রাজধানীর ঢাকা উদ্যান এলাকার চা দোকানি নজরুল শেখ। ইচ্ছে থাকার পরও এবার কোরবানি দিতে পারছেন না তিনি। নজরুল শেখের মতো ওই এলাকার আরও কয়েকজন একই কথা জানালেন। তারা বলছেন, বছরে একবারই কোরবানি দেওয়ার সুযোগ আসে। মন তো চায় কোরবানি দেই। কিন্তু সংসার চালানোর খরচ বেড়েছে, অপরদিকে গরু-ছাগলের দামও বেড়ে গেছে। মূলত সে কারণে এ বছর তারা কোরবানি দেবেন না।
গাবতলী গরুর হাটের (নতুন অংশে) ভেতরে অবস্থিত সেলিম ভ্যারাইটি স্টোর। একাই দোকান চালাচ্ছেন সেলিমের ছেলে রাসেল। কাস্টমারের ভিড়ে চা বানানোর ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় রাসেলের সঙ্গে। এবার কোরবানি দেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি বছর ভাগে হলেও কোরবানি দিতাম। এবার সম্ভব না। গত বছর সাত জন মিলে ৭০ হাজার টাকায় একটি গরু কোরবানি দিয়েছিলেন। এ বছর সেই গরুর দাম লাখ টাকারও বেশি। তাছাড়া গত বছর যারা তার সঙ্গে ভাগে কোরবানিতে অংশ নিয়েছিলেন, এ বছর তাদেরও বেশি টাকা দিয়ে কোরবানি দেওয়ার ক্ষমতা নেই।
‘ব্যবসা ভালো চলছে, অথচ কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই কেন’ জানতে চাইলে রাসেল বলেন, ‘খরচ বেড়ে গেছে। সব জিনিসের দাম বেশি। এছাড়া গরু কিনতে হবে বেশি দাম দিয়ে, তাই কোরবানি দেওয়া সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, বাবা-মা, দুই ভাই, দুই বোন নিয়ে আমাদের ছয় জনের সংসার। আয় যা হয় ভালোই। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি টাকা খরচ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
চা দোকানি নজরুল শেখের এক ছেলে এবং দুই মেয়েসহ পাঁচ জনের সংসার। ঢাকা উদ্যানে গাবতলী-মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের পাশেই চা-পান-সিগারেটের দোকান তার। বেচাকেনা ভালোই হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাস শেষে লাভ থাকে ১২ হাজার টাকার মতো। নজরুলের ছেলে মুজাহিদ শেখ গাড়ির ওয়ার্কশপে কাজ করেন। তারও মাসিক আয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। প্রতিমাসে বাবা ও ছেলের আয় প্রায় ২৪ হাজার টাকা। এই অর্থ দিয়ে ভালোভাবে সংসার চললেও এ বছর তাদের কোনও সঞ্চয় হয়নি।
নজরুল শেখ জানান, তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। পরিবারসহ রাজধানীর তুরাগ হাউজিংয়ে মাত্র সাড়ে চার হাজার টাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে থাকেন। দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় সংসারের খরচও বেড়েছে। অন্যান্য বছর কিছু অর্থ সঞ্চয় হতো, গত দুই বছর ধরে তা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দিতে গিয়ে সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যায়। এসব কারণে এ বছর কোরবানি না দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান নজরুল শেখ।
শিক্ষকদের একটি অংশ ধার করে কোরবানি দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমপিওভুক্ত একজন বেসরকারি শিক্ষক। বলেন, বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স স্তরের নন-এমপিও শিক্ষকদের প্রায় ৮০ শতাংশই এবছর কোরবানি দিতে পারছেন না।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা কোরবানি দিতে পারছেন। অনেকে আবার ধারদেনা করেও দিচ্ছেন। আর অনার্স-মাস্টার্স স্তরের নন-এমপিও শিক্ষকদের প্রায় ৮০ শতাংশই কোরবানি দিচ্ছেন না। খরচ বেড়েছে, কলেজগুলো ঠিকঠাক বেতনও দেয় না। তার ওপর ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে তারা বিপদেই আছেন। তাহলে কোরবানি কীভাবে দেবেন?
এ বিষয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে। তারাও জানান, এ বছর কোরবানি দিতে পারছেন না। তবে সঙ্গত কারণেই বিষয়টি কেউই খোলামেলা বলতে চাইছেন না।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আকতার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, কিন্তু বেতন বাড়েনি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালাতে অনেকে হিমশিম খাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই কোরবানি দিতে পারছেন না। কিন্তু তারা তা বলতেও চাইবেন না, যা খুবই স্বাভাবিক।’
সিনিয়র সাংবাদিক শেখ শাহরিয়ার জামান বলেন, গত বছর গরু কিনেছি এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে। গত এক বছরে সংসারের যাবতীয় খরচ বেড়ে গেছে। এ কারণে এবার কোরবানির বাজেট কাটছাঁট করতে হয়েছে। এবার গরু কিনেছি ৯১ হাজার টাকা দিয়ে।
সিনিয়র ফটো-সাংবাদিক ড. নাসিরুল ইসলাম বলেন, গত বছর গরু কিনেছিলাম এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে। এবার বাজেট ৮০ হাজার টাকা। যদি এই দামে গরু কিনতে না পারি, তাহলে ছাগল কিনবো। গত বছরের চেয়ে সংসার খরচ বেড়েছে, সে কারণেই কম টাকায় কোরবানি দেওয়ার কথা ভাবছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা জানান, যারা সৎভাবে চলেন, তাদের পক্ষে কোরবানি দেওয়া প্রায় অসম্ভব। সৎ উপার্জনের সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মীরা যদি মনে করেন, কোরবানি দিতেই হবে—তাহলে ভাগেযোগে চেষ্টা করবেন। যদিও বেশিরভাগ সরকারি কর্মকর্তাদের একাধিক কোরবানি দিতে দেখা যায়। এবারও হয়তো তারা সেটাই করবেন।
গাবতলী হাটে গরু বিক্রি করতে আসা মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর এলাকার জাহানুর রহমান বলেন, ‘এবার গরুর দাম বেশি। কারণ গরুর খাবারের দাম বেশি। তাই মধ্যম আয়ের ক্রেতাদের আনাগোনা কম দেখা যাচ্ছে। হয়তো বা তাদের অনেকে কোরবানি দিতে পারবেন না।’
গরু বিক্রি করতে আসা সিঙ্গাইরের মনির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত বছর ভুসি কিনেছি মণপ্রতি ১৫শ’ টাকায়, এবার সেই ভুসি কিনতে হয়েছে দুই হাজার থেকে ২২শ’ টাকায়। সে কারণেই গরুর দামও এবার বেশি। গত বছর যে গরু ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার একই ওজনের গরু লাখ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…