৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘হত্যা, গুম, গণহত্যা, নির্যাতনের’ অভিযোগে একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে। এসব মামলায় তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও আসামি করা হচ্ছে। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এখন জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালকের পদে কর্মরত। তাই প্রশ্ন উঠেছে, ওই সংস্থার কাজে বাংলাদেশ সফরে এলে তাকেও কি সেসব মামলায় গ্রেফতার করা হতে পারে?
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এই মুহূর্তে জাতিসংঘের সংস্থা ডব্লিউএইচওর (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক। আর সেই সুবাদে তার কার্যালয় এখন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। গত বছর নেপালের প্রার্থীকে আট-দুই ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে তিনি এই পদে নির্বাচিত হন। তারপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন থেকে গত সাত-আট মাসে বেশি সময় তিনি দিল্লিতেই কাটিয়েছেন।
ডব্লিউএইচওর এই আঞ্চলিক পরিচালক পদের মেয়াদ পাঁচ বছরের। ফলে ২০২৮ সালের শেষ পর্যন্ত সায়মা ওয়াজেদের এই পদে থাকার কথা। আর বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর গত ৮ আগস্ট তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে এক পোস্টে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, ডব্লিউএইচওর পদে তিনি যথারীতি তার দায়িত্ব পালন করে যাবেন। অর্থাৎ তিনি ইতোমধ্যে বুঝিয়ে দিয়েছেন তার পদত্যাগ করার কোনও অভিপ্রায় নেই এবং তিনি পুরো মেয়াদ শেষ করতে চান।
তবে সায়মা ওয়াজেদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান– তার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশসহ মোট ১১টি দেশ আছে, আর রিজিওনাল ডিরেক্টরকে এই দেশগুলোতে নিয়মিতই সফর করতে হয়। যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, গত ৫ আগস্ট যখন তার মা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজে থাইল্যান্ড সফরে ছিলেন।
পরে দিল্লি ফিরে এলেও আগস্টের শেষ সপ্তাহে তিনি আবার পূর্ব তিমুর ও ইন্দোনেশিয়া সফরেও গিয়েছিলেন। আবার দিল্লি ফিরে এসেও তিনি বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) তার অঞ্চলের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কমিটির ৭৭তম অধিবেশনের প্রস্তুতি বৈঠকেও বসেন। সেই বৈঠকে যথারীতি বাংলাদেশের প্রতিনিধিও যোগ দিয়েছিলেন।
সোজা কথায়, সায়মা ওয়াজেদকে যে দেশগুলো নিয়ে কাজ করতে হয় বাংলাদেশ তার অন্যতম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ডব্লিউএইচওর অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সদস্য।
তবে দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, রিজিওনাল ডিরেক্টরকে অচিরেই সংস্থার কাজে বাংলাদেশে যেতে হবে, এখনই এরকম কোনও নির্ধারিত পরিকল্পনা নেই। তবে যেকোনও সময়ই যেতে হতে পারে, এতেও কোনও ভুল নেই! কিন্তু এখন যেহেতু সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে, তাকে যদি আগামী দিনে ‘অফিসের কাজে’ সে দেশের মাটিতে পা রাখতে হয়, তখন কি বাংলাদেশ সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে?
জাতিসংঘের একটি সংস্থায় অত্যন্ত উঁচু পদে কাজ করেছেন, দিল্লিতে এমন একজন সাবেক কর্মকর্তা অবশ্য বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, জাতিসংঘ বা তার সহযোগী সংস্থায় কর্মরত হিসেবে কোনও ব্যক্তি যখন কোনও দেশে সফরে যান, তখন সেই ‘ডিউটি ট্রিপে’ তারা কিছু ‘আইনি রক্ষাকবচ’ও পেয়ে থাকেন।
তিনি বলছেন, বস্তুত জাতিসংঘ বা তার সহযোগী সংস্থায় (যেমন ডব্লিউএইচও, ইউনেসকো ইত্যাদি) কর্মরত ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন আছে– বাংলাদেশসহ সব সদস্য দেশ যে সনদ পালন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
ওই সনদের ৮ নম্বর আর্টিকেলে পরিষ্কার বলা আছে, যদি না ওই দেশের সঙ্গে কোনও ‘স্ট্যাটাস-অব-ফোর্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট’ থাকে, তাহলে জাতিসংঘ বা সহযোগী সংস্থার কোনও কর্মী কোনও দেশে গেলে কর্তব্যরত অবস্থায় যদি তাদের আটক করাও হয়– তাহলে তাদের পরিচয় শনাক্ত হওয়া মাত্র তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং তাদের কোনও রকম জিজ্ঞাসাবাদ করাও যাবে না। ওই দেশ সঙ্গে সঙ্গে তাদের জাতিসংঘ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতেও বাধ্য থাকবে।
