মতিঝিলের সিটি সেন্টারের পেছনে ক্লাবপাড়ায় গেলে কাছাকাছি দুটি ক্লাবে আনন্দ-উৎসবের ঢেউ দেখতে পাবেন। তাতে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ক্যাসিনো কাণ্ডের নেতিবাচক কলংকের ছাপ যেন কিছুটা হলেও এক লহমায় উবে গেছে! ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল কিংবা ওয়ান্ডারার্সে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। এমনটা না হওয়াই ছিল অস্বাভাবিক। পেশাদার ফুটবলে চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি ক্লাবই চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়ে নতুন মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলতে যাচ্ছে। এ যেন এতদিনের চরম প্রতিকূলতার মাঝে কঠোর লড়াই-সংগ্রামের ফল।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মতিঝিলের ক্লাপ পাড়ায় বড় অভিযান চালিয়েছিল আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে ছয়টি ক্লাবের ওপর মারাত্মক খড়গ নেমে আসে। মূল ফটকে পড়ে তালা। সেই অভিযানে ক্লাবগুলো বলতে গেলে লণ্ডভন্ড হয়ে যায়। তারপরও অভিযুক্ত ক্লাবগুলো দমে যায়নি। তাদের ক্রীড়া কার্যক্রম কম-বেশি চালিয়ে গেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাবগুলোর তালা শর্তসাপেক্ষে খুলেছে। তবে খোলার আগে সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। ট্রফিসহ মূল্যবান অনেক কিছুই খোয়া গেছে। চুরি হয়েছে জানালার রডও। এরপরও চার বছর পর তালা খুলে দেওয়ায় কর্মকর্তাদের হালে পানি ফিরেছে।
এই সময়ে যাযাবরের মতো এদিক-সেদিক থেকে কার্যক্রম চালিয়েছে সবাই। ক্যাসিনো কাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তারা নেই। নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়েছে আরও অনেক আগেই। দায়িত্ব নিয়েই কাজ চালিয়ে গেছেন। ক্লাব চালাতে গিয়ে নানান কটূ কথাও শুনতে হচ্ছে। তার পরেও ধার দেনা করে কোটি টাকার দল গড়ে এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে তারা।
ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল
চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ট্রফিজয়ী ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুলের ঐতিহ্য কম নয়। প্রায় ৭০ বছরের পুরনো ক্লাব। এই ক্লাবকে বলা হয় খেলোয়াড় সাপ্লাইয়ের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। সোহেল আল মাসুম, আমিন রানা, আসকর বাবুর মতো খেলোয়াড়রা উঠে এসেছেন এখান থেকেই। তারও আগে ৮০’র দশকে আরেক তারকা প্রয়াত মনুও খেলেছেন। তাছাড়া অটো ফিস্টারের সময় আজিমউদ্দিনও এই ক্লাবে খেলেছেন। সবশেষ ডিডোর সময় স্ট্রাইকার মোহাম্মদ রবিনও ছিলেন ইয়ংমেন্সের আবিষ্কার। এখন কিছুটা গুছিয়ে নিয়ে ইয়ংমেন্স নতুন করে দিশা খুঁজে পেয়েছে। কতোটা কষ্ট করে ক্লাব চালিয়েছেন তা ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাইনুর জবানিতে পরিষ্কার। বাংলা ট্রিবিউনকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তিন বছর আগে আমরা ক্লাবে দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা ধার-দেনা করেছি বন্ধু-বান্ধুবসহ সব জায়গায়। নিজের ব্যবসা থেকেও। ক্লাবে তালা থাকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের অফিসে কাজ করতে হয়েছে। অনেক কষ্ট করে দল চালাতে হয়েছে। ক্লাবে বসতে পারিনি। তারপরও আমরা হতোদ্যম হইনি। জানি একদিন আলো আসবেই। আজ ফুটবলে সাফল্য পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। এছাড়া কিছু বিগদগামী কর্মকর্তাদের কারণে ক্লাবটির বদনাম হয়েছে। তা ঘুঁচিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে।’
তাদের স্ট্রাইকার রাফায়েল টুডো এবারের লিগে ১৩ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। যদিও ক্লাবে তালার কারণে হোটেলে থেকে তাদের খেলতে হয়েছে। ক্লাবের পরিবেশ নিয়ে খুশি সাওতাল সম্প্রদায়ের এই ফুটবলার, ‘এখানে আমরা নির্দ্বিধায় খেলেছি। পারিশ্রমিক বা থাকা-খাওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। এই ক্লাবটির ঐতিহ্য আছে শুনেছি। আশা করছি সামনে আরও এগিয়ে যাবে।’
ক্লাবে তালা খুলে দেওয়ার পর সেখানে সংস্কার কাজ চলছে। নতুন মৌসুমের পূর্বে আগের মতোই সেখানে খেলোয়াড়দের রেখে কার্যক্রম চালানোর লক্ষ্য সবার।
‘ভিক্ষা করেও টাকা আনতে হয়েছে’
এক সময় ঢাকার ফুটবলে সাফল্য ও জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স অনেক এগিয়ে ছিল। স্বাধীনতার আগে মোহামেডান ও ওয়ান্ডার্সের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো বেশি। স্বাধীনতার পর একটু একটু করে ওয়ান্ডারার্সের আধিপত্য যেন কমতে থাকে। ১৯৯৫ সালে প্রিমিয়ার থেকে অবনমিত হয় ক্লাবটি। আট বছর পর আবার প্রিমিয়ারে ওঠে। যদিও ৩ বছরের বেশি প্রিমিয়ারে থাকতে পারেনি।
ক্যাসিনো কাণ্ডে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদের মতোই ট্রফি সহ অনেক কিছু চুরি হয়েছে। তালা খোলার পর বলতে গেলে প্রায় শূন্য রুমই পেয়েছেন তারা। এই সময়ে আজাদ স্পোর্টিংসহ যাযাবরের মতো এদিক-সেদিক বসে ক্লাবের কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। খেলোয়াড়দের শুরুতে আজাদ স্পোর্টিসহ ওয়ারী ক্লাবে রাখা হয়েছিল। ক্লাবের তালা খুলে দেওয়ার পর সেখানে শেষ কিছু দিন ছিল। ওয়ান্ডারার্স শুধু ফুটবল নয়, বক্সিং-হকি সহ অনেক খেলাই খেলে থাকে। তাই তাদের কার্যক্রম কটু বেশিই।
ক্লাবটি সবশেষ ২০০৩ সালে প্রিমিয়ারে উঠেছিল। তিন বছর পর ২০০৬ সালে নেমে যায়। প্রায় ১৮ বছর পর আবারও মূল স্তরে খেলার সুযোগ পেয়েছে তারা।
পেশাদার লিগে আগামী মৌসুমে ভালো দল গড়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন কামাল হোসেন। ক্লাবে বসে তিনি বলেছেন, ‘এখন নতুন করে আবার ফিরতে পেরে দারুণ লাগছে। আমাদের সভাপতি কাজী শহিদল্লাহ লিটনের ইচ্ছা ছিল দলটাকে পেশাদার লিগে আনতে। আমরা তাতে সফল হয়েছি। আশা করছি সামনের মৌসুমে আমরা মূল স্তরে খেলবো। এখন আমাদের ক্লাবে কোনও নেতিবাচক কিছু হয় না। সবাই সতর্ক আছে।’
দলটির কোচ ৬৭ বছর বয়সী আবু ইউসুফের কঠোর মনোভাবের কারণেই ক্লাবটি মাঠের লড়াইয়ে অন্য কোনও পথে পা মাড়ায়নি। ইউসুফ নিজেই বলেছেন, ‘মাঠে খেলার পাশাপাশি পর্দার আড়ালের দলের সঙ্গেও লড়তে হয়। ফুটবলের বিরুদ্ধে যায় এমন কোনেও কিছুর সঙ্গে আমাকে আপস করানো যাবে না। আমি করিনি। তাই এত দূর আসতে পেরেছি। এছাড়া ক্লাবের সবাই আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছিল। আমি ঠিকমতো কাজ করতে পেরে খুশি।’
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক…
President says Ukraine has 1 / 4 of air defences required to carry entrance line…
Primarily based on final yr's expertise, it should not come as a giant shock that…
পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের দোতলায় সৌজন্য হিসেবে প্রতিদিনই কফি পরিবেশন করা হয়। কাপে চুমুক দিয়ে…
Israeli forces have recovered the our bodies of three Israeli hostages who had been taken…
Robert Triggs / Android AuthorityTL;DR A brand new report claims that Apple is creating a…