সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এজন্য নানা কর্মসূচি ও উদ্যোগ গ্রহণ করলেও গত চার বছরে দেশের ম্যালেরিয়া পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। বরং প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা বেড়েছে। কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃতি, মশা ও মানুষের আচরণে পরিবর্তনের কারণে গতানুগতিক পদ্ধতি কোনও কাজে আসছে না। এভাবে চলতে থাকলে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে মনে করেন তারা।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘আরও ন্যায়সঙ্গত বিশ্বের জন্য ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই ত্বরান্বিত করা’।
সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এক হাজার ১৫৮ জন ম্যালেরিয়ার রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৪৩ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে রাঙামাটিতে, ৪০ শতাংশ বান্দরবান ও ১২ শতাংশ কক্সবাজারে। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন দুই জন।
গত বছর ২০২৩ সালে দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত শনাক্ত হয় ১৬ হাজার ৫৬৭ জন, মৃত্যু হয় ৬ জনের। এর আগে ২০২২ সালে শনাক্ত হয় ১৮ হাজার ১৯৫ জন এবং মৃত্যু হয় ১৪ জনের। ২০২১ সালে আক্রান্ত হয় ৭ হাজার ২৯৪ জন ও মৃত্যু হয় ৯ জনের। ২০২০ সালে আক্রান্ত হয় ৬ হাজার ১৩০ জন ও মৃত্যু হয় ৯ জনের। অর্থাৎ, ২০২০ সালের পরবর্তী চার বছরে রোগী বেড়েছে চার গুণ।
বিগত বছরগুলোতে রাঙ্গামাটি জেলার ভারত সীমান্তবর্তী চারটি উপজেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৭ সালে সীমান্তবর্তী বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় জেলার মোট ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৭৫ শতাংশ রোগী পাওয়া গেলেও এখন সেটি দাঁড়িয়েছে ৯০ শতাংশে। ঘন বন, গহীন জঙ্গল ও দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে এ চারটি উপজেলায় বাড়ছে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি।
পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে এখন বান্দরবান ও রাঙামাটি বেশি ঝুঁকিতে। খাগড়াছড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও পার্বত্য জেলা হওয়ায় এখানে ঝুঁকি কম নয় বলে জানায় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ম্যালেরিয়ায় বিশ্বে ৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ কোটি ৯০ লাখ মানুষ। ম্যালেরিয়ায় মারা যাওয়া রোগীদের ৯০ শতাংশই আফ্রিকা অঞ্চলের। নব্বইয়ের দশক থেকেই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মশারি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ম্যালেরিয়া হ্রাস করার বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা স্থবির হয়ে পড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি এবং কমিউনিটির মধ্যে বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। প্রত্যেকেরই মানসম্পন্ন, সময়োপযোগী এবং সাশ্রয়ী মূল্যের ম্যালেরিয়া পরিষেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে, তবু এটি অনেকের কাছে এখনও অধরা রয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৩টি জেলা ম্যালেরিয়াপ্রবণ। এর মধ্যে দুই জেলা বান্দরবান ও রাঙামাটিতে ৯০ শতাংশ রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এটি গত ১০ দশ বছর ধরে একই হারে চলছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার নিম্নঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত।
তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে মোট রোগীর ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় বান্দরবানে, ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ রাঙামাটি ও ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় কক্সবাজারে। ২০২২ সালে ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয় বান্দরবন জেলায়, ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ রাঙ্গামাটি ও ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কক্সবাজারে। এর আগের বছর ২০২১ সালে মোট শনাক্ত ৭১ দশমিক ৭ শতাংশ, ২১ দশমিক ৩ শতাংশ রাঙ্গামাটি ও ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কক্সবাজারে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দুর্গম এলাকায় দক্ষ চিকিৎসকের স্বল্পতা ও সহজে চিকিৎসা দিতে না পারা, নগরায়ণ ও সময়ের পরিবর্তিত বাস্তবতায় মানুষের দ্রুত অবস্থানগত পরিবর্তন, জলবায়ুগত পরিবর্তন প্রভৃতি চ্যালেঞ্জ এখনও রয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার মনে করেন, ম্যালেরিয়া নির্মূলের একইপদ্ধতি অনেক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু এ সময়ে প্রকৃতি, মশা ও মানুষের আচরণে পরিবর্তন হয়েছে। যে কারণে মশা নির্মূল কিংবা রোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনা কোনটাই সম্ভব হচ্ছে না। ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে হলে প্রথমে গতানুগতিক পদ্ধতির পরিবর্তন জরুরি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের সাথে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত রয়েছে। এই দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষকে নিয়ে ম্যালেরিয়া নির্মূলে একযোগে কাজ করতে হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের যে সব জায়গায় যাওয়া খুব কঠিন যেসব এলাকার স্থানীয় মানুষদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় গতানুগতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ম্যালেরিয়া নির্মূল করা সম্ভব না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান বলেন, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা আশাবাদী। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। তবে আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হলো পার্বত্য তিন জেলা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ রোগী বান্দরবানে। আমাদের দেশের নির্দিষ্ট সীমান্ত রয়েছে কিন্তু সীমান্তবর্তী ক্রস বর্ডার এলাকায় ঝুঁকি এবং প্রকোপ অনেক বেশি। আমরা যদি আগরতলাসহ বিভিন্ন সীমান্তবর্তী ক্রসগুলো ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারি তাহলে টার্গেট অনুযায়ী নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে কোনও সমস্যা হবে না।
তিনি আরও বলেন, রোগী না কমার পেছনে একটি বড় সমস্যা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। কিছু এলাকা আছে যেখানে রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা ওয়ান থ্রি সেভেন ফর্মুলা অনুযায়ী কাজ করছি। অর্থাৎ, ম্যালেরিয়া রোগের শনাক্তকরণ করতে হবে একদিনের মধ্যে, ৩ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ম্যালেরিয়া নিশ্চিত করে রিপোর্ট দিতে হবে এবং ৭ দিনের মধ্যে আশেপাশে কোনও রোগী আছে কিনা তারও খোঁজ নিতে হবে। এই ফর্মুলা ব্যবহার করে চীন ম্যালেরিয়া নির্মূল করেছে। প্রতিটি রোগী আমরা ফলো করছি। গবেষণা ও সার্ভিল্যান্স বৃদ্ধি করাসহ বিনামূল্যে মশারি এবং ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…