মালয়েশিয়ায় যেতে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ের চেয়ে বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন সময়। দুই দেশে লাইসেন্সবিহীন সাব-এজেন্ট (মধ্যস্বত্বভোগী) জড়িত থাকার কারণে অনেক সময় অভিবাসন ব্যয় বেড়েছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
গত ২৮ মার্চ জাতিসংঘের চার বিশেষজ্ঞের চিঠির জবাবে জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এ কথা জানায়। মালয়েশিয়া প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর শোষণ-নির্যাতন কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও বলা হয়েছে চিঠিতে। গত ২৯ মে এই চিঠি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়। মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় ২ জুন চিঠিটি প্রকাশ করেছে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের কর্মীদের শোষণ ও দুর্ভোগ কমানোর ব্যবস্থা নিতে দুই দেশের সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন জাতিসংঘের চার স্বাধীন বিশেষজ্ঞ। গত ২৮ মার্চ বাংলাদেশে ও মালয়েশিয়ার সরকারকে চিঠি দেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ টোমোয়া ওবোকাটা, রবার্ট ম্যাককরকোডেল, গেহাদ মাদি ও সিওবান মুলালি। দুই সরকার এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিলো তা ৬০ দিনের মধ্যে জানাতে বলেছিলেন তারা। না জানালে বিষয়টি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনে তোলা হবে–তারা এমন হুঁশিয়ারিও দেন। জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞরা দাসত্ব ও তার করুণ পরিণতি, মানবাধিকার, অভিবাসীদের মানবাধিকার, নারী ও শিশু পাচার নিয়ে কাজ করেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠির জবাবে বলা হয়, অভিবাসন ফি বাবদ নির্ধারিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ আদায় করার কথা। তবে গণমাধ্যম ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় প্রান্তে লাইসেন্সবিহীন সাব-এজেন্ট (মধ্যস্বত্বভোগী) জড়িত থাকার কারণে অনেক সময় অভিবাসন ব্যয় বেড়েছে। সেই অনুযায়ী প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কিছু প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং আরও ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে আছে রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স স্থগিত করা, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন-২০১৩ অনুযায়ী জরিমানা আদায় এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে থেকে অর্থ আদায় করা।
২০২৩ সালে সাব-এজেন্টদের (মধ্যস্বত্বভোগীদের) নিয়মের মধ্যে আনা এবং তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন-২০১৩ সংশোধন করে। এছাড়া দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে লাইসেন্সবিহীন সাব-এজেন্টসহ অননুমোদিত অর্থ পরিশোধের সুযোগ দূর করতে কার্যকর দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার এমপ্লয়ার্স পে মডেলকেও উৎসাহিত করছে, যা সাধারণত ‘জিরো কস্ট মাইগ্রেশন’ নামে পরিচিত। এফডব্লিউসিএমএস চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৫১ জন কর্মী এই মডেলে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ‘এসপিপিএ’ সিস্টেম বাতিল করে নতুন অনলাইন সিস্টেম তৈরি করে মালয়েশিয়ান সরকার, যার নাম দেওয়া হয় ‘এফডব্লিউসিএমএস’। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী নিয়োগের জন্য নিযুক্ত করে। মালয়েশিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে ‘সিনারফ্লেক্স’ নামে একটি কোম্পানিকে পুরো বিষয়টি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সিনারফ্লেক্স কোম্পানির সঙ্গে সেই চুক্তি বাতিল করে পরে আবার বেস্টিনেট নামে একটি কোম্পানির কাছে ‘এফডব্লিউসিএমএস’ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন চিঠিতে উল্লেখ করে, এফডব্লিউসিএমএস প্রতিষ্ঠার পর মালয়েশিয়ায় নিয়োগের সঙ্গে জড়িত রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে ৩৯টি এবং ২০২৪ সালে ২০৬টি অভিযোগ পেয়েছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। এর মধ্যে ৩০টি মামলা ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। এছাড়া ৩০ জন অভিযোগকারী অভিবাসী শ্রমিকের জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। বাকি মামলাগুলোর নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকারের শ্রম বিভাগ ৪৮টি স্থানীয় নিয়োগকর্তাকে বাংলাদেশসহ বিদেশি কর্মী নিয়োগে নিষিদ্ধ করেছে। