Categories: Bangladesh News

খুলনায় ধরা পড়ছে একের পর এক স্বর্ণের চালান


পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল খুলনা স্বর্ণ পাচারের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। এই রুটে প্রায়ই ধরা পড়ছে স্বর্ণের ছোট বড় চালান। গ্রেপ্তারও হচ্ছেন চোরাকারবারিতে জড়িতরা। তবে, ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন মূল হোতারা। 

পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, অতিমাত্রায় আনা স্বর্ণের চালান খুলনা হয়ে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে চোরাইপথে ভারতে পাচার হচ্ছে। জুতা, জুতার সোল, প্যান্ট-শার্টের গোপন জায়গা, কোমর ও পায়ুপথসহ নানা পন্থা ব্যবহার করছেন চোরাকারবারিরা স্বর্ণ পাচারের জন্য। সর্বশেষ রোববার (১৯ মে) ভারতে পাচারকালে সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ২৪২ গ্রাম ৩০০ মিলিগ্রাম ওজনের তিন স্বর্ণের বারসহ এক নারী পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাতক্ষীরার ভোমরার লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ হাসিনা খাতুন (৪৮)। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীদাড়ি গ্রামের আইয়ুব আলির স্ত্রী।

আরও পড়ুন: পাচারকারীর কাছ থেকে স্বর্ণ ছিনতাই, ৩ পুলিশ গ্রেপ্তার

বিজিবি সূত্র জানায়, ভারতে স্বর্ণ পাচার করা হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সাতক্ষীরারস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটেলিয়ানের আওতাধীন ভোমরা বিওপির একটি দল লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্তে অবস্থান নেয়। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সীমান্তের ভেড়িবাঁধের দিকে যাওয়ার সময় বিজিবি হাসিনা খাতুনকে আটক করে। পরে তার দেহ তল্লাশি চালিয়ে ২৪২ গ্রাম ৩০০ গ্রাম ওজনের তিনটি স্বর্ণের বার জব্দ করে বিজিবি। জব্দকৃত স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য ২৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র মতে, স্বর্ণগুলো যখন ঢাকা থেকে আনা হয় তখন কিভাবে কোথায় রাখা হয় তা পুলিশসহ কোনো সংস্থাই সহজে ধরতে পারে না। 

জুতার ভেতরে কৌশলে পাচার করা হয় স্বর্ণের বার

এক কেজি স্বর্ণকে ‘এক গাড়ি’ বলে ওদের (পাচারকারিদের) সংকেত থাকে উল্লেখ করে সূত্রগুলো জানায়, এ সংক্রান্ত মোবাইল কথোপকথনের সময় গাড়ি উল্লেখ করায় মোবাইল ট্রাকিং বা অন্য কোনো উপায়েও ধরা কঠিন। যে কারণে দিনের পর দিন পাচারকারিরা অবৈধ কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও ইউনিক শব্দ কোড বা সংকেত হিসেবে ব্যবহার করে চোরাকারবারিরা। 

আরও পড়ুন: খুলনায় ১২ স্বর্ণের বারসহ যুবক গ্রেপ্তার

পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২ মে খুলনা নগরীর সাচিবুনিয়া এলাকায় যাত্রীবাহী বাস থেকে স্বর্ণের ৭টি বারসহ একজনকে আটক করে পুলিশ। বারগুলোর ওজন প্রায় ৭৫০ গ্রাম এবং মূল্য ৭০ লাখ টাকা। আটক ব্যক্তির নাম মো. আবু কালাম (৪৪)। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা এলাকার মো. আলী আহমেদের ছেলে। 

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম ওই সময় জানান, ঢাকা থেকে সাতক্ষীরাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি বাসে স্বর্ণ চোরাচালান করা হচ্ছিল। এরপর তারা বাসটি সাচিবুনিয়া মোড়ে থামিয়ে তল্লাশি করেন। যাত্রী আবু কালামের পায়ের স্যান্ডেলের ভেতর থেকে স্বর্ণের ৭টি বার জব্দ  হয়। স্বর্ণের বারগুলো তিনি (আবু কালাম) সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রতি মাসে তিনি এভাবে ৫ বা ৬ বার স্বর্ণের বার নিয়ে যেতেন। এবারই প্রথম ধরা পড়লেন।

গত ৬ মে ভারতে পাচার করার জন্য আনা ৬৩৫ গ্রাম ওজনের ৭ পিস স্বর্ণের বার জব্দ করে বটিয়াঘাটা উপজেলার লবণচরা থানা পুলিশ। বহনকারী আবু কালাম (৪০) নামে একজনকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সাচিবুনিয়া মোড়ে ইমাদ পরিবহনের একটা বাসে তল্লাশি চালিয়ে ওই স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছিল। 

লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমতাজুল হক বলেন, ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ইমাদ পরিবহনের একটি বাসে করে সাতক্ষীরা যাচ্ছিলেন আবু কালাম। তার জুতার চামড়ার মধ্যে ছিলো সাত পিছ স্বর্ণের বার। যার ওজন ৬৩৫ গ্রাম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাস থামিয়ে আবু কালামকে তল্লাশি করা হয়।  জুতার মধ্যে থেকে স্বর্ণের বারগুলো জব্দ হয়। ওই ঘটনায় লবনচরা থানায় স্বর্ণ পাচার মামলা হয়েছে। 

এর আগে, গত ২০ এপ্রিল নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে স্বর্ণের ১২পিস স্বর্ণের বারসহ মাসুম বিল্লাহ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরাগামী বাসে তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মাসুম বিল্লাহ সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার শাকড়া গ্রামের আলম গাজীর ছেলে। 

পুলিশ জানায়, ভারতে পাচারের জন্য ঢাকা থেকে স্বর্ণের বার বাসযোগে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জিরো পয়েন্ট এলাকায় টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাস থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। ওই বাসের যাত্রী মাসুম বিল্লাহ’র পায়ের জুতার নিচে কৌশলে রাখা স্বর্ণের বারগুলো জব্দ হয়। ওই স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় খুলনা লবণচরা থানার এসআই প্রদীপ বৈদ্য বাদী হয়ে মামলা করেন। 

প্রধান আসামি মাসুম বিল্লাহর স্বীকারোক্তিতে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আল ফেরদাউস আলফা, তার ভাই আলিম মেম্বার ও শাখরা গ্রামের দাউদ আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান মিলনকে মামলার আসামি করা হয়। 

গত ১২ জানুয়ারি রাতে খুলনায় চোরাকারবারির কাছ থেকে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইসাথে স্বর্ণ পাচারকারিকেও গ্রেপ্তার করে খুলনার লবণচরা থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- এসআই (নিরস্ত্র) মো. মোস্তফা জামান, এএসআই (নিরস্ত্র) আহসান হাবীব, কনস্টেবল মুরাদ হোসেন ও নগরীর খালিশপুর এলাকার স্বর্ণ পাচারকারী ব্যাসদেব দে। 

লবণচরা থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে এসআই (নিরস্ত্র) মো. মোস্তফা জামানের বাড়ি যশোর, এএসআই (নিরস্ত্র) আহসান হাবীবের বাড়ি বাগেরহাট ও কনস্টেবল মুরাদ হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরায়। ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে লবণচরা থানায় এসআই মোকলুসুর রহমান চোরাচালান ও দস্যুতার অভিযোগে মামলা করেন। 

পুলিশ জানায়, নগরীর লবণচরা থানার সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড়ে চেকপোস্ট বসায়। সে সময় টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেসের একটি বাসে অবৈধ স্বর্ণের বার নিয়ে এক ব্যক্তি খুলনা মহানগরীতে প্রবেশ করবে মর্মে তথ্য পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করেই এসআই মোস্তফা জামান এএসআই মো. আহসান হাবিব ও কনস্টেবল মো. মুরাদ হোসেনের সঙ্গে যোগসাজস করে সাচিবুনিয়া বিশ্বরোড মোড় এলাকার রূপসা ব্রিজ থেকে জিরো পয়েন্টগামী মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সামনে চেকপোস্ট পরিচালনা করে। পুলিশ দেখে একজন টুঙ্গীপাড়া পরিবহন থেকে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তল্লাশি করে ব্যাসদেব দে’র জিন্স প্যান্টের বেল্টের নিচের বর্ডার কেটে সুকৌশলে বানানো গোপন পকেট থেকে ৬টি স্বর্ণের বার বের করে এসআই মোস্তফা জামানের কাছে দেন। এরপর পুলিশ সদস্যরা আসামি ব্যাসদেব দে কে ভয় দেখিয়ে তিনটি স্বর্ণের বার নিয়ে বাকি তিনটি স্বর্ণের বারসহ তাকে ছেড়ে দেয়। ছিনতাই করা তিনটি স্বর্ণ বারের মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা। 

পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পেরে ওই তিন পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তখন অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্য ও পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

এর আগে, ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ১৫টি স্বর্ণের বারসহ ইমন ও আবুল হোসেন নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন দুুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ঢাকার বাসিন্দা। স্বর্ণের বারগুলো তারা ঢাকা থেকে ভারতে পাচারের উদ্দেশে সাতক্ষীরা নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানায় পুলিশ। 

তৎকালীন লবণচরা থানার ওসি এনামুল হক জানিয়েছিলেন, ইমন ও আবুল হোসেন নামে দুই জন টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে খুলনায় আসেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা নগরীর জিরোপয়েন্ট এলাকায় বাস থেকে নেমে অন্য বাসে সাতক্ষীরা যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশ তাদের তল্লাশি করে। তাদের জুতার ভেতর থেকে ১৫টি স্বর্ণের বার জব্দ হয়। বারগুলোর ওজন ছিল প্রায় ১ কেজি ৭৫০ গ্রাম। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছিলেন, বারগুলো তারা ভারতে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। 

২৩ মে খুলনার পথের বাজার চেকপোস্ট থেকে ১ কেজি ওজনের একটি স্বর্ণের বারসহ কুলসুম বেগম (৩৮) নামে নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত কুলসুম বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ থানার খাজুর বাড়িয়ার আবু তাহেরের স্ত্রী। 

লবণচরা থানার ওসি মো. মমতাজুল হক জানান, গত ২ মে আটক আবু কালামকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, স্বর্ণের বারের মালিক তিনি নন, তিনি শুধু বহনকারী। ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রতিবার তাকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হত। তিনি কার কাছ থেকে এনেছিলেন এবং কার কাছে দিতেন সেই নাম পাওয়া গেছে। সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, স্বর্ণের বার কোথা থেকে কীভাবে আসে, কোথায় যায়, পাচারের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। চোরাচালানের ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৪ বার হাতবদল হয়। যারা বহনকারী তারা হয়ত মূল হোতাকে দেখেও না। যার ফলে তার নামও জানে না। সে কারণে মূল হোতারা কেউ এখনও ধরা পড়েনি।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, গত ২০ এপ্রিল ১২টি স্বর্ণের বার উদ্ধারের ঘটনায় বহনকারী মাসুম বিল্লাহসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বারগুলো সাতক্ষীরার দেবহাটার আল ফেরদাউস আলফার কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। মাসুমকে গ্রেপ্তার করার আগে আলফা (সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য) তার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছিলেন। মাসুম বিল্লাহ কারাগারে আছেন। অন্য ৩ জন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, পরপর কয়েকটি চালান ধরা পড়ার পর আরও সক্রিয় হয়েছে পুলিশ। এই চোরাচালানের সঙ্গে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করা এবং তাদেরকে গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, ঢাকার স্বর্ণ চোরাকারবারিরা এখন ভারতে স্বর্ণের বার পাচারের জন্য খুলনা রুট বেছে নিয়েছেন। যে পরিমাণ স্বর্ণ পাচার হচ্ছে তার খুব কমই আটক হচ্ছে বলে তার ধারণা। এছাড়া স্বর্ণ বহনকারীরা আটক হলেও সাতক্ষীরা এবং ঢাকা-দুই প্রান্তের মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। মূল হোতাদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। 




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Uncomm

Share
Published by
Uncomm

Recent Posts

That is the POCO X7 Professional Iron Man Version

POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…

5 months ago

New 50 Sequence Graphics Playing cards

- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…

5 months ago

Good Garments Definition, Working, Expertise & Functions

Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…

5 months ago

SparkFun Spooktacular – Information – SparkFun Electronics

Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…

5 months ago

PWMpot approximates a Dpot

Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…

5 months ago

Keysight Expands Novus Portfolio with Compact Automotive Software program Outlined Automobile Check Answer

Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…

5 months ago