স্বাধীন ভারতের অগ্রযাত্রার মূল রূপকার যদি বলা যায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে, তার মেয়ে ইন্দিরা গান্ধিকেও ভারতের সর্বকালের সবচেয়ে ক্যারিশমাটিক ও জনপ্রিয় নেত্রী বলতে দ্বিধা করেন না বিশেষজ্ঞরা। আজ (৪ জুন) সেই বিখ্যাত পিতা-পুত্রীর রাজনৈতিক রেকর্ডও ভেঙে যেতে পারে গুজরাটের এক অতিসাধারণ এক ব্যক্তির হাতে, যার জীবন শুরু হয়েছিল রেলস্টেশনে চা বিক্রি করে।
তিনি ৭৩ বছর বয়সী নরেন্দ্র ভাই দামোদরদাস মোদি, যিনি হয়তো আজই ভোট গণনার শেষে টানা তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিরলতম গৌরব অর্জন করে ফেলবেন। অন্তত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষে প্রতিটি এক্সিট পোল বা বুথফেরত জরিপের রায় সে রকমটাই বলছে।
এক্সিট পোলগুলো একবাক্যে বলছে, নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি ও তাদের জোট অনায়াসে ৩৫০ বা তার বেশি আসন পেতে যাচ্ছে। কোনও কোনও সমীক্ষায় এই জোট ৪০০ আসনও পেরিয়ে যেতে পারে বলা হচ্ছে এবং বিজেপি একাই ৩৬০ বা ৩৭০-এর কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে জানানো হচ্ছে।
বিভিন্ন জরিপের মধ্যে সংখ্যার তারতম্য থাকলেও মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোট যে বিরোধী শিবিরের জোট ইন্ডিয়াকে বহু পেছনে ফেলে দিয়েছে এবং নরেন্দ্র মোদি অনায়াসে আবার সরকার গঠন করতে চলেছেন, তা নিয়ে এক্সিট পোলগুলো কার্যত সবাই একমত। আর সেটা যদি শেষ পর্যন্ত সত্যিই হয়, তাহলে নরেন্দ্র মোদি পেছনে ফেলবেন ভারতীয় রাজনীতির ‘কিংবদন্তি’ ইন্দিরা গান্ধিকেও। কিন্তু কীভাবে?
ইন্দিরা গান্ধি তিন দফায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনিও কখনও একটানা তিনবার দলকে নির্বাচনে জেতাতে পারেননি। ১৯৬৭ ও ১৯৭১-এর নির্বাচনে কংগ্রেসের নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হলেও দেশে তার জারি করা জরুরি অবস্থা বা ইমার্জেন্সির পর ১৯৭৭ সালে যে ভোট হয়েছিল, তাতে গান্ধি শোচনীয়ভাবে হেরে যান। পরে ১৯৮০ সালের নির্বাচনে জিতে আবার প্রধানমন্ত্রী হলেও ইমার্জেন্সি ও ’৭৭-এর পরাজয় ইন্দিরা গান্ধির রাজনৈতিক কেরিয়ারে কালো দাগের মতোই রয়ে গেছে।
অন্যদিকে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি লোকসভা ভোটে লড়ে এবং এককভাবে ২৮২টি আসন পেয়ে গরিষ্ঠতা অর্জন করে ফেলে। লক্ষণীয়, তার আগের ৩০ বছরে কখনও কোনও দল ভারতে একক গরিষ্ঠতা পায়নি। ২০১৯ সালেও মোদির নেতৃত্বে বিজেপি আরও বড় জয় পায়, তারা একাই জেতে ৩০৩টি আসন এবং মোদি হন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী।
২০২৪ সালেও যদি মোদি বিজেপিকে জেতাতে পারেন, তাহলে তিনি টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইন্দিরা গান্ধির রেকর্ড যেমন ভাঙবেন, তেমনি স্পর্শ করবেন ইন্দিরার বাবা জওহরলাল নেহরুর রেকর্ডকেও।
পণ্ডিত নেহরুই ভারতের ইতিহাসে একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি পরপর তিনবার ভোটে জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে পর্যন্ত আমৃত্যু তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, মোট ১৬ বছর ২৮৬ দিন।
এর মধ্যে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশের প্রথম সংসদীয় নির্বাচন পর্যন্ত মেয়াদটুকুতে তিনি অবশ্য ছিলেন অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। এরপর ১৯৫১-৫২, ১৯৫৭ ও ১৯৬২–দেশে পরপর প্রথম তিনটি নির্বাচনেই নেহরু কংগ্রেসকে জয় এনে দেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তৃতীয় মেয়াদের মাঝপথেই অবশ্য তিনি ৭৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন, তারপর দায়িত্ব নেন লালবাহাদুর শাস্ত্রী।
আজ (মঙ্গলবার) ভোট গণনার দিন নরেন্দ্র মোদি বিজেপিকে আবার জেতাতে পারলে তিনি পণ্ডিত নেহরুর রেকর্ড স্পর্শ যেমন করবেন, তেমনি তাকে ছাপিয়ে যাওয়ারও সুযোগ থাকছে নরেন্দ্র মোদির সামনে।
জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস পরপর তিনটি নির্বাচনে জিতলেও তাদের ফলাফল ক্রমেই খারাপ হয়েছিল। সেই জায়গায় নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি একাই ২০১৪ সালে ২৮২টি ও ২০১৯ সালে ৩০৩টি আসন পেয়েছে। এখন ২০২৪ সালে যদি তারা ৩০৩-এর বেশি আসন পায় (যেটা অধিকাংশ এক্সিট পোলেই পূর্বাভাস করা হয়েছে), তাহলে প্রতিবারই বিজেপি আগেরবারের চেয়ে ভালো ফল করে ক্ষমতায় আসবে।
এই কৃতিত্ব কিন্তু জওহরলাল নেহরুরও ছিল না। ফলে নরেন্দ্র মোদির সামনে এদিন থাকছে পিতা-পুত্রী, দুজনকেই টপকে যাওয়ার বিরল এক সুযোগ!
