চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। তবে রোগী বাড়লেও মশানিধনে নগরী ও উপজেলায় ছিটানো হচ্ছে না পর্যাপ্ত ওষুধ। এডিস মশার প্রজননক্ষেত্রগুলো ধ্বংস এবং নিয়মিত মশা মারার ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম চোখে পড়ছে না কারও। অথচ গত বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছেন জেলার বাসিন্দারা। যার সংখ্যা ছিল ১০৭ জন। যা বিগত যেকোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি। চলতি বছর এখন পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ২৫৪ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, রবিবার (১৪ জুলাই) চট্টগ্রামে ১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ সাত, নারী তিন ও শিশু একজন। এ নিয়ে চলতি বছর ২৯০ জন আক্রান্ত হলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১৬৫, নারী ৭০ ও শিশু ৫৫ জন।
৩ জনের মৃত্যু
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৬৯, ফেব্রুয়ারিতে ২৫, মার্চে ২৮, এপ্রিলে ১৮, মে-তে ১৭, জুনে ৪১ এবং ১৪ জুলাই পর্যন্ত ৯২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি মাসে আক্রান্তদের মধ্যে নগরীর ২১ এবং জেলার ৭১ জন। এ বছর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত লোহাগড়া উপজেলায় ৭৫ জন। এ ছাড়া হাটহাজারীতে ১১, বোয়ালখালীতে ১০ এবং রাঙ্গুনিয়া ও সীতাকুণ্ডে ৯ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন ১০৭ জন। আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৪ হাজার ৮৭ জন। ২০২২ সালে পাঁচ হাজার ৪৪৫ আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা গিয়েছিলেন ৪১ জন। ২০২১ সালে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৭১ জন। এর মধ্যে মারা গিয়েছিলেন পাঁচ জন। চলতি বছর মারা গেছেন তিন জন। এর মধ্যে পুরুষ দুজন ও একজন নারী।
চিকিৎসার জন্য নেই আলাদা ইউনিট
নগরীর বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আক্রান্ত বাড়লেও সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। রোগীদের জন্য চিকিৎসার জন্য নেই আলাদা ইউনিট। সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে অন্যদেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে।
ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডেঙ্গু চিকিৎসায় আমাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসার প্রস্তুতি আছে। এটি মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু দমন করতে হলে এডিস মশা মারতে হবে। এর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।’
তিন বছরের মধ্যে গত বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি একেবারেই আমাদের সব ধারণাকে ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘আমরা যদি সচেতন না হই, তাহলে এই পরিস্থিতি এবারও খারাপ হবে।’
মশকনিধন কার্যক্রম বন্ধ
গত বছর ঢাকঢোল পিটিয়ে মশকনিধনে নানা কর্মসূচি পালন করেছিল সিটি করপোরেশন। এবার তেমন কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না। অথচ এডিস মশার প্রজননের মূল মৌসুম শুরু হয়েছে চলতি জুলাই মাস থেকে। চলবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত বছরের বিপর্যয় মাথায় রেখে মশানিধন কার্যক্রমে জোর দেওয়া উচিত বলে চিকিৎসকরা মত দিলেও সিটি করপোরেশনের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি নগরবাসীর।
নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ সঙ্গীত এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ তালুকদার বলেন, ‘এডিস মশার উপদ্রব বাড়লেও সিটি করপোরেশনের কর্মীদের ওষুধ ছিটানোর কোনও কার্যক্রম চোখে পড়ছে না আমাদের। সঙ্গীত আবাসিক এবং মফজল আহমদ মসজিদ এলাকায় গত এক বছরে সিটি করপোরেশনের কেউ মশার ওষুধ ছিটিয়েছে এ রকম দৃশ্য চোখে পড়েনি। গত বছর এই এলাকায় বিপুল সংখ্যক লোক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। এরপরও সিটি করপোরেশন ওষুধ ছিটানোর ওপর জোর দিচ্ছে না। কেন দিচ্ছে না, তা জানি না।’
একই কথা বলেছেন নগরীর দেওয়ানবাজার শান্তিরবাগের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমার এলাকায় গত ছয় মাসে সিটি করপোরেশনের কোনও কর্মীকে মশানিধনের জন্য ওষুধ ছিটাতে দেখিনি। গত বছর অনেকে আক্রান্ত হয়েছিল। এবারও আক্রান্ত হচ্ছে। এরপরও মশানিধনে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম নেই।’
কেন বন্ধ কার্যক্রম?
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম মাহী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম চলমান আছে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রস্তুতি ভালো। সিটি করপোরেশনের কাছে ২০ হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইড ও তিন হাজার লিটার ফরমুলেশনবিহীন লার্ভিসাইড (লার্ভা মারার ওষুধ) মজুত আছে। ১৬ হাজার লিটার এলডিইউ (কালা তেল) মজুত আছে। ভেষজ ওষুধ ‘মসকুবার’ মজুত আছে ৮০০ লিটার।’
অনেকে বলেছেন তাদের এলাকায় ওষুধ ছিটাতে কাউকে দেখেননি এমন প্রশ্নের জবাবে শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘মশকনিধন কার্যক্রমে গতি আনার জন্য নতুন করে ৬০টি ফগার মেশিন ও ১০০টি স্প্রে মেশিন কেনা হয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে সিটি করপোরেশনের কাছে ১৫০টি ফগার মেশিন এবং ২৫০টি স্প্রে মেশিন রয়েছে। মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৪০০ জন আছে। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় ছিটানো হবে।’
ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধের কথা বললেন মেয়র
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডেঙ্গুরোধে সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনার মতো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। নগরীর প্রত্যেক সংস্থা, সামাজিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সোসাইটির নেতৃবৃন্দ, মসজিদে জুমার নামাজে মাধ্যমে নাগরিকদের সচেতন করতে পারলে করোনার মতো ডেঙ্গুও প্রতিরোধ সম্ভব হবে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আমাদের চারপাশে যেসব জায়গায় এডিস মশা জন্মায় সেসবে যাতে জন্মাতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নালা-নর্দমায় এডিস মশা জন্মায় না। পরিষ্কার ও বদ্ধ পানি প্রজননক্ষেত্র। তাই বাসাবাড়ির আশপাশে ডাব, নারকেলের খোসা, প্লাস্টিকের বোতল, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার, ছাদবাগান ও জমানো পানি তিন দিনের বেশি যাতে জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
আক্রান্তের হার আরও বাড়তে পারে
এবার রোগী কম হলেও ডেঙ্গু নিয়ে বিপদ এখনও দূর হয়নি বলে জানালেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভয়াবহ পর্যায়ে যায়নি। তবে গত বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু এবং আক্রান্ত হয়েছিল। এবারও মশা আছে, হয়তো এই মাসের শেষের দিকে আক্রান্তের হার বাড়তে পারে। এডিস মশার প্রজননকালের চূড়ান্ত সময় এখন। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। যেসব স্থানে এডিস জন্মায় তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…