Categories: Bangladesh News

পুলিশ কনেস্টেবল নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য!


পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগে ভুল উত্তর দিয়েও উত্তীর্ণ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। মূলত তারা ঘুষ দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করে মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) সুব্রত কুমার হালদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনসহ দুর্নীতির অভিযোগে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মাদারীপুর জেলা দায়রা জজ আদালতে দুদকের উপ-পরিচালক মো.হাফিজুল ইসলাম এ চার্জশিট দাখিল করেন। এর আগে লিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য শারীরিক ও লিখিত পরীক্ষা শেষে ২০১৯ সালের ২৬ জুন পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টবল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্রে জানা গেছে, চার্জশিটভুক্ত আসামি অন্য আসামিরা হলেন- বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল মো. নুরুজ্জামান সুমন, জাহিদুল ইসলাম, মাদারীপুর জেলা পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পিয়াস বালা ও সাবেক টিএসআই গোলাম রহমান। তবে মামলার ছয় আসামির মধ্যে মাদারীপুরের সাবেক টিএসআই (টাউন সাব-ইন্সপেক্টর) মো. হায়দার ফরাজীর নাম আসেনি চার্জশিটে।

এর আগে বুধবার (৫ জুলাই) মাদারীপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এরও আগে গত ৭ মে কমিশন থেকে মামলার অনুমোদন দেয়া হয়েছিল।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, দুদকের অনুসন্ধানকালে মাদারীপুর পুলিশ সুপার অফিস থেকে জব্দ করা ৩২টি লিখিত পরীক্ষার খাতা ও আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১৭ জন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট ১ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন আসামিরা। দুদকের অনুসন্ধানেও আসামিদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৬১/৪২০/১০৯ ধারা এবং তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৬ হাজার ৮০০ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৮৮০ জন নারীসহ মোট ৯ হাজার ৬৮০ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ২৮ মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ঢাকা রেঞ্জের অধীনে মাদারীপুর জেলায় সাধারণ পুরুষ ১৬ জন ও সাধারণ নারী ৩ জন এবং বিশেষ কোটায় ১৫ জন পুরুষ ও ২০ জন নারীসহ মোট ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

যেখানে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। যার সভাপতি ছিলেন মাদারীপুর জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার আসামি সুব্রত কুমার হালদার। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রথম পরীক্ষার প্রথম ধাপ হিসেবে ২০১৯ সালের ২২ জুন শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৯৩ জন, যাদের মধ্যে ৩৬৪ জন প্রার্থী শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় পরীক্ষা বা দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে ওই বছরের ২৩ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের সুপারিশ করে নিয়োগ কমিটি। ওই নিয়োগ চলাকালে ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার অবৈধ ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানায় ছয়টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। বিষয়টি পুলিশ সদরদপ্তর প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে এবং আদালত পরবর্তীকালে সেটি দুদকে পাঠায়।

চার্জশিটে দুদক আরও জানায়, সংস্থাটির তদন্তে মাদারীপুর পুলিশ সুপার অফিস থেকে জব্দ করা ৩২টি লিখিত পরীক্ষার খাতা ও আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১৭ জন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট এক কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঘুস নেন আসামিরা। দুদকের অনুসন্ধানেও আসামিদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১/৪২০/১০৯ ধারা এবং তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের তদন্তে দেখা যায়, জব্দকৃত ৩২টি লিখিত পরীক্ষার খাতা ও আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ৩২ জন চাকরিপ্রার্থীর লিখিত পরীক্ষার খাতার প্রথম পৃষ্ঠার নিচে ডান কোণায় (॥) অথবা (॥॥) অথবা (-) চিহ্ন দেয়া আছে। পরীক্ষার্থীদের পাস করানোর অসৎ উদ্দেশে লিখিত পরীক্ষার খাতার প্রথম পৃষ্ঠার নিচে ডান কোণায় একটি বিশেষ চিহ্ন (॥) দেয়ার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষার্থীরা তাদের খাতার প্রথম পৃষ্ঠার নিচে ডান কোণায় (॥) অথবা (॥॥) অথবা (-) চিহ্ন দেন।

তদন্তকালে পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) রোল নম্বর ৮৮ সংশ্লিষ্ট খাতার ইংরেজি অংশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৫ নম্বর প্রশ্নের বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদের উত্তর অংশে পরীক্ষার্থীর চারটি ইংরেজি বাক্য ভুল। এছাড়া ইংরেজি বৃক্ষরোপণ রচনায় ওই প্রার্থী লেখেন ‘trr plantation’ নামে রচনা। ওই প্রার্থীকেও দেয়া হয় ৬ নম্বর। রোল নম্বর ১২২ সংশ্লিষ্ট খাতার ইংরেজি অংশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৫ নম্বর প্রশ্নের বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ উত্তর অংশে ভুল বাক্যে ইংরেজি বাক্য লেখা হলেও তাকে ৬ নম্বর দেওয়া হয়। রোল নম্বর ১১৬ সংশ্লিষ্ট খাতার ইংরেজি অংশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৪ নম্বর প্রশ্নের:{ Tree plantation: They do us maû methods. the availability us out medicin whish with out fule. problen pree is the persomal metter or comon metter. to ther very emergeneci. everybod hugh amaunt basnies} পাঁচটি বাক্যে প্রায় ১৬টি শব্দের বানান ভুল, অনেক ভুল উত্তর/বানান ভুল লেখা হলেও তাকে ৬ নম্বর দেয়া হয়।

রোল নম্বর ১২৮ সংশ্লিষ্ট খাতার ইংরেজি অংশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৫ নম্বর প্রশ্নের বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ উত্তর অংশে তিনটি ভুল বাক্য লেখা হলেও তাকে ৩ নম্বর দেয়া হয়েছে। রচনায় শুধু ইভটিজিং বা দুটি শব্দ লিখলেও তাকে ৩ নম্বর দেওয়া হয়। রোল নম্বর ৫৫ সংশ্লিষ্ট খাতার ইংরেজি অংশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ৫ নম্বর প্রশ্নের বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ উত্তর অংশে (a) police is the buddy of fine (b) with he go to the market. (d) we respect bangladesh with respect (f) my father was suffring from two das. ইত্যাদির মতো শব্দের ভুলভাল ইংরেজি লিখলেও তাকেও ৬ নম্বর দেয়া হয়। ৪ নম্বর প্রশ্নের Composition: tree plantation is ১ লাইন অর্থাৎ মাত্র তিনটি শব্দ লিখলেও তাকে ১ নম্বর দেওয়া হয়। রোল নম্বর ৩২ সংশ্লিষ্ট খাতার ইংরেজি অংশ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, বৃক্ষরোপণ রচনার পাঁচ লাইন ভুল রচনা লিখেও প্রার্থী পেয়েছেন ৫ নম্বর।

দুদকের চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, এভাবে একাধিক পরীক্ষার্থীর ইংরেজি শব্দ ও বাক্য সঠিক না হলেও তাদের নম্বর দেওয়া হয়েছে। আসামিরা উৎকোচের বিনিময়ে টিআরসি নিয়োগের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা এবং বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়েছেন। তদন্তকালে ১৭ জন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট এক কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেন।

এ ব্যাপারে দুদকের উপপরিচালক মো. আক্তারুল ইসলাম বলেন, আসামিরা পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশনা এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলি লঙ্ঘন করে দণ্ডবিধির ১৬১/৪২০/১০৯ ধারা এবং তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। যা দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।


👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago