গুম-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনে পক্ষভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস কোনও ধরনের রিজারভেশন বা ডিক্লারেশন ছাড়াই পক্ষভুক্ত হওয়ার দলিলে সই করেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিষেশজ্ঞরা।
তাদের মতে, এটি প্রথম ধাপ এবং লক্ষ্য থাকতে হবে এই কনভেনশনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে গুম বা এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়া প্রতিরোধ তৈরি করা। এটি প্রয়োগের জন্য নতুন আইন প্রণয়নের পাশাপাশি প্রচলিত আইনের পর্যালোচনা করে সংশোধন করারও প্রয়োজন রয়েছে।
পরিবর্তিত অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটি হাতছাড়া যেন না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান বলেন, ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ। গুম, আইনবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ রোধে নতুন ব্যবস্থা চালু করার ক্ষেত্রে এখন সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।’
সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতীতের অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা এবং মানবাধিকার রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য দরকার অভ্যন্তরীণ যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলোকে শক্তিশালী এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।’
সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতা এই কনভেনশনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে বাড়বে এবং পররাষ্ট্রনীতিতে এর সুফল ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে।’
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ কাওসার আহমেদ বলেন, ‘এই কনভেনশনে পক্ষ হওয়াটা খুব জরুরি ছিল। গুম ও নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা সম্ভব হলে মানবাধিকার সুরক্ষা করা অনেক সহজ হবে।’
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞদের তরফ থেকে একাধিকবার এই কনভেনশনে পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ সাইকেলের ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউর সময়ে কনভেনশনে পক্ষভুক্ত হওয়ার সুপারিশ সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গ্রহণ করা হয়নি।’
উল্লেখ্য, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের ৯টি মৌলিক কনভেনশন আছে। এর মধ্যে আটটি কনভেনশনে বাংলাদেশ পক্ষভুক্ত হয়েছিল। বাকি ছিল ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পার্সনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসএপিরেন্স এবং সেটিতেও বাংলাদেশ এখন পক্ষভুক্ত হলো।
পক্ষভুক্ত হওয়ার পরে কী
সাধারণভাবে আন্তর্জাতিক কোনও দলিলে পক্ষভুক্ত হওয়ার দুটি পদ্ধতি আছে—একটি অ্যাক্সেসনের মাধ্যমে সরাসরি পক্ষভুক্ত হওয়া, অন্যটি প্রথমে কনভেনশনে সই (সিগনেটরি) করা এবং পরবর্তী সময়ে অনুস্বাক্ষর (রেটিফিকেশন) করা। বাংলাদেশ অ্যাক্সেসনের মাধ্যমে সরাসরি পক্ষভুক্ত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী দলিলটি জাতিসংঘে জমা দেওয়ার ৩০তম দিনে এই কনভেনশন বাংলাদেশের জন্য বলবৎ হবে।
এ বিষয়ে কাওসার আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের আইনি কাঠামোতে গুমকে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। ফলে কনভেনশনের আলোকে এখন নতুন আইন তৈরি করার প্রয়োজন হবে।’
গুম-সংক্রান্ত আইনের পাশাপাশি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে আইনগুলো রয়েছে যেমন ফৌজদারি আইনও পর্যালোচনা করে প্রয়োজন হলে পরিবর্তন করতে হবে। এর মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিরোধব্যবস্থা
গুম, নির্যাতন বা আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো অপরাধ হলে বিচার করতে হবে। পাশাপাশি এ অপরাধগুলো যাতে সংঘটিত না হয়, সে জন্য একটি আইনি কাঠামোতে প্রতিরোধব্যবস্থা থাকা জরুরি।
এ বিষয়ে কাওসার আহমেদ বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক যে অপরাধ হলে বিচার হবে। কিন্তু অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিরোধব্যবস্থা থাকলে অপরাধ সংঘটনের মাত্রা কম হবে।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার থেকে শুরু করে পুলিশের যাবতীয় কার্যক্রম একটি আইনি বিষয়। আইনের এই প্রয়োগ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য একটি ম্যাকানিজম থাকা দরকার আছে। এ ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা হেফাজত বা এ ধরনের কার্যক্রমে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এটি ওয়ারেন্ট হতে পারে বা গ্রেফতার ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করা বা আইন যা বলে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে বলে তিনি জানান।
গুম কনভেনশন কী
গুম-সংক্রান্ত কনভেনশনটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয় এবং ২০১০ সালে এর অধীনে কার্যক্রম শুরু হয়। ভুক্তভোগী পরিবার ও এনজিওদের দাবির প্রেক্ষিতে জাতিসংঘে এটি গৃহীত হয়।
সারা বিশ্বে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় বা অন্য ক্ষেত্রে গুমের সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার কারণে এই কনভেনশনটি আনা হয়। গুম পরিত্যাগ, এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি প্রতিরোধ এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়ার জন্য সামষ্টিক প্রচেষ্টাই হচ্ছে এই কনভেনশনের উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশের আগে ৭৫টি দেশ এই কনভেনশনের সঙ্গে যুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেছে অর্থাৎ এটি তাদের অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ভারত শুধু এটি স্বাক্ষর করেছে এবং তাদের অনুস্বাক্ষর করা বাকি আছে। অন্যদিকে জাতিসংঘের পঞ্চশক্তির মধ্যে শুধু ফ্রান্স এটিকে অনুস্বাক্ষর করেছে।
এই কনভেনশনে গুমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই কনভেনশনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না, এটি দেখার জন্য জাতিসংঘের একটি কমিটি কাজ করে এবং এর সদস্য সংখ্যা ১০।
ওই কমিটি পক্ষভুক্ত রাষ্ট্রীয় নিয়মিত প্রতিবেদন পরীক্ষা করবে। কনভেনশনটির ৩৩ ধারায় বলা আছে, পক্ষভুক্ত কোনও দেশে যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে গুমের ঘটনা ঘটে, তবে ওই দেশের পরিস্থিতি দেখার জন্য কমিটি সদস্যরা সফরও করতে পারে। ধারাটি পক্ষভুক্ত অনেক দেশ মেনে নেয়নি।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…