Categories: Bangladesh News

তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ


তীব্র তাপদাহে পুড়ছে সারা দেশ। বৃষ্টির জন্য দেশের কিছু কিছু এলাকায় বিশেষ নামাজও আদায় করেছেন অনেকে। এই দাবদাহকে অনেকে অভিশাপ মনে করলেও কক্সবাজারের লবণচাষীরা বলছেন, এটি তাদের জন্য আশীর্বাদ। লবণ চাষিদের ভাষ্যমতে, গরমের তীব্রতা যত বেশি বাড়বে, তত বেশি লবণ উৎপাদন বাড়বে। ফলে এ বছর তাপদাহ বাড়ার কারণে ৬৩ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদন হয়েছে। অন্যান্য সময়ে এক সপ্তাহ সময় লাগলেও এখন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টায়ও মাঠ থেকে লবণ তোলা যাচ্ছে। 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) দেওয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ২৩ লাখ ১০ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। গত বছর পুরো মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন। আগামী আরও কয়েক সপ্তাহ তাপদাহ থাকলে লবণ উৎপাদন ৩০ লাখ মেট্রিক টন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছর প্রতি মণ লবণের মূল্য ছিল ৪২০ টাকা। তবে বর্তমানে প্রতি মণ লবণের মূল্য ৩১০ টাকা।

লবণ চাষীদের ভাষ্যমতে, সারা দেশেই বৃষ্টির জন্য চলছে আহাজারি। কিন্তু দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদন এলাকা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূল এলাকায় তীব্র দাবদাহ যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। মাঠে গরমের তাপ আর বাতাস লবণের উৎপাদন আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হচ্ছে। গত বছর এই সময়ে যা ছিল গড়ে ৩০ থেকে ৩২ হাজার মেট্রিক টন।

 

 

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ টন। অথচ চলতি বছরে মৌসুম শেষ না হওয়ার আগেই অর্থাৎ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে ২৩ লাখ ১০ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন। অর্থাৎ এরইমধ্যে গত বছরের বার্ষিক উৎপাদনকে ছাড়িয়ে গেছে। একদিনে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদনের ফলে প্রতি আড়াই দিনে প্রায় এক লাখ টনেরও বেশি লবণ উৎপাদন করছেন চাষিরা।

মাঠ পর্যায়ে প্রচুর লবণ উৎপাদন হওয়ায় চাষি থেকে শুরু করে লবণ ব্যবসায়ী ও লবণের ওপর নির্ভরশীল কক্সবাজারের মানুষ খুশি। তবে মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে লবণের দাম কমে যাওয়ায় কিছুটা হতাশ চাষিরা।

 

কক্সবাজারের চৌফলদন্ডী এলাকার লবণ চাষী মোজাফ্ফর আহমদ বলেন, তীব্র গরমে লবণের উৎপাদন অস্বাভাবিক বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর অনেক লবণ বেড়ে যাওয়ায় খুশি আমরা। তবে গত বছরের চেয়ে এবার লবণের দাম প্রতি মণে ১০০ টাকার বেশি কমেছে।

একই এলাকার লবণ চাষি শফিউল করিম বলেন, তীব্র তাপদাহ আমাদের জন্য আশীর্বাদে পরিণত হয়েছে। যদি আরও কিছুদিন তাপদাহ থাকে, তাহলে লবণ উৎপাদন দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যাবে। এবছর গরম আর বাতাশের তীব্রতা থাকায় লবণ চাষের জন্য উপযুক্ত হয়েছে। এতে আমরা খুশি।

 

বাংলাদেশ লবণ চাষি কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোস্তফা কামাল চৌধুরী বলেন, বর্তমানে মাঠে প্রচুর পরিমাণে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে চাষিরা লবণের ভালো দাম পেলেও এখন দাম একটু কমের দিকে। রেকর্ড লবণ উৎপাদন হওয়ায় মাঠ পর্যায়ের চাষিরা খুশি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে লবণ আমদানির কোনও প্রয়োজন হবে না।

মোস্তফা কামাল আরও বলেন, মাঠে এখন প্রচুর পরিমাণে লবণ পড়ে আছে। বৃষ্টি কিংবা কালবৈশাখী ঝড়ে এসব লবণ নষ্ট হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাঠের গর্তে কিংবা গুদাম বা মিল পর্যায়ে লবণ মজুত করে ফেলতে পারলে দেশের উৎপাদিত লবণ সংরক্ষিত থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

 

বিসিক কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় চলতি বছর লবণ উৎপাদন হচ্ছে ৬৮ হাজার ৩৫৭ একর জমিতে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৬৬ হাজার ৪২৪ একরে। জমির পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি চলতি মৌসুমে চাষির সংখ্যা ১ হাজার ২২৮ জন থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ হাজার ৬৯৫ জনে।

জাফর ইকবাল বলেন, বাড়তি লবণ উৎপাদনের কারণে মাঠ পর্যায়ে ক্রুড লবণের দাম কমে এসেছে। চাষিরা যদি ধীরে ধীরে লবণ বিক্রি করে, তবে তারা ভালো দাম পেতে পারে। গত ২০২২-২৩ মৌসুমের এই সময়ে মাঠ পর্যায়ে ক্রুড লবণের মণপ্রতি দাম ছিল সর্বনিম্ন ৪২০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার টন। মৌসুমের শুরু নভেম্বরের মাঝামাঝি বিরূপ আবহাওয়া, একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল। ওই সময়ে কৃষক পর্যায়ে মাঠ থেকে অল্প অল্প লবণ উত্তোলন হলেও বর্তমানে তীব্র তাপদাহে ভালোমানের দানাদার লবণ উৎপাদন হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতি ৭-১০ দিনে মাঠে লবণ পুষ্ট হলেও বর্তমানে সেটি নেমে এসেছে ১ দিনে বা ২৪ ঘণ্টায়। সর্বশেষ কয়েক দিনে ১০-১২ ঘণ্টার মধ্যেও মাঠ থেকে লবণ সংগ্রহের রেকর্ড তৈরি হয়েছে।

লবণ চাষীদের মতে, বিসিকের কর্মকর্তারাও বলছেন, দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রিসহ বিভিন্ন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও লবণ উৎপাদনের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। আগামী এক সপ্তাহ কক্সবাজারে বৃষ্টি না হলে চলতি বছর লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।


👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

9 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

9 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

9 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

9 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

9 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

9 months ago