ঢাকার আশুলিয়ায় ইতিহাস পরিবহনের চালক ও সহকারীর মৃত্যুর ঘটনায় নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা নাটক সাজিয়েছিলেন হেলপার পরিচয় দেওয়া আব্দুর রহমান। তাদের মৃত্যুর কারণ পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। অপর একটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতার কারণেই ওই দুজন নিহত হন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আব্দুল্লাহিল কাফি।
এর আগে সোমবার দুপুর ২টায় আহত ওই চালক ও সহকারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা মারা যান।
নিহতরা হলেন– গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার ফোরকান হোসেনের ছেলে সোহেল রানা বাবু (২৬); ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে হৃদয় (৩০)। তারা রাজধানীর মিরপুরে বসবাস করে ইতিহাস পরিবহনে চালক ও সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ জানায়, মূলত আব্দুর রহমান ইতিহাস পরিবহনের স্টিয়ারিংয়ে বসে বাসটি চালাচ্ছিলেন। নিহতদের একজন ছিলেন গাড়ির দরজা সোজা সড়কে, অপরজন ছিলেন গাড়ির দরজায়। আব্দুর রহমান অপর একটি বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে বাস বাঁয়ে চাপায়। এ সময় নিহত সোহেল ও হৃদয় দুই বাসের মাঝে পড়ে চাপা খায়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় আব্দুর রহমান বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। পরে ফিরে এসে পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানায় সে ওই গাড়ির হেলপার।
আব্দুর রহমান পুলিশকে তার বক্তব্যে বলে, ‘মিরপুর থেকে ছেড়ে আসে ইতিহাস পরিবহনের ওই বাসটি। চালক ও সহকারী (সুপারভাইজার) ঈদ উপলক্ষে বাড়তি ভাড়া চায় যাত্রীদের কাছ থেকে। প্রায় সব যাত্রীই বেশি ভাড়া দিয়ে দেয়। তবে একজন বেশি ভাড়া দিতে রাজি হয়নি। এই বেশি ভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে চালক ও সহকারীর সঙ্গে যাত্রীর বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ওই যাত্রী ফোন করে তার সহযোগীদের খবর দেয়। এরপর ১০ জন গাড়িতে উঠে চালক ও সহকারীকে বেধড়ক মারধর করে। তাদের উদ্ধার করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।’
আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায়, প্রাথমিক সুরতহালে ১০ থেকে ১২ জন মিলে মারধরের কোনও চিহ্নই পাওয়া যায়নি। একজনের পিঠে একটি আঘাতে চিহ্ন এবং অপরজনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এতে সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে ওই চালক আব্দুর রহমানকে খুঁজে বের করে পুলিশ। যে হেলপার পরিচয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিয়েছিল। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সেদিন কী ঘটেছিল তার বর্ণনা দেয় সে। মূলত নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা গল্প সাজিয়েছিল আব্দুর রহমান।
এ ব্যাপারে ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী বলেন, ‘আব্দুর রহমান নিজেকে বাঁচাতে যাত্রীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। এর আগে সাংবাদিকদের কাছে বা পুলিশ অফিসারের কাছে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিল তাতে আমাদের খানিকটা সন্দেহ হয়। কেননা তার বক্তব্য অনুযায়ী ১০-১২ কিংবা ১৫ জন ব্যক্তি মিলে বাস থেকে নামিয়ে দুই জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। কিন্তু প্রাথমিক সুরতহালে এমন কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তার বক্তব্যের সঙ্গে আঘাতের চিহ্নের কোনও মিল নেই। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করি আমরা।
‘তদন্ত করতে গিয়ে আমরা একজন প্রত্যক্ষদর্শীকে পাই। যিনি আমাদের জানান এখানে দুই বাসের মাঝে চাপ খেয়ে সোহেল ও হৃদয় আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে সেখানে মৃত্যু হয়। আমাদের হাইওয়ে পুলিশের র্যাকার কর্মকর্তা ওই বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে গিয়েছিলেন তার বক্তব্যেও সেখানে মারামারি হয়েছে এরকম কোনও তথ্য পাইনি। পরবর্তী সময়ে আজ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অর্থাৎ যিনি বাসের হেলপার পরিচয় দিয়ে এই ঘটনাগুলো বলেছিলেন তার সঙ্গে আবারও আমরা কথা বলি। এক পর্যায়ে তিনি প্রাথমিকভাবে এরকম বলেন, আসলে স্টিয়ারিংয়ে তিনি নিজেই ছিলেন। ওই সময় তিনি নিজেই ইতিহাস পরিবহনের বাস চালাচ্ছিলেন। মা-বাবার দোয়া নামে অন্য একটি পরিবহন তাদের বাঁ পাশে ছিল। মা-বাবার দোয়া বাসটি যখন আগে যাচ্ছিল তখন আব্দুর রহমান নিজে আগে থাকার জন্য প্রতিযোগিতা করে গাড়ি বাঁয়ে চাপায়। নিহত দুই জনের একজন রাস্তায় ছিলেন অর্থাৎ বাসের বাইরে ছিলেন। আরেকজন বাসের গেটের দিকে ছিলেন। বাসটি যখন জরুরি ভিত্তিতে বাঁয়ে চাপাতে যায় তখন ওই দুই ব্যক্তি বাঁয়ে থাকা মা-বাবার দোয়া পরিবহনের সঙ্গে চাপা খায়। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে তদন্তে আমরা এতটুকু পেয়েছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত করে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারবো আসলে সেদিন কী ঘটেছিল। প্রাথমিকভাবে আব্দুর রহমান যা বলেছেন তার সঙ্গে আজকের বক্তব্যের কোনও মিল নেই। ঘটনার পর বাস থেকে লাফিয়ে তিনি পালিয়ে যান। তার গায়ে কালো শার্ট পরা ছিল। এটি প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য। তবে আজ তার বক্তব্যে উঠে এসেছে তিনি মামলা, শাস্তি কিংবা জেলের ভয়ে গতকাল নাটক সাজিয়েছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন তার যে দুই সঙ্গীই মারা গেছেন। আর এত ব্যস্ত সড়কে হয়তো বিষয়টি কেউ খেয়াল করবে না। বোধহয় এভাবে বললে এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে। এটি প্রাথমিকভাবে তিনি স্বীকার করেছেন।’
আরও খবর: বাড়তি ভাড়া চাওয়ায় যাত্রীদের মারধরে চালক-হেলপারের মৃত্যু
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…