনে ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) জহির মজুমদারসহ কয়েকজন ট্রাফিক সার্জেন্টকে স্টিকারযুক্ত গাড়িগুলোকে থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে দেখা যায়। এসময় তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের চলমান অভিযানে স্টিকারযুক্ত গাড়ির সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। ভুয়া স্টিকার গাড়িকে নিয়মিত মামলার পাশাপাশি সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
কারওয়ান বাজার ও বাংলামোটর এলাকায় দেখা মেলে একই চিত্র। স্টিকারযুক্ত কোনও যানবাহন পেলেই তার বৈধতা যাচাই করা হচ্ছে। এই এলাকায় বেলা দেড়টা পর্যন্ত প্রায় ৫০টি গাড়ির স্টিকার ব্যবহারের বৈধতা ও গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয় বলে জানান পুলিশ সদস্যরা। এর মধ্যে ২০টি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং গাড়ির স্টিকার খুলে ফেলা হয়েছে।
মগবাজার, রামপুরা ও হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালাতে দেখা যায়। হাতিরঝিল এলাকায় নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, গাড়িগুলোতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় পুলিশ, সাংবাদিক আর মন্ত্রণালয়ের স্টিকার। তবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে কেউ সঠিক জবাব দিতে পারেন না। এমনকি এই গাড়িগুলোতে লাগানো স্টিকার বা লোগোর প্রতিষ্ঠানে তারা কাজও করেন না। বন্ধু-আত্মীয়স্বজনের নামে সড়কে প্রভাব খাটাতে গাড়ি নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন স্টিকার লাগানো ব্যক্তিরা। প্রমাণ পাওয়ায় এমন সবারই বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইনে মামলা করা হয়েছে।
বাড্ডা এলাকায় ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মো. দেলোয়ার হোসেনসহ ট্রাফিক সার্জেন্ট সদস্যরা সড়কের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি স্টিকারযুক্ত গাড়িগুলোতে বিশেষ অভিযানও চালাচ্ছেন। কোন ধরনের স্টিকারযুক্ত গাড়ি বেশি পাওয়া যাচ্ছে এমন প্রশ্নে দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের স্টিকারের গাড়ি বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি রাইড শেয়ার করে এমন মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারগুলোতেও স্টিকার লাগিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা পুলিশ কিংবা অন্য কোনও সংস্থায় চাকরি করেন এমন ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের গাড়িকেও ছাড় দিচ্ছি না। ভুয়া স্টিকার ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিকালে পান্থপথ, রাসেল স্কোয়ার ও কলাবাগান এলাকায় দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা স্টিকার লাগানো গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করছেন। অধিকাংশ যানবাহনেই পুলিশ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের স্টিকার লাগানো। গাড়িতে ভুয়া স্টিকার থাকলে সেগুলো খুলে ফেলার পাশাপাশি জরিমানাও করছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট সদস্যরা।
এদিকে গত কয়েক দিনের চলমান অভিযানের বিষয়ে রবিবার সকালে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির দক্ষিণ ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, গত ১ থেকে ৪ মে পর্যন্ত চার দিনে অবৈধ স্টিকার লাগানোর অপরাধে ৩৬৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ৪৬১টি এবং ১ হাজার ৩৫০টি ডাম্পিং গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এই সময়ে ৩ হাজার ১৭৪ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।
মেহেদী হাসান বলেন, মামলা দেওয়ার পাশাপাশি অনুমোদনহীন গাড়িকে জরিমানাও করা হচ্ছে। পাশাপাশি গাড়িগুলোতে যেসব প্রতিষ্ঠানের স্টিকার পাওয়া যাচ্ছে, কোন কর্মকর্তার আত্মীয়দের গাড়িতে স্টিকার পাওয়া যাচ্ছে সে বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছি।
অবৈধ স্টিকারের জন্য গাড়িকে কত টাকা জরিমানা করা হচ্ছে বা মোট কত টাকা জরিমানা করা হলো তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে মেহেদী হাসান জানান, অনুমোদনহীন গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে সড়ক আইনের ৯২ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান ডিএমপি ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সড়কর পরিবহন আইনের ৯২ ধারা অনুযায়ী, লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি ১ থেকে ৩ মাসের কারাদণ্ড বা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা যাবে।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন
আরও পড়ুন-
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
অননুমোদিত স্টিকারে ৩৬৩ মামলা, দুই হাজার গাড়ি ডাম্পিং: ট্রাফিক পুলিশ
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…