‘স্ট্যাটাস-অব-ফোর্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট’ হলো সেই বিশেষ ধরনের সমঝোতা, যার আওতায় কোনও বৈদেশিক শক্তি অন্য একটি দেশে সেনা বা নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করতে পারে। জাতিসংঘ যখন কঙ্গো বা হাইতিতে শান্তিরক্ষী পাঠায়, তখন সেটা করা হয় এই ধরনের অ্যাগ্রিমেন্টের আওতায়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোনও কর্মকর্তা বাংলাদেশে গেলে অবশ্যই সেটা এরকম সমঝোতার অধীনে হবে না, ফলে তারও স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী গ্রেফতারি বা জিজ্ঞাসাবাদের হাত থেকে ‘ইমিউনিটি’ পাওয়ার কথা।
এখন প্রশ্ন হলো, ডব্লিউএইচওর রিজিওনাল ডিরেক্টর হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ যদি আগামী দিনে বাংলাদেশ সফরে আসেন, তাহলে তার ক্ষেত্রে সরকার কী ভূমিকা নেবে? তখন কি তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো উপেক্ষা করা হবে, নাকি দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
এর জবাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকার সাবেক এক কূটনীতিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতিসংঘে কর্মরত কর্মকর্তারা জাতিসংঘের সুবিধাপ্রাপ্তি ও দায়মুক্তির সনদ এবং ভিয়েনা কনভেনশন ১৯৬১ অনুযায়ী সুবিধা পেয়ে থাকেন। তবে জাতিসংঘের সুবিধাপ্রাপ্তি ও দায়মুক্তির সনদের ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ইউএন সিস্টেমে কাজ করেন এমন কেউ তার নিজ দেশে দায়মুক্তি পাবেন না।’
যেহেতু সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, ফলে তিনি ডব্লিউএইচওর হয়ে এ দেশে আসতে পারবেন, কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী সুবিধা পেলেও দায়মুক্তি পাবেন না বলে জানান তিনি।
গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি সর্বশেষ ধাপ। এর আগে অনেক কিছু হতে পারে। তার ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন- মোবাইল বা ল্যাপটপের তথ্য বা তার ব্যক্তিগত ব্যবহার করা জিনিসপত্রের তল্লাশি করা হতে পারে।’
সুপরিচিত মানবাধিকার কর্মী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাজে তিনি দেশে আসতে চাইলে সমস্যা হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। কেননা, তিনি তো ডিপ্লোমেটিক ওয়েতে দেশে আসবেন।’
‘এরপরও তাকে বাধাপ্রাপ্ত করলে তা হবে অগণতান্ত্রিক কাজ। যেহেতু তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে, এখানে তো তিনি অভিযুক্ত কিন্তু অপরাধী নন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। তবে আমি মনে করি, ডিপ্লোমেটিক ওয়েতে দেশে এলে গ্রেফতারের বিষয়টি সামনে আসার কথা না। তারপরও তাকে গ্রেফতার করতে চাইলে, সে বিষয়টি (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে) জানিয়ে রাখতে পারে।’
ভারতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একজন নামি বিশেষজ্ঞ আবার বলছিলেন, আইনের ফাঁকফোকর যদি কিছু থেকেও থাকে; বাংলাদেশ সফরে গেলে সায়মা ওয়াজেদকে গ্রেফতার করা হবে, এই আশঙ্কা ‘শূন্য’ বলেই মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এর কারণটাও খুব সহজ—জাতিসংঘের হয়ে বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষীর ভূমিকায় কাজ করতে বাংলাদেশের হাজার হাজার সেনা সারা পৃথিবীতে যাচ্ছেন। সে দেশের সেনা সদস্যদের জন্য এটা খুব আকর্ষণীয় একটা অ্যাসাইনমেন্ট বা পোস্টিং। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তাকে আটক করে বাংলাদেশ এই সম্পর্কটাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলে আমি মনে করি না!’
অর্থাৎ, একজন ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জাতিসংঘের মিশনগুলোতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা ও স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না বলেই ওই বিশেষজ্ঞ ধারণা করছেন। ফলে মনে করা হচ্ছে অন্তত আগামী সাড়ে চার বছর বা যতদিন পর্যন্ত সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে আঞ্চলিক পরিচালকের পদে আছেন; ততদিনের মধ্যে তিনি সংস্থার কাজে বাংলাদেশ সফরে এলেও তার গ্রেফতারির আশঙ্কা কার্যত নেই বললেই চলে।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…