কালবেলা অনলাইনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগে আইনি নোটিশ

সাজগোজ লিমিটেড নামের প্রসাধনী ও পার্সোনাল কেয়ার সামগ্রী বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিজ্ঞাপনের নামে চাঁদাবাজি ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে হয়রানির অভিযোগে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কালবেলা পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক এবং কালবেলা অনলাইনের প্রধান পলাশ মাহমুদকে এ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সাজগোজের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান নোটিশটি পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, গত বছরের ৭ এপ্রিল সাজগোজের একটি আউটলেটে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে কিছু পণ্যে আমদানিকারকের দেওয়া মূল্যের স্টিকার না থাকায় সতর্কতামূলক ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাজগোজ লিমিটেড আইনের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল হয়ে ভুল স্বীকার করে সম্পূর্ণ জরিমানা পরিশোধ করে। ওই ঘটনাটিকে বিকৃত করে পরের দিন কালবেলা অনলাইন এবং ইউটিউব চ্যানেলে নকল-ভেজাল পণ্য বিক্রি করে ক্রেতাসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করছে— এমন শিরোনাম ও বর্ণনায় খবর ও ভিডিও প্রকাশ করে কালবেলা। পরবর্তীকালে সাজগোজ কর্তৃপক্ষ ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষকে নিজেরাই বিষয়টি অবহিত করলে তারা সাজগোজে কোনও ভেজাল- নকল পণ্য পাওয়া যায়নি এবং এ জাতীয় কোনও অপরাধে জরিমানা করা হয়নি মর্মে নিশ্চিত করে।

কিন্তু ওই ঘটনাকে পুঁজি করে কালবেলা অনলাইনের প্রধান পলাশ মাহমুদ সাজগোজ লিমিটেডের কর্মকর্তাদের কাছে ডিজিটাল অ্যাডভার্টাইজ বাবদ বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন, টাকা  না দিলে আরও নিউজ করা হবে এবং হয়রানি করা হবে বলে চাপ দিতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ঈদুল ফিতরের আগ মুহূর্তে ২০২৩ সালের ওই ঘটনার ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে নতুন শিরোনামে পুনরায় নিউজ ও ভিডিও প্রকাশ করে কালবেলা অনলাইন। এতে করে সাজগোজের বিপুল পরিমাণ ব্যবসায়িক ক্ষতি হয়।

সম্প্রতি পলাশ মাহমুদ পুনরায় সাজগোজে কল করে এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন। সাজগোজ বিজ্ঞাপন দিতে অপারগতা জানালে চলতি বছরের ২০ আগস্ট বিগত বছরের একই নিউজকে পুনরায় নতুন ক্যাপশন ‘বন্ধ হয়নি সাজগোজের প্রতারণা’ ব্যবহার করে তাদের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। ওই নিউজে সাজগোজ নকল পণ্য এবং চকবাজার থেকে আনা পণ্য বিক্রি করে বলে উল্লেখ করা হয়, যার কোনও সত্যতা নেই। ওই নিউজের সমর্থনে কোনও তথ্য প্রমাণ ও টেস্টিং রিপোর্ট নেই বলে আইনি নোটিশে দাবি করা হয়েছে।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ বারবার পরিবেশন করে সাজগোজের মানহানি ও ব্যবসায়িক ক্ষতি করা হয়েছে। কালবেলা অনলাইনের প্রধান পলাশ মাহমুদ ক্রমাগত বিজ্ঞাপনের নামে চাঁদার জন্য হুমকি প্রদানের পাশাপাশি ব্যবসায়িক ক্ষতির মানসে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে। সাজগোজ সম্পূর্ণ নিয়ম কানুন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। কালবেলা অনলাইনের এই মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের কারণে তাদের ক্রেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং বিপুল ব্যবসায়িক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কালবেলা অনলাইনের প্রধান পলাশ মাহমুদের বিজ্ঞাপনের নামে চাঁদাবাজি, হুমকি এবং হয়রানির প্রমাণ স্বরূপ সাজগোজের কাছে ভয়েস রেকর্ডিং, কলরেকর্ডিং এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ রয়েছে বলেও নোটিশে দাবি করা হয়।

নোটিশে অনতিবিলম্বে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ ও ভিডিও সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে এবং কালবেলা ও কালবেলা অনলাইনের মাধ্যমে প্রচারকৃত ওই সংবাদ ও ভিডিও সত্য নয় মর্মে উল্লেখ করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে এবং কালবেলা অনলাইনের প্রধান পলাশ মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তা সাজগোজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। অন্যথায়, প্রচলিত আইনে মানহানি এবং সাইবার অপরাধে ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে যথাযথ আদালতে মামলা দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।