এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসদের ওপর হামলা, সেই ঘটনা থেকে সারা দেশে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুরের মধ্যে এভাবে ঘটনার বিস্তার। এই এক দিনের মধ্যে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকরা যেমন একদিকে ফুঁসে উঠেছেন, তেমনি নিদারুণ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে রোগীদের। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে- এই আশ্বাস পেয়ে চিকিৎসকরা আপাতত দায়িত্ব পালনে ফিরে গেছেন। তবে তারা বলছেন, নিরাপত্তার যে সংকট ছিল তার স্থায়ী সমাধান না হলে পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ার দুষ্কর।
চিকিৎসকরা অভিযোগ করেন, শনিবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ৫০-৬০ জনের দল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জরি বিভাগের ইমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে। তারা কোনও কথাবার্তা ছাড়া ডাক্তারদের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারে। দুই চিকিৎসককে বেদম পেটানো হয়েছে। এতে আহত হয় ৬-৭ জন। যারা হামলায় জড়িত ছিল তারা কেউ রোগীর আত্মীয় না। তারা চিকিৎসকদের মারতে মারতে পরিচালকের রুমে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এক ইন্টার্ন চিকিৎসক জানান, গত সপ্তাহ থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কোথাও কোনও সিকিউরিটির নেই। ৩/৪ দিন আগে ক্যাজুয়ালিটির ইমার্জেন্সি রুমে দুটি ঘটনা ঘটে। যৌক্তিক কোনও কারণ ছাড়াই ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে ডাক্তারদের ওপর চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে এবং একজন নারী চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করে। একই দিনে অন্য এক চিকিৎসকে মারতে তেড়ে আসে। পরের দিন চিকিৎসকরা হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুরাহা চান। পরিচালক নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও কার্যত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, আমরা কোনও রোগীকেই ফেরত দেই না। সবাইকে যথাসাধ্য চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করি। হাসপাতালের সক্ষমতার ৪-৫ গুণ বেশি রোগী আসে। তারপরও আমরা সেবা দিয়ে যাই। যদি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে সেটা ডেলিভার করার জায়গা আছে। সেটা না করে হামলা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না।
চিকিৎসকরা জানান, একটি হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভূমিকা থাকে অনেক। মূলত রোগীকে তারাই রিসিভ করেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে গেলে মূলত হাসপাতালের সেবা ব্যহত হয়ে পড়ে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাসপাতালে সারাক্ষণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগে শত শত রোগী দেখতে হয়, তাদের তথ্য লিখতে হয়, চিকিৎসা দিতে হয়। পরদিন সকালে অধ্যাপকের জন্য নোট তৈরি করে রাখতে হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে সারা দেশে ডাক্তাররা কর্মবিরতি তথা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক গেটে হাসপাতালের রেজিস্ট্রার (নিউরো সার্জারি গ্রিন ইউনিট) ডা. আবদুল আহাদ এই ঘোষণা দেন।
ডাক্তারদের দাবির মধ্যে রয়েছে– অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ঢামেকসহ সারা দেশের হাসপাতালে আর্মিসহ সিকিউরিটি ফোর্স নিযুক্তকরণ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
ডা. আহাদ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার সময় বলেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল অপারেশনসহ সব চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকবে। এর দায়ভার চিকিৎসকদের ওপর না, প্রশাসনের ওপর বর্তাবে। কারণ তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন এবং কাজে ফিরলেও প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
চিকিৎসকদের এই আন্দোলনে একাত্মতা জানান ঢাকা মেডিক্যালের নার্স ও কর্মচারীরাও।
ডা. আহাদ বলেন, গতকাল ডিরেক্টর স্যারের অনুরোধে রাত ১১টায় কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাই। আমরা সকাল ৮টা পর্যন্ত ইমার্জেন্সি সার্ভিস দিয়েছি। হাসপাতালে আমরা ছিলাম। কিন্তু নিরাপত্তায় কোনও ফোর্স আমরা এখানে দেখি নাই। ইমার্জেন্সি কমপ্লেক্সের সামনে নিরাপত্তা ফোর্স থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমরা দেখি নাই। তাই আমরা বাধ্য হয়ে নিরাপত্তার জন্য আজ থেকে সারা দেশে কর্মবিরতিতে যাই।
ঢামেকের ঘটনার রেষ কাটতে না কাটতেই রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের ওপরেও হামলার ঘটনা ঘটে। রবিবার সকালে হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে রোগীর মৃত্যুর জের ধরে হামলার সূত্রপাত হয়। এসময় বেশ কয়েকজন চিকিৎসক হামলার শিকার হন, তাদের মধ্যে দুজন নারী চিকিৎসকও আছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে হাসপাতালগুলো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাউকেও হাসপাতালের আশেপাশে দেখা যায় না। আগে হাসপাতালের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করতো আনসার সদস্যরা। তাদের আন্দোলনের পরে কেউই দায়িত্বে নাই। হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য ঘটনা ঘটার পর বাহিনীকে ডাক দিয়ে নিয়ে আসতে হয়। এভাবে তো চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব না। আমাদের নিরাপত্তা না দিলে আমরা কীভাবে কাজ করবো – বলেও প্রশ্ন রাখেন চিকিৎসকরা।
এদিকে চিকিৎসকদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসকদের ওপর হামলায় দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আইনি ব্যবস্থা নিতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা খুবই পীড়াদায়ক। ডাক্তাররা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বড় আঘাত হওয়ায় বাঁচানো যায়নি। গাফিলতি হলে সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা না শুনে ডাক্তারদের ওপর হাত তোলা হয়েছে, এটা ঠিক হয়নি।
চিকিৎসকদের দাবির মুখে রবিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বিধানে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন-
চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ আপাতত স্থগিত
ডাক্তারদের ‘শাটডাউন’ তুলে নেওয়ার অনুরোধ স্বাস্থ্য উপদেষ্টার
সারা দেশে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা
ইমার্জেন্সি-আউটডোর বন্ধ, সেবা পেতে রোগীদের করুণ আকুতি
রোগী মৃত্যুর জেরে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যালে চিকিৎসকদের ওপর হামলা
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…