আরও যেসব রেকর্ডের হাতছানি
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আরও কিছু নতুন রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা থাকছে। যার কোনো কোনোটি ইতোমধ্যেই গড়া হয়ে গেছে, কোনোটি হচ্ছে কি না জানা যাবে ভোট গণনা শেষে। এ রকম চারটি রেকর্ডের কথা বলা যায়—
৪০০-এর বেশি আসন
ভারতে সংসদীয় নির্বাচনের সুদীর্ঘ ইতিহাসে কেবল একবারই কোনও দল ৪০০-এর বেশি আসন পেয়েছিল। সেটা হয়েছিল ১৯৮৪ সালে, যখন রাজীব গান্ধির নেতৃত্বে কংগ্রেস প্রথমবার ভোটে লড়ে। তবে সেই ভোট অনুষ্ঠিত হয় ইন্দিরা গান্ধি তার শিখ দেহরক্ষীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার ঠিক পরেই। ফলে কংগ্রেসের অনুকূলে সারা দেশে সহানুভূতির ঝড় উঠেছিল। তখন সারা ভারতে মোট লোকসভা আসন ছিল ৫১৪টি, তার মধ্যে কংগ্রেস একাই পেয়েছিল ৪০৪টি। এখন অবশ্য দেশে মোট লোকসভা আসনের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৪৩।
এবারে লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেজে ওঠারও আগে নরেন্দ্র মোদি স্লোগান দিয়েছিলেন ‘আব কি বার চারশো পার’। অর্থাৎ তার লক্ষ্য হবে ভোটে ৪০০-এরও বেশি আসন পাওয়া। পরে অবশ্য তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বিজেপি এককভাবে ৩৭০ ও জোট হিসেবে ৪০০-এর বেশি আসনের জন্য ঝাঁপাবে। যা-ই হোক, বিজেপি বা তাদের জোট যদি সত্যিই ম্যাজিক সংখ্যা অতিক্রম করতে পারে, তাহলে স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সেটি দ্বিতীয়বার ঘটবে।
সবচেয়ে বেশি ভোটারের বিশ্বরেকর্ড
সোমবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে সারা দেশে ৬৪ কোটি ২০ লাখ ভোটার ভোট দিয়েছেন, যা বিশ্বরেকর্ড। পৃথিবীতে কোনও দেশে এর আগে এত বেশিসংখ্যক ভোটার অংশ নেননি। এর আগের রেকর্ডও ভারতেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। সেবার ভোট দিয়েছিলেন ৬১ কোটি ২০ লাখ ভোটার। তাই সবচেয়ে বেশি ভোটারের ‘বিশ্বরেকর্ড নির্বাচনে’ যদি নরেন্দ্র মোদি জেতেন, সেটাও তার মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করবে নিঃসন্দেহে।
প্রসঙ্গত, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এবার নথিভুক্ত ভোটার ছিলেন ৯৭ কোটির মতো।
কাশ্মিরে ৩৫ বছরে সর্বাধিক ভোট
ভারতের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দেশের উপদ্রুত এলাকা জম্মু ও কাশ্মিরের পাঁচটি লোকসভা আসনে এবারের নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ৫৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সেখানে গত ৩৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম এত বিপুল হারে ভোট পড়লো। বস্তুত গত কয়েক দশকে কাশ্মিরে মাত্র ১০ বা ১৫ শতাংশ ভোট পড়লেও সেটাকে ‘স্বাভাবিক’ পরিস্থিতি বলে ধরে নেওয়া হতো।
১৯৮৯ সালে কাশ্মিরে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদ জোরেশোরে শুরু হওয়ার পর থেকে ওই অঞ্চলে কখনোই ভোটের হার ৪০ শতাংশ ছাড়ায়নি। ফলে এই প্রায় ৬০ শতাংশ ছুঁইছুঁই ভোটদানের হারও একটি বিরল রেকর্ড।
প্রসঙ্গত, ২০১৯-এ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার মাস দুয়েকের মধ্যেই নরেন্দ্র মোদি সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করে জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ স্বীকৃতির অবসান ঘটিয়েছিল।
সবচেয়ে বেশি পরিমাণ অর্থ জব্দ
সোমবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন আর একটি অভিনব তথ্য জানিয়েছে। সেটি হলো, এবারের নির্বাচনেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে, আর তার পরিমাণ ১০ হাজার কোটি রুপিরও বেশি! নির্বাচনের সময় কালো টাকা ও নগদপ্রবাহ বাড়ে, এটা কোনও নতুন কথা নয়, কিন্তু এবার বাজেয়াপ্ত করা অর্থের পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে।
বস্তুত ২০১৯-এর নির্বাচনেও যে পরিমাণ অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, এবার তার প্রায় তিন গুণ টাকা কমিশন জব্দ করেছে। ভারতে ২০২৪ সালের নির্বাচন যে বিভিন্ন দিক দিয়েই রেকর্ড ভাঙাগড়ার নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেই ইঙ্গিত বোধহয় এখান থেকেও পরিষ্কার।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…