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লিখিতভাবে যোগাযোগ করে জানিয়েছে, স্থানীয় নিয়োগকর্তারা তাদের নির্ধারিত কাজে শ্রমিক নিয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ হাইকমিশন ১৩টি কোম্পানির ১ হাজার ৯৬২ জন শ্রমিকের বিপরীতে ২৭টি চাহিদাপত্র সত্যায়িত করা থেকে বিরত থাকে, যদিও ওই চাহিদাপত্র মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করেছিল। তাছাড়া, মালয়েশিয়ার শ্রম আদালতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মাধ্যমে চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যার বিপরীতে ৯০৩ জন শ্রমিক চাকরির নিয়োগ বা ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে প্রতিকার পেয়েছিলেন।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, হাইকমিশন মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার ৮৮৩ জন কর্মীর চাকরি না পাওয়ার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হয়। এছাড়া মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগ ৬১২ জন বাংলাদেশি কর্মীকে চাকরির জন্য অন্য নিয়োগকর্তাদের কাছে বদলি করেছে।
হাইকমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত এমপ্লয়মেন্ট ভিসায় মোট ৫ হাজার ১৯০ জন বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের কাছে প্রতিশ্রুত চাকরি পাননি। এখানে উল্লেখ্য, প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন শ্রমিকদের চাহিদাপত্র সত্যায়নের আগে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করতো। তবে পরবর্তীকালে হাইকমিশন প্রক্রিয়াটি স্থগিত করে। কারণ মালয়েশিয়া সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে মিশনকে এ জাতীয় সংস্থা পরিদর্শন না করার জন্য অনুরোধ করেছিল, যেহেতু বিষয়টি উপযুক্ত মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারে পড়ে।
দ্বিতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নতুন বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ না দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হয় এবং প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়। সমঝোতা স্মারক অনুসারে, মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তারা শ্রমিকদের প্রবেশ ও কর্মসংস্থানসহ সব নিয়োগ কার্যক্রমের দায়িত্ব বহন করে।
চিঠিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার এবং মালয়েশিয়া সরকার ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে। সমঝোতা স্মারকের পর মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর কাছে ২৫টি বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠান। এরপর একই বছরের ১৮ জানুয়ারি এক চিঠিতে সব লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিআরএ’র জন্য সুযোগ উন্মুক্ত রাখতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানায়। বাংলাদেশ তাই সরকার স্বীকৃত ১ হাজার ৫২০টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগের সুযোগ দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে, যা গত বছরের ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) সভার রেকর্ড অব ডিসকাশনেও (আরওডি) প্রতিফলিত হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় মালয়েশিয়া সরকার একমাত্র সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি অর্থাৎ বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-সহ তাদের পছন্দ ও ম্যান্ডেট অনুযায়ী অনুমোদিত বিআরএ’র সংখ্যা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ১০১-এ উন্নীত করে।
মালয়েশিয়াও এরই মধ্যে চিঠির জবাব দিয়েছে। গত ২৮ মে জেনেভায় জাতিসংঘে মালয়েশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি নাদজিরা ওসমান মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন দফতরে (ওএইচসিএইচআর) চিঠিটি হস্তান্তর করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘকে আশ্বস্ত করছি যে মালয়েশিয়া অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রসঙ্গত, সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা হলেও সাড়ে ৪ লাখ থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা খরচ করে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন কর্মীরা। তবে এত টাকা খরচ করেও কাজ না পাওয়া এখন নিয়মিত ঘটনা। বৈধভাবে কাজের উদ্দেশে গিয়েও অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মাসের পর মাস ধরে খাওয়া, ঘুমানোর জায়গা ও টয়লেট সংকটের মধ্যে কাটাচ্ছেন তারা। বিষয়টি সামনে এলে মালয়েশিয়ার সরকার এ ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এছাড়া মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম), ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) এবং ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম (ইউএনওডিসি)।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…