সারা দেশে সক্রিয় রয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম। বলা চলে পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা ও বিভিন্ন মহানগরে শিবিরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আরও বেড়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগরী, জেলা ও থানা পর্যায়ের স্বনামধন্য কলেজগুলোতে নিজস্ব ব্যানারে ইফতার পার্টির নামে প্রতিদিনই চলছে আলোচনা সভা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ রোজা পর্যন্ত দেশের অর্ধশতাধিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং ন্যূনতম ৯টি জেলা ও ১৫টি থানা পর্যায়ে শিবিরের এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুয়েটসহ অন্যান্য ক্যাম্পাসে শিবিরের তৎপরতার বিষয়ে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতারা বলছেন, সব ক্যাম্পাসে যদি সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করা যেতো, তাহলে তাদের (শিবির) রাজনীতি করার অবকাশ কমে আসতো।
ইফতার ও আলোচনা সভা
এরইমধ্যে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণইফতার মাহফিলে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার ‘বিতর্ককে’ কেন্দ্র করে ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও গণ-ইফতার মাহফিল করেছে ছাত্রশিবির। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া ঢাকা মহানগর, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের নানান জায়গায় এই কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি।
এবারের রোজায় রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক পর্যায়ে ‘রমাদান ফুডপ্যাক উপহার’ নামে আরেকটি কর্মসূচি রয়েছে ছাত্রশিবিরের। এর আওতায় গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন উপায়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
রমজানকে স্বাগত জানিয়ে এবং ৫৪তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে র্যালির আয়োজন করেছে শিবির। শিবিরের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের একজন নেতা সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ রমজানে দেশব্যাপী ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা করা হয়েছে। তবে এগুলো নতুন নয়, প্রতিবছর রমজানে এসব আয়োজন করা হয়।
‘ইফতার বিতর্ক’ ইস্যুকে কাজে লাগিয়েছে শিবির
সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের দাবি—সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইফতার নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেটা বেশ ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে শিবির। আরাফাত শান্ত নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক কর্মী বলেন, প্রতিবছর স্বাভাবিকভাবেই ক্যাম্পাসে বন্ধুরা মিলে কমবেশি সবাই ইফতার পার্টি করে। এবার ইফতার নিয়ে যা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বাড়াবাড়ি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে শিবির ও অন্যান্য ইসলামী সংগঠন। এতদিন তারা লুকিয়ে থাকতো। কিন্তু এই সুযোগে ওপেন প্লেসে বিভিন্ন জায়গায় তারা প্রোগ্রাম করছে।
শিবিরের কার্যক্রম সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী (ছাত্রশিবিরের সদস্য) বলেন, তাদের কার্যক্রম সবসময় চলমান ছিল, আছে ও থাকবে। রমজানে এর গতিশীলতা বেড়েছে বিষয়টা এমন না। এখন ইফতার আয়োজন ও গরিব-দুঃখী মানুষকে সহযোগিতা করার যে কর্মসূচি সেটা চলমান আছে। এ কাজ নতুন নয়, শিবিরের পক্ষ থেকে সবসময় এমনটা হয়ে আসছে।
‘ইফতার বিতর্ক’ নিয়ে শিবিরের এ সদস্য বলেন, ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে যদি রমজান উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা ওপেন ইফতারের আয়োজন করতে পারে তাহলে আমাদের ৯০ শতাংশ মুসলিমের দেশে ইফতার আয়োজন ও ধর্মীয় আলাপ-আলোচনা করতে সমস্যা কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয়ে তো আমরা সবসময় সম্প্রীতি বজায় রেখেছি। অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরা যখন তাদের ধর্মীয় উৎসব ক্যাম্পাসে জাঁকজমকভাবে পালন করে, তখন তো তাদের কেউ বাধা দেয় না। বরং তাদের আমরা সহযোগিতা করি। তাহলে আমাদের ধর্মচর্চায় বাধা কেন?
‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ প্রোগ্রামের বিষয়ে শিবিরের এই সদস্য বলেন, হ্যাঁ, এটা শিবিরেরই প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরা হয়। এর সঙ্গে রাজনীতি কোনও যোগসূত্র নেই। আমরা যেহেতু মুসলিম, ইসলাম সম্পর্কে আমাদের পুরোপুরি ধারণা থাকা প্রয়োজন। ইসলাম শুধু নিজে জানার জন্য না। ইসলামে কী আছে না আছে— সেটা সবার জানা উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সক্রিয় শিবির
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিবিরের এক সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রত্যেকটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের শক্ত অবস্থান আছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে শিবির আলাদা স্ট্র্যাটেজি অনুসরণ করে। যেমন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের যে কার্যক্রম চলমান আছে, এর সঙ্গে জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অথবা বুয়েটে কর্মকাণ্ডের মিল নেই।
বুয়েটে শিবিরের কার্যক্রম চলমান আছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে শিবিরের এই সদস্য বলেন, নিশ্চয়ই আছে। তবে এ ক্ষেত্রে অন্যান্য জায়গায় যেরকম ব্যানার পোস্টার টানিয়ে প্রোগ্রাম করা হয়, বুয়েটে সেটা হয় না। বুয়েটের স্ট্র্যাটেজি অন্যরকম। সত্যি বলতে আমি নিজেও জানি না বুয়েটে আমার সংগঠনের স্ট্র্যাটেজি কী। কারণ এটা গোপনীয়।
এই সদস্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিবিরের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। সপ্তাহে আলোচনা সভা, মাসিক আলোচনা সভা, নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করার ক্ষেত্রে এরা যথেষ্ট অ্যাক্টিভ।
যা বলছেন অন্যান্য ছাত্রনেতারা
ক্যাম্পাসে শিবিরের কার্যক্রমের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘শিবির একটি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদীদের সংগঠন। আমরা সবসময় শিবিরকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছি। যারা ৭১-এর দোসর, স্বাধীনতাবিরোধী, আর যাই হোক তাদের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।’
জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সরকারে সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়নের এই নেতা বলেন, ‘সরকার চাইলে শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে পারে। কিন্তু তারা তাদের স্বার্থে এটা করছে না। যুগে যুগে সবাই জামায়াত-শিবিরকে তাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজে লাগিয়েছে।’
শিবিরের কার্যক্রমের বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের এই নেতা জানান, শিবিরের আগের মতো অবস্থান নেই। তবে তারা এখনও চারপাশে ঘাপটি মেরে আছে। যদিও শিবির ট্যাগ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নির্যাতন করার যে সংস্কৃতি চলমান আছে, তা বন্ধের জোর দাবিও জানান এই নেতা।
ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম সম্পর্কে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, ‘যারা স্বাধীনতাবিরোধী ছিল ও মুক্তিযুদ্ধের অপশক্তি হিসেবে যারা চিহ্নিত ছিল— আমরা দেখেছি, স্বাধীনতার পরপরই সেই শক্তিকে ক্ষমতাসীনরা বিভিন্ন কৌশলে হোক, সরাসরি অংশীদার করে হোক —তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। এই মৌলবাদীদের সঙ্গে কখনও আওয়ামী লীগের কৌশলে ঐক্য, কখনও বিএনপির সঙ্গে সরাসরি ঐক্যে ছিল। এখনও তার ব্যতিক্রম নয়। জামায়াত-শিবিরের যে রাজনীতি, বলা চলে ক্ষমতাসীনদের হাত ধরে তারা বড় হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা তাদের লালন-পালন করছে।’
মুক্তা বাড়ৈ আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাসগুলোতে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। এখানে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য বিস্তার করছে। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো ঠিকভাবে কথা বলতে পারছে না, যেখানেই যাচ্ছে বাধা পাচ্ছে। আমাদের কর্মীরা হলে থাকতে পারছে না। ক্যাম্পাসগুলোতে যখন আমাদের পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়, নির্যাতনের শিকার হতে হয়, মুক্তচিন্তার সুযোগ নেই— সেখানে প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা অর্থাৎ কূপমণ্ডপ চিন্তার বিস্তার ঘটবেই। এর বিপরীতে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ লাগবে।’
বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস আলো বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম নিশ্চয়ই উদ্বেগের বিষয়। আমরা সব সময় সে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করি। ক্যাম্পাসে যদি ছাত্র সংসদ নির্বাচন থাকতো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকতো তাহলে সবকিছুতে শিক্ষার্থীরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারতো। ক্যাম্পাসে যদি সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করা যেতো, তাহলে তাদের (শিবির) রাজনীতি করার অবকাশ কমে আসতো। বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘বুয়েটে স্বাভাবিক ছাত্ররাজনীতি না থাকায় সেখানে অভিযোগ আছে— বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন বা নিষিদ্ধ সংগঠনের সেখানে বিস্তার ঘটছে। আমরা মনে করি, ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছাত্র সংগঠনের যদি অবস্থান থাকে, গণতান্ত্রিক চর্চার সুযোগ থাকে, তাহলে এসব সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।’
POCO continues to make one of the best funds telephones, and the producer is doing…
- Commercial - Designed for players and creators alike, the ROG Astral sequence combines excellent…
Good garments, also referred to as e-textiles or wearable expertise, are clothes embedded with sensors,…
Completely satisfied Halloween! Have fun with us be studying about a number of spooky science…
Digital potentiometers (“Dpots”) are a various and helpful class of digital/analog elements with as much…
Keysight Applied sciences pronounces the enlargement of its Novus portfolio with the Novus mini automotive,…