Categories: Bangladesh News

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ৬২২, আহত ১৮ হাজারের বেশি


জুলাই–আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে সংঘাত–সহিংসতায় ১৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।

সরকার গঠিত কমিটির খসড়া প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৬২২। মৃত্যুর এই সংখ্যা হাসপাতাল থেকে নেওয়া। অবশ্য আন্দোলনের সময় নিহত অনেককে হাসপাতালে আনা হয়নি। তাই প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এটি একটি প্রাথমিক বা খসড়া তালিকা। এখন তথ্য–উপাত্ত শুদ্ধকরণের (ডেটা ক্লিনিং) কাজ চলছে। এই তালিকা ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হবে। তখন আরও কিছু নাম হয়তো যোগ হবে। মৃত্যুর সংখ্যাতেও পরিবর্তন আসবে।

আন্দোলনে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস)।

গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আহত ও নিহত মানুষের সংখ্যা তালিকায় আছে। এমআইএসের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সব বিভাগের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে যে তথ্য দিয়েছে, এমআইএস তার সংকলন করেছে। তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই কার্যক্রম এখনো চলমান।

কোন বিভাগে কত আহত

সরকারি হিসাবে আন্দোলনে এ পর্যন্ত আহত মানুষের সংখ্যা ১৮ হাজার ২৪৭। আট বিভাগের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে ১১ হাজার ৭৩ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম আহত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এই বিভাগে আহত হয়েছে ২৩৬ জন।

ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এই বিভাগে ১ হাজার ৭৩৮ জন। এরপর খুলনা বিভাগে ১ হাজার ৫৪৬ জন। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে যথাক্রমে ১ হাজার ২০৫ জন ও ১ হাজার ১৫৪ জন। সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে যথাক্রমে ৭১৮ ও ৫৭৭ জন।

এমআইএস যে তথ্য পেয়েছে, তাতে দেখা যায়, আহত মানুষের মধ্যে ১০ হাজার ৯৩৯ জন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছে ৬ হাজার ৮৬৫ জন।

এমআইএস সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তথ্য নিয়েছে। তাতে দেখা যায়, আহত মানুষের বেশির ভাগ চিকিৎসা নিয়েছে সরকারি হাসপাতালে। ১৮ হাজার ২৪৭ জন আহত মানুষের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ১৫ হাজার ৬৮৯ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ২ হাজার ৫৫৮ জন। তবে বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের কোনো জেলায় কেউ বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়নি। এই চার বিভাগে কোনো আহত ব্যক্তি বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিলেও তা কেউ সরকারকে এখনো জানায়নি।

মৃত্যুর তালিকায় দেখা যায়, আন্দোলনের সময় সব বিভাগেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে মারা গেছে ৪৭৭ জন। সবচেয়ে কম মারা গেছে বরিশাল বিভাগে, একজন। চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে মারা গেছে যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন। সিলেট, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ জেলায় মারা গেছে যথাক্রমে ২২, ১৯ ও ১৭ জন।

মৃত্যুর সব তথ্য আসেনি


সারা দেশে আন্দোলনের সময় নিহত ৬২২ জনের তথ্য পেয়েছে এমআইএস। সবার তথ্য হাসপাতালে আছে। তবে কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা হাসপাতাল সূত্রের বাইরে অন্য সূত্র থেকে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা বের করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

মৃত্যুর ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সহিংস ঘটনার পর ৪৪৩ জনকে মৃত অবস্থায় (ব্রট ডেড) হাসপাতালে আনা হয়েছিল। বাকি ১৭৯ জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

মৃত্যুর তালিকায় দেখা যায়, আন্দোলনের সময় সব বিভাগেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে মারা গেছে ৪৭৭ জন। সবচেয়ে কম মারা গেছে বরিশাল বিভাগে, একজন। চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে মারা গেছে যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন। সিলেট, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ জেলায় মারা গেছে যথাক্রমে ২২, ১৯ ও ১৭ জন। এই আন্দোলনে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে রংপুরে। এই বিভাগে সহিংসতায় মারা যায় ৪ জন।

১৬ জুলাই থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া হিসাবে ৭৬০ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে গণমাধ্যমটি।

প্রতিবন্ধী হাজারের ওপর

সংঘর্ষ–সহিংসতায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৩ হাজার ৪৮ জনের আঘাত বা জখম ছিল গুরুতর। এদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। তবে অস্ত্রোপচার ও সব ধরনের চিকিৎসা শেষে অন্তত ৫২৫ জন কমবেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

আন্দোলনের সময় পুলিশ নানা ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে। আন্দোলনের শুরুর দিকে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ নির্বিচার ছররা গুলি ছুড়েছিল। ছররা গুলিতে বহু মানুষের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এমআইএসের হিসাবে দেখা যায়, চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়া মানুষের সংখ্যা ৬৪৭। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি, ৬০৩ জন। ঢাকার পরে সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রাম বিভাগে, ২২ জন। বাকি ছয় বিভাগে চোখে গুরুতর আঘাত লাগা মানুষের সংখ্যা ২২। কেউ দুই চোখের; আবার কেউ এক চোখের দৃষ্টিশক্তি চিরদিনের জন্য হারাতে পারে।

তালিকা তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে রোগীর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা থাকে না। একসঙ্গে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে থাকলে রোগীর সব তথ্য লিখে রাখা হাসপাতালের কর্মীদের পক্ষে সম্ভব হয় না। আবার অনেক সময় রোগীর দেওয়া মুঠোফোন নম্বর ভুল থাকে। অপূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ও ভুল মুঠোফোন নম্বর থেকে আহত মানুষকে শনাক্ত করা বা বেছে বের করা কঠিন। এই খসড়া তালিকা ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। কেউ বাদ পড়লে সে চিকিৎসা নিয়েছে, এমন প্রমাণ হাসপাতালে দেখাতে হবে। এরপর হাসপাতাল থেকে তার নাম এমআইএসে পাঠালে তা তালিকায় তোলা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার ১৫ আগস্ট সাম্প্রতিক গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও শহীদ পরিবারকে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন এবং শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে ১৩ সদস্যের কমিটি করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও কমিটিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিসহ আটটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি আছেন।

মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এটি প্রাথমিক তালিকা। এই তালিকা শুদ্ধ করতে হবে। তালিকা শুদ্ধ হওয়ার পর কারা কীভাবে সহায়তা পাবে তা সরকার ঠিক করবে।’

তথ্যসূত্র: প্রথম আলো

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবিটি




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago