Categories: Bangladesh News

খুলনায় রূপসার জোয়ারে দিন-রাতে প্লাবিত হচ্ছে ২ ওয়ার্ড, ঘরে উঠছে পানি


দুর্ভোগের শেষ নেই খুলনা মহানগরীর ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষদের। প্রতিদিন দুপুরে রূপসা নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। ফলে বৃষ্টির সময় দুর্ভোগ আরো চরম আকার ধারণ করে। বৃষ্টি আর আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় এই দুটি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ড্রেন উপচে পানি প্রবেশ করে বাসাবাড়ির মধ্যে। ড্রেনের বর্জ্যে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এ দুর্ভোগের হাত থেকে মুক্তি চান এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ষাটের দশকে নির্মিত স্লুইচ গেটগুলোর অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিদিন দুপুরে রূপসা নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। তাছাড়া, অপরিকল্পিত সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ, নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ না করা, উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের ধীরগতিসহ খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ কাটছে না।

ভুক্তভোগীরা জানান, নদীর জোয়ারের পানিতে নাকাল খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী রোডের বাসাবাড়ি, দোকান, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সসহ গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়। বিশেষ করে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নগরীর টুটপাড়া মেইনরোড, বড় খালপাড়, মোল্লাপাড়া, জিন্নাহপাড়া, টিবি ক্রসরোডসহ ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত থাকে এসব এলাকা। পানিবন্দি এসব এলাকার মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।

নগরীর টুটপাড়া বড়খালপাড় এলাকার বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জলাবদ্ধতা আমাদের প্রতিদিনের চিত্র। প্রতিদিন জোয়ারের সময় রূপসা নদীর পানিতে টুটপাড়া বড়খালপাড় এলাকা ডুবে যায়। এর সঙ্গে খালের আশপাশের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়ি প্লাবিত হয়। হাঁটু সমান এই পানি থাকে দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।’

ঘর থেকে পানি সরানোর কাজে ব্যস্ত এক বাসিন্দা

তিনি আরও বলেন, ‘রূপসা নদীর তলদেশ পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া ড্রেনগুলোর তলদেশও ময়লা-আবর্জনা ও পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। রূপসা নদীর পলি খনন ও ড্রেনের তলদেশের মাটি অপসারণ  করা না হলে দীর্ঘদিনের এ সমস্যা রয়ে যাবে।’

নগরীর দিলখোলা রোডর বাসিন্দা দিনমজুর মো. দুলাল বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের ৩ মাস এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় আমাদের। বর্তমানে প্রতিদিন দুপুর আড়াইটা থেকে বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করে। সেই পানি সন্ধ্যা ৬টা-৭টা পর্যন্ত থাকে। আবার রাত আড়াইটা থেকে পানি উঠতে শুরু করে। দুই দফায় প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা পানিবন্দি থাকেন তারা। ফলে অমানবিক জীবনযাপনের পাশাপাশি দিনে অধিকাংশ সময় পার হয় পানির হাত থেকে আসবাবপত্র বাঁচাতে।’

গৃহবধূ কোহিনুর বেগম বলেন, ‘নোংরা পানির কারণে রোগ ব্যাধির আশঙ্কাতো আছেই তারপরও সাপ, পোকামাকড়, ড্রেনের ময়লা ঘরে প্রবেশ করে। রান্না ঘরে হাঁটু সমান পানি আবার রাইস কুকারে রান্না করতে গেলে বিদ্যুৎ শর্টের ভয় রয়েছে। অধিকাংশ দিনই শুকনো খাবার খেতে হচ্ছে।’

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধারাবাহিক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এখানে মূল যে সমস্যাগুলো হছে- সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের কর্মকর্তারা উদাসীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং কোনো প্রকার জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতার মধ্যে নেই। যে কারণে স্লুইচগেটগুলো একেবারেই অচল এবং জোয়ারের পানি ঘরে উঠে যায়। একেবারে ঘর, বাথরুম, টয়লেট সবমিলে একাকার হয়ে যায়। মানুষের জীবন শুধু অসহনীয় নয়, অসহনীয়তারও চরম পর্যায়ে ছাড়িয়ে গেছে। এ অঞ্চলের মানুষ কেমন করে বসবাস করে এটা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।’

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের ইসলামপাড়া, আমতলা, মোল্লাপাড়া, মুজাহিদপাড়া এবং মতিয়াখালী এই পাঁচটা এলাকা প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। ৩-৪ বছর ধরে এমন হচ্ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর একটা ব্যবস্থা করার আশ্বাস সবাই দিয়েছেন। কিন্তু আমরা সমাধান পাচ্ছি না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মূল সমস্যা হলো মাহাবুব ব্রাদার্স ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটি স্লুইচ গেট ভেঙে ফেলেছে। আর এদের কাজ এতো ধীরগতি, যার কারণে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ছে। মেসার্স সেলিম নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানও বাঁধ দিয়ে কাজ করছে। আমার বাড়িতেও দীর্ঘদিন পানি উঠছে, আমি নিজেই অসুবিধায় আছি। আমার জনগণও অসুবিধায় আছে।’

কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক মো. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। খুলনা মহানগরীর পানি অপসারণের জন্য ৭টি পয়েন্টে ১৯টি স্লুইচ গেট ও ৩৮টি আউটলেট রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি স্লুইচ গেটে কাজ চলছে। নগরীর পানি অপসারণের জন্য রূপসায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বুস্টার পাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার সমস্যা কাটবে বলে আশা করছি।’




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

6 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

6 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

6 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

6 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

6 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

6 months ago