Categories: Bangladesh News

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ট্যাক্স হলিডের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে: নিয়াজ মোর্শেদ এলিট


দেশের অন্যতম আলোচিত তরুণ উদ্যোক্তা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েছেন এবং ব্যবসায়ী হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দেশে তার ভূমিকা বহুল প্রশংসিত। তবে তিনি বেশি মনোযোগী তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে।

দেশের শীর্ষ মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের একজন উদ্যোক্তা হিসেবে এবার বেসিসের (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়ার অ্যান্ড ইনফর্মেশন সার্ভিস) নির্বাচনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাত, সফটওয়্যার শিল্প ও বেসিস নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তিনি। 

বাংলা ট্রিবিউন: উদ্যোক্তা হিসেবে আপনাকে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে। এরমধ্যে কোন উদ্যোগকে এগিয়ে রাখতে চাইবেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: বেশ কিছু উদ্যোগের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত থেকেছি। এর মধ্যে অনেকটিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আমার প্রতিষ্ঠিত বড় তাকিয়া গ্রুপে দুই শতাধিক কর্মী কাজ করে। নগদ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহ-উদ্যোক্তা হিসেবে ভূমিকা রেখেছি। এর বাইরে জুনিয়র চেম্বারের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। 

তবে সবক’টির মধ্যে অবশ্যই নগদকে এগিয়ে রাখবো। মূলত বাজার প্রতিযোগিতায় গত পাঁচ বছরে নগদ যে ভূমিকা রেখেছে সেটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি ফিনটেক খাতে নগদ-এর যে অর্জন সেটি আগের আরও বহু বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠানকে এককথায় পেছনে ফেলে দিয়েছে। আমাদের দেখানো পথে নগদ যেভাবে বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মানুষের জন্য কাজ করেছে সেটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে। এই খাতের মনোপলি ভাঙার ক্ষেত্রে নগদ-এর অবদান আমাকে মুগ্ধ করে। সব মিলিয়ে আমার নগদ অধ্যায়কেই এগিয়ে রাখতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: বেসিসের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্য কী?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: দীর্ঘ একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমরা দেশীয় সব উদ্যোক্তা মিলে নগদ’কে গড়ে তুলেছি। আমাদের সঙ্গে প্রায় চারশ’ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কাজ করে। কিন্তু বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারের ওপর নির্ভর করে থাকতে হয় আমাদের। এতে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। আমরা ভেবে দেখলাম– দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে শত শত উদ্যোক্তা আছেন। লাখ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট গ্র্যাজুয়েট আছেন। অথচ আমরা যারা এই খাতে কাজ করি তাদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এই খাতের জন্য সময়োপযোগী সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে আরও উৎসাহিত করতে এবং এই খাতকে সরকারের নীতি সহায়তা নিয়ে আরও খানিকটা কাজ করতেই বেসিসের নির্বাচনের প্রতি আমার আগ্রহী হওয়া।

বাংলা ট্রিবিউন: সরকারের তথ্যপ্রযুক্তিগত নীতি প্রণয়নে বেসিস সাম্প্রতিক সময়ে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পেরেছে বলে মনে করেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: সহজ কথায় বলতে গেলে আমার উত্তর হবে ‘না’। বেসিস যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি বলেই আমার মনে হয়েছে। তারা হয়তো তাদের সর্বোচ্চ করেছে, কিন্তু আরও অনেক কিছু আড়ালে পড়ে গেছে যেটা ট্রেড বডি হিসেবে করা দরকার ছিল। আমি এই ঘাটতি পূরণে অবদান রাখতে চাই। সরকারের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই। এমন একটা পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চাই যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির ডিগ্রিধারী লাখ লাখ বেকার ঘুরে বেড়াবে না। যোগ্য কর্মী খুঁজে না পেয়ে বিদেশ থেকে কর্মী নিয়ে আসতে হয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই।

আমরা প্রায়ই শুনি– এত বিলিয়ন ডলারের রফতানি করবো, অত বিলিয়ন ডলারের রফতানি করবো। এমন গালভরা বুলি আর শুনতে চাই না। বরং আমাদের দেশের অভ্যন্তরে যে বাজার সৃষ্টি হয়েছে সেটার প্রয়োজন মেটাতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা যথেষ্ট যোগ্য ও দক্ষ হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হতে পারলে কাজ করার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেবেন?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: এক্ষেত্রে এক, দুই, তিন এমন তালিকা না করে বরং সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটা নিয়ে কাজ করবো। তবে আমার মনে হয়েছে, ২০২৪ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ট্যাক্স হলিডে উঠে যাওয়ার যে পরিস্থিতি হয়েছে সেটা নিয়ে সবার আগে কাজ করতে হবে। নির্বাচনে জয়ী হই আর না হই, আমি এতে ভূমিকা রাখতে চাই। এক্ষেত্রে সরকারকে বোঝানো দরকার, আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি ও সেবা খাত কি ট্যাক্স হলিডের বাইরে গিয়ে স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলার মতো যথেষ্ট যোগ্য হয়েছে কিনা। একই সঙ্গে একটি খাত সবসময় কেবল ট্যাক্স হলিডে নিয়ে চললে তো হবে না। এতে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরিস্থিতি কখনোই হবে না। সুতরাং এর একটা ভারসাম্য প্রয়োজন।

বাংলা ট্রিবিউন: সবসময় বলা হয়– বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত গার্মেন্টস শিল্পের চেয়ে বড় হবে। আপনি কি এই আশাবাদের সঙ্গে একমত?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: যারা এমন স্বপ্ন দেখে তাদের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করি না। তবে একই সঙ্গে বলি– আমাদের দেশীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে বিশ্ববাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। যে ভিয়েতনামের সঙ্গে আমরা কথায় কথায় নিজেদের তুলনা করি তাদের এমন প্রতিষ্ঠানও আছে যার একবছরের রফতানি আয় আমাদের গোটা শিল্পের মোট আয়ের বেশি। ফলে বাস্তবসম্মত স্বপ্ন দেখতে হবে। আমরা যেন শুধু স্বপ্ন না দেখে স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই।

বাংলা ট্রিবিউন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসিস কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করেছি। এক্ষেত্রে সরকার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। আর আমাদের মতো তরুণ বেসরকারি উদ্যোক্তারা নগদ-এর মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগানকে অর্জনের পথে নিয়ে গেছে। বেসিসের এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার আছে। সামগ্রিকভাবে বেসিস কতটা করতে পেরেছে সেটা সদস্যরাই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমি মনে করি, উন্নত আর স্মার্ট দেশ গড়তে হলে আমাদের স্মার্ট নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: ২০৪১ সালে তথ্যপ্রযুক্তির বিবেচনায় বাংলাদেশকে কোথায় দেখতে চান?
নিয়াজ মোর্শেদ এলিট: আমার চাওয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারণ করে দেওয়া লক্ষ্য পূরণ। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্মার্ট আর উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত করা। তার আগে ২০২৭ সালের মধ্যে অন্তত ৭৫ শতাংশ লেনদেন ক্যাশলেস করার পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রে একই সামঞ্জস্য রেখে উন্নতি সাধন করতে হবে। আমি এমন একটা স্বপ্ন দেখি যেখানে যেকোনও সেবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মিলবে। ছাপা টাকার কোনও লেনদেন হবে না। আর আমাদের সন্তানেরা উন্নত বিশ্বের সুফল নিজের ঘরে বসেই পাবে।

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

5 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

5 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

5 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

5 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

5 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

5 